হাবিবের জন্মশতবার্ষিকীতে বিশেষ আয়োজন কন্যা নাগিন তনবীরের। নিজস্ব চিত্র।
পথে পথে বেড়িয়ে লোকজীবনের নির্যাস সংগ্রহ করে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন নিজের সৃষ্টিতে। সৃষ্টি বলতে কবিতা, নাটক। তিনি ছিলেন জনপ্রিয় অভিনেতাও। কথা হচ্ছে হাবিব তনবীরের। ১৪ বছর আগে পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে চলে গেলেও এখনও থিয়েটারের ইতিহাসে তিনি গুরুত্বপূর্ণ নাম। ২০২৩ সালে হাবিবের জন্মশতবার্ষিকীতেও তাই বিশেষ আয়োজন কন্যা নাগিন তনবীরের।
পেশায় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী নাগিন। তবে বাঁচিয়ে রেখেছেন বাবার নাটকের গানও। তাঁর মতে, বাংলার থিয়েটারের ঐতিহ্য সবচেয়ে বেশি জোরালো। তার সঙ্গেই এক করে দিতে চাইছেন উর্দু, হিন্দি থিয়েটারের গরিমা। হাবিবের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে বছরভর উদ্যাপনের পরিকল্পনা নাগিনের। এ বছর লেক ক্লাবের নাট্যোৎসবও শুরু হল হাবিবকে স্মরণ করেই।
লেক ক্লাবের উদ্যোগে গত ৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে সপ্তম বর্ষের নাট্যমেলা। এটি চলবে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। প্রতি দিন সন্ধ্যা ৭টা থেকে নাটক মঞ্চস্থ হবে। থিয়েটার এবং শিল্প নিয়ে বাঙালির সুদীর্ঘ ঐতিহ্যের উদ্যাপনই এই নাট্যমেলার উদ্দেশ্য।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কবি ও নাট্যব্যক্তিত্ব হাবিব তনবীরের জন্মশতবর্ষ স্মরণে ‘হাবিব একাই একশো’ শীর্ষক আলোচনার আয়োজন হয়। হাবিবের জীবন ও কৃষ্টি নিয়ে কথা বলেন হাবিব-কন্যা নাগিন। উপস্থিত ছিলেন রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, অরুণ মুখোপাধ্যায়, জয়তী বসু, অশোক মুখোপাধ্যায়, মেঘনাদ ভট্টাচার্য, রামচন্দ্র সিংহ, সুমন মুখোপাধ্যায়ের মতো নাট্যব্যক্তিত্ব।
হাবিবের নাটক ও মঞ্চসজ্জা নিয়ে চিত্রশিল্পী হিরণ মিত্রের আঁকা একটি ক্যালেন্ডারও এ দিন প্রকাশিত হয়।
লেক ক্লাবের সম্মাননীয় যুগ্ম সম্পাদক দেবব্রত দত্ত জানালেন, ‘‘২০১৫ থেকে শুরু হয়েছিল এই নাট্যমেলা। অতিমারির জন্য মাঝখানে দু’বছর এই আয়োজন করা যায়নি।’’ এই নাট্যমেলার উদ্দেশ্য নিয়ে তাঁর বক্তব্য,‘‘ প্রত্যাশা এবং ইতিবাচকতা নিয়ে বাংলার থিয়েটারপ্রেমী মানুষজনের প্রাণস্পন্দনকে স্পর্শ করতেই এই আয়োজন। চিন্তা উস্কে দেওয়া সমকালীন নাটক ও শিল্প নিয়েই এই উদ্যাপন।’’
এ বারের নাট্যোৎসব শুরু হয়েছে হাবিবের বৈগ্রহিক নাটক ‘চরণদাস চোর’ দিয়ে। এটি মঞ্চস্থ করেছে হাবিবের নিজের নাট্যদল নাট্য থিয়েটার।
অন্যান্য দিন থাকছে হাতিবাগান সঙ্ঘারামের ‘একটা ডিবলু ডিলু টিমলু টিলু ডুব’, নয়ে নাটুয়ার ‘বড়দা বড়দা’, অন্য থিয়েটারের ‘প্রথম রাজনৈতিক হত্যা’, সংসৃতির ‘শের আফগান’, চাকদহ নাট্য আননের ‘ব্যারিকেড’ ও মুখোমুখির ‘টাইপিস্ট’। প্রতি বারের মতোই ক্লাব প্রাঙ্গণে বই ও হস্তশিল্পের প্রদর্শনীও চলছে।