আরতি
পেশা নয়, প্যাশনকে প্রাধান্য দিয়ে মাইক্রোসফটের চাকরি ছেড়ে তিনি ছবি বানাতে দেশে ফিরে এসেছিলেন। হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির হাতেগোনা মহিলা পরিচালকদের একজন আরতি কাদভ আইআইটি কানপুরের কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার। এখন সায়েন্স ফিকশন জ়ঁরে হাত পাকাচ্ছেন এই নবীন পরিচালক। ওটিটি-র জন্য তৈরি করা তাঁর প্রথম সাই-ফাই ছবি ‘কার্গো’ দর্শক-সমালোচকের দরবারে প্রশংসিত। আরতির শর্ট ফিল্ম ৫৫ কিমি/সেকেন্ড মুক্তি পেয়েছে সম্প্রতি, যেখানে অভিনয় করেছেন রিচা চড্ডা।
‘কার্গো’য় বিক্রান্ত মেসি-শ্বেতা ত্রিপাঠীর পরে রিচা চড্ডা... আনকোরা পরিচালকের কাছে নামী অভিনেতাদের কাস্ট করা কতটা চ্যালেঞ্জিং ছিল? তারকারাই কি তাঁর ছবিকে আলাদা মাইলেজ দিয়েছে? আরতির জবাব, ‘‘নতুন পরিচালক, নতুন কনসেপ্টের সঙ্গে যদি কাস্টিংও নতুন হয়, দর্শকের কাছে না-ও পৌঁছতে পারে আমার ছবি। আর সায়েন্স ফিকশন ছবিতে সব সময়েই দক্ষ অভিনেতার প্রয়োজন, যাঁরা ছবির ভাবনাকে বিশ্বাসযোগ্য ভাবে দর্শকের কাছে পৌঁছে দেবেন।’’
এ দেশে এখনও সে ভাবে সায়েন্স ফিকশন তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয় না কেন, তা নিয়ে আক্ষেপ করলেন আরতি। ‘‘ভারতীয় লোককথা ও পুরাণে এত উপাদান আছে, কোনও পরিচালক তা কাজে লাগান না। দর্শক কী ভাবে নেবেন, এই ভেবে পিছিয়ে আসেন। টাইম ট্রাভেলের কথা তো মহাভারতেই বলা আছে, হলিউডের ছবি থেকে কনসেপ্ট নেওয়ারও দরকার পড়ে না,’’ বললেন আরতি। অবশ্য স্বীকার করে নিলেন, ‘কার্গো’র কনসেপ্ট দর্শক পছন্দ করবেন কি না, তা নিয়ে তাঁরও দ্বিধা ছিল প্রথমে। কিন্তু লকডাউনে বহু মানুষ দেখেছেন আরতির ছবি।
দোলাচল ছিল সুযোগ পাওয়া নিয়েও। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম আসায় তাঁদের মতো পরিচালকের কতখানি উপকার হয়েছে, উঠে এল আরতির কথায়, ‘‘যাঁরা চেনেন, শুধু তাঁরাই সুযোগ দিতেন প্রথমে। দশজনের মধ্যে ন’জনই এক নবাগত মহিলা পরিচালককে ‘না’ বলবেন, সেটাও জানতাম। পুরুষদের জন্য যা সদর্থক, সেগুলোই আমাদের জন্য নেগেটিভ পয়েন্ট হয়ে দাঁড়ায় অনেক সময়ে। ‘কার্গো’র সময়ে আমার স্পেসশিপের আইডিয়াটা অন্যদের বোঝাতে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল। তবে আমি প্রথমে দলের সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে নিই।’’
তাঁর প্রিয় সাই-ফাই ফিল্ম ‘ইটারনাল সানশাইন অব দ্য স্পটলেস মাইন্ড’। পছন্দের কল্পবিজ্ঞান লেখক টেড শিয়াং। আরতির পরের ফিচার ফিল্মও সায়েন্স ফিকশন জ়ঁরের। আগামী কয়েক বছর নিজের প্রিয় জ়ঁর নিয়েই কাজ করতে চান তিনি।