সিধুর চরিত্রে সৌরভ দাস।
বাড়ি থেকে পালিয়ে পায়ে পায়ে জড়িয়ে যায় নানান গল্প। কখনও তা ভাল, কখনও খারাপ। কখনও বা প্রেমও এসে জোটে। সিদ্ধার্থ ওরফে সিধুও ক্লাসে ফেল করে বাড়ি থেকে পালায়। কী গল্প জীবনে জুটলো তার? জি বাংলা সিনেমা অরিজিনালস্-এর নতুন ফিল্ম ‘ফেলুনাথের মার্কশিট’ খুঁজেছে সেই গল্পই।
সিধু ঠিক কেমন? সিধুর চরিত্রে সৌরভ দাস বললেন, “আমার চরিত্রটা... সাধুবাবা ঠিক নয়, ভণ্ড সাধু আরকি। নিজের থেকে সে ভণ্ড হয়নি। আসলে আর কিছুই না, ওর বাবা-মা হোসিয়ারি দোকানের মালিক। তারা প্রার্থনা করে ভগবানের কাছে যাতে ছেলে পরীক্ষায় ফেল করে এবং তাকে ব্যবসায় বসানো যায়।সেটাই হয়, ছেলেটি ফেল করে।”
সিধু কি ফেল করতেই চেয়েছিল? সৌরভ: “না। সিধু সেটা চায়নি। সেজন্য বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। পালিয়ে গিয়ে একটা গ্রামের মন্দিরে ওঠে। সেখানে সবাই ভাবে, সে বাবা। তো আলটিমেটলি ভণ্ড সাধু হয়েও সেই গ্রামের মানুষের দুঃখ কী ভাবে দূর করলো এবং সেখান থেকে মিষ্টি নামের মেয়ের সঙ্গে একটা না-বলা প্রেম... ছবিতে কিন্তু কোথাও বলা নেই, ‘আমি তোমাকে ভালবাসি’। এই যে বন্ধুত্বটা... এইটাই হচ্ছে মেন মোটিফ আরকি। এবং না চাইতেই লোকের ভাল করা, সেখান থেকেই তার জার্নিটা শুরু হয়।”
সিধু ওরফে সৌরভের জার্নি দেখা যাবে ‘ফেলুনাথের মার্কশিট’-এ
সিধুর জার্নি থেকে কী দেখা যাবে? সৌরভ বললেন,“বাড়ি থেকে তো পালিয়ে যায় অনেকেই... পালিয়ে গিয়ে অনেকে ভুল কাজ করে বা ঠিক কাজ করে। সিধু ভুল করতে করতে কী ভাবে ঠিক কাজ করে, মানুষের মধ্যে কী ভাবে চেঞ্জ আসে সেইটাই দেখার।”
পরিচালক রাজদীপ ঘোষ যোগ করলেন, “মূলত মানুষের পরিবর্তন হওয়ার গল্প। মানে একরকমভাবে বাঁচতে বাঁচতে আমরা সবাই অন্য রকমভাবে বাঁচতে চাই। তো অন্য রকমভাবে বাঁচার মধ্যে কত উপকারিতা আছে- সেইটা বোঝা যায় গল্পের মধ্যে। সেখানে শুধু নিজে বাঁচা নয়, অনেককে নিয়ে বাঁচা।”
৪৮ জন অভিনেতা নিয়ে কাজ হয়েছে। কী ভাবে এত অভিনেতাকে সামলালেন পরিচালক? তিনি বললেন, “হয়ে গেছে, একটা ঝড়ের মতো করে। শুটিংয়ের আট-ন’টা দিন কোনও দিকে তাকানোর উপায় ছিল না। এই ৪৮ জনের ঝড় আমাদেরকে সামলাতে হয়েছে, মানে টিম মেম্বারদের।”
আরও পড়ুন- ‘গডফাদার’ কর্ণ জোহরের জন্যই বলিউডে এন্ট্রি পেয়েছেন এঁরা
গল্পের নায়িকা তন্বী লাহা রায়। আগে কাজ করেছেন ‘তুমি রবে নীরবে’, ‘বেনেবউ’, ‘বাক্স বদল’, ‘টেক্কা রাজা বাদশা’-য়। পরিচালকের সঙ্গে প্রথম কাজ?তন্বী: “রাজদীপদার সঙ্গে প্রথম কাজ। একটু নার্ভাসনেস তো ছিলই... কী চাইছে, আমি ঠিকমতো করতে পারবো কিনা। তারপর শুট করতে গিয়ে কয়েকটা দৃশ্য করার পরেই ব্যাপারটা কেটে গেল। রাজদীপদা কী চাইছে প্রথমে বলে দেয়, তারপর অভিনেতাদের উপর ছেড়ে দেয়। কাজ করে মজা পেলাম। এখানে যে অ্যাক্টিং করার জায়গাটা পেলাম সেটা খুব ভাল লাগলো।”
গল্পের নায়িকা তন্বী লাহা রায়
সৌরভের সঙ্গে কাজ করে কেমন লাগলো? তন্বী বললেন, “ভাল তো লাগলো অবভিয়াসলি। আর কাজটাও খুব মজা করে হয়েছে। যেহেতু সৌরভ... সবাই জানে যে ও কেমন হাসায় মানুষকে। কিন্তু কাজের সময় ভীষণ সিরিয়াসলি কাজ করে। অ্যাজ আ কো-অ্যাক্টর অনেক কিছু শিখতে পেরেছি সৌরভের থেকে। ইনফ্যাক্ট, আমাকে অনেক কিছু বলেও দিয়েছে, ‘এই জায়গাটা এইভাবে কর’। তারপর সেরকমভাবে করে দেখলাম, হ্যাঁ, ভাল লাগছে।”
দর্শক আপনার চরিত্রটা কেন পছন্দ করবে? তন্বীর কথায়: “মানে... এইরকম ক্যারেক্টার নট ডিফিকাল্ট টু ফাইন্ড। মানে... সবাই তো এরকম নয় যে স্কুলে যেতে পছন্দ করে, পড়াশোনা করতে পছন্দ করে? বেশিরভাগ স্টুডেন্টই পড়াশোনা করতে পছন্দ করে না। তো আমার চরিত্রটা পছন্দ করার অনেকেই আছে।”
আপনি এখানে স্কুলগার্ল? “হ্যাঁ। স্কুলে পড়াশোনা করি। অঙ্কটা আমার দ্বারা হয় না। ফেল করি।”
আরও পড়ুন- নাইজেল প্রথম দিন আমাকে ‘হাই’ পর্যন্ত বলেনি: মানালি
সেই সূত্রেই কি ফেলুনাথের সঙ্গে যোগাযোগ? “হ্যাঁ। অঙ্কে ফেল করাতে বাবা ফেডআপ হয়ে মিষ্টিকে অনেক জ্যোতিষী দেখায়। কোনও কাজ হয় না। শেষে ফেলুনাথকে ডাকে।”
অন্য অভিনেতাদের মধ্যে আছেন শ্যামল দত্ত, অনির্বাণ ভট্টাচার্য প্রমুখ। সঙ্গীত করেছেন সৈকত চট্টোপাধ্যায়। ফিল্মটি জি বাংলা সিনেমা অরিজিনালস-এ দেখা যাবে রবিবার,২৫ অগস্ট।