সানি( বাঁ দিকে) এবং নেহা কক্কর (ডান দিকে)
ছেলের গানের প্রতি অসম্ভব ভালবাসার আঁচ পেয়ে বাবা একটা হারমোনিয়াম কিনে দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রথাগত সঙ্গীত শিক্ষার জন্য যে টাকার প্রয়োজন, তার জোগান দেওয়া সম্ভব ছিল না মেলায় গান গাওয়া নানক রামের। তাতে কী!বাবার কাছ থেকেই একটু একটু করে তালিম নেওয়া শুরু করে পঞ্জাবের ভাতিন্ডায় ১৯৯৮ সালে জন্ম নেওয়া ছোট্ট ছেলেটি। হঠাৎই বাবা মারা যায়। এদিকে বাজারে দেনা আড়াই লাখ।
একরত্তি সানিকে নিয়ে মা সোমা দেবি তখন হিমশিম খাচ্ছেন। সংসারে চরম দারিদ্র্য। রাস্তায় ঘুরে ঘুরে বেলুন বিক্রি করা শুরু করলেন তিনি। মায়ের পাশে দাঁড়াতে সানির হারমোনিয়াম বাজানো ছোট্ট হাত তুলে নিল বুট পালিশের সরঞ্জাম। নতুন আস্তানা হল ভাতিন্ডার বাস স্ট্যান্ড। কিন্তু ওই যে, স্বপ্ন কখনও মরে না। ‘বুট পালিশ করাবেন দাদা?’ ডাকের আড়ালে লুকিয়ে ছিল গানের প্রতি অসম্ভব ভালবাসা, হার না মানার জেদ, স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখার এক অসম্ভব ইচ্ছা।
অবশেষে স্বপ্ন সত্যি হল। রিয়েলিটি শো ইন্ডিয়ান আইডলের মঞ্চে স্বপ্নের বাস্তব রূপ দিতে এল সানি। তার পর পুরোটাই রূপকথা। সানির গলায় রাহাত ফাতেহ আলি খানের ‘আফরিন’ শুনে বিচারকরা বাকরুদ্ধ। চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি দিয়ে গেলেন তাঁরা। মোহিত গোটা দেশ। ইউটিউবে তার অডিশন ভিডিয়োতে হাজার হাজার ভিউ, ফেসবুকে শেয়ার... সানি যেন গান-দুনিয়ার নয়া সেনসেশন।
আরও পড়ুন-জোর করে চুমু নেহাকে, ঘটনা নিয়ে মুখ খুললেন শো-র সঞ্চালক আদিত্য নারায়ণ
শুনে নিন সানির গান
অডিশন রাউন্ডের বৈতরণী হাসতে হাসতেই পার করলেন তিনি। এর পরের লড়াইটা আরও কঠিন। সেরার সেরাদের মধ্যে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা। জয়ীর শিরোপা তার মাথায় উঠবে কি না তা তো সময়ই বলবে, কিন্তু নেটিজেনদের মন জয় তিনি আগেই করে নিয়েছেন, প্রমাণ করে দিয়েছেন চেষ্টা আর অদম্য মনের জোরের আগে হাজারও প্রতিকূলতাও কেমন যেন ফিকে হয়ে যায়।