(বাঁ দিক থেকে) অরিন্দম শীল, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, চঞ্চল চৌধুরী। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
আমেরিকায় তখন ভোর সাড়ে পাঁচটা। কেউ গভীর ঘুমে, কারও সবে ঘুম ভাঙব ভাঙব করছে! কারও অস্থায়ী ঠিকানা পাঁচ তলায়, তো কারও ছ’তলা। হঠাৎ তীব্র অ্যালার্মে নিস্তব্ধতা খান খান। সচেতন হওয়ার আগেই আতঙ্কিত টলিপাড়া। আমেরিকায় অনুষ্ঠান করতে গিয়ে তারা অগ্নিকাণ্ডের মুখোমুখি। হোটেলের কোনও একটি ঘরে আগুন লেগেছে! সেই খবর প্রথম আনন্দবাজার অনলাইনে। সম্প্রতি, মার্কিন মুলুকে টলিপাড়ার চাঁদের হাট। বাংলা ইন্ডাস্ট্রির প্রায় সকলেই হাজির সেখানে। বাংলাদেশ থেকেও যোগ দিয়েছেন কিছু অভিনেতা। অধিকাংশ শিল্পী রাতপোশাকে সিঁড়ি ভেঙে ছুটেছেন নীচে। শঙ্কিত কণ্ঠে একটাই প্রশ্ন, “প্রাণে বাঁচব তো?”
সেই আতঙ্কের ঘোর কাটতে অনেকটাই সময় লেগেছে। আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে পরিচালক অরিন্দম শীল যখন কথা বলছেন তখনও তাঁর গলায় যেন আবছা ভয়। তাঁর কথায়, “ভাল করে চোখ মেলতে পারিনি। হঠাৎ অ্যালার্মের শব্দে ধড়মড়িয়ে উঠে বসি। খাটে রাজ্যের জিনিসপত্র ছড়ানো। কিন্তু গোছাবে কে? আগে জিনিস না আগে প্রাণ?” গরম পোশাক গায়ে জড়ানোর সময়টুকুও পাননি তাঁরা। ওই অবস্থাতেই পাঁচ তলা থেকে এক তলায়! অরিন্দম আরও জানিয়েছেন, সবচেয়ে খারাপ অবস্থা মমতাশঙ্করের। তিনি না পারছেন সিঁড়ি ভাঙতে, না পারছেন কোথাও দাঁড়াতে। ব্যথা নিয়ে কোনও মতে এক পা এক পা করে সিঁড়ি বেয়ে নেমেছেন।
কথা বলেছেন আরও এক পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ও। কৌশিক পরিচালিত ‘অযোগ্য’ ছবিটি দর্শকের পছন্দের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে। সাফল্যের সেই স্বাদ উপভোগ করতেই তিনি সস্ত্রীক পাড়ি জমিয়েছিলেন বিদেশে। পরিচালকের কথায়, “আমরা সবাই হইহই করতে করতে সিঁড়ি দিয়ে নামলাম। প্রত্যেকে কিংকর্তব্যবিমূঢ়। সকলের একটাই চিন্তা, যে করে হোক প্রাণে বাঁচতে হবে।” শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় থেকে চঞ্চল চৌধুরী— প্রাণ বাঁচানোর দৌড়ে শামিল সকলে। ছিলেন হোটেলের বাকি বোর্ডারেরাও।
তার মধ্যেই মজার কাণ্ড! প্রাণ হাতে করে নীচে নামার পর হঠাৎ এক প্রবাসী বাঙালি উৎফুল্ল পরিচালক অরিন্দমকে দেখে। তিনি হাসতে হাসতে তাঁর কাছে এসে বলেন, “এত খারাপের মধ্যেও একটা ভাল, আপনাকে কাছে থেকে দেখতে পেলাম। চলুন, নিজস্বী তুলি”, বলতে বলতে নিজেই হেসে ফেলেছেন অরিন্দম।