নারীর দুঃখ নাকি পুরুষ বোঝে না! তাইই নারী দিবসের এত আয়োজন! এই আক্ষেপ বহু নারীর। ঘটনাটি যে সত্যি নয়, নারী দিবসের রাতে প্রমাণ করলেন পরিচালক অরিন্দম শীল। তাঁর ছোট ছবি ‘মশলাকথা’র ট্রেলার প্রকাশ্যে এনে। এই ছবিতে পরিচালক দেখাতে চলেছেন, এক পুরুষ প্রথম বুঝেছিলেন সারা দিন রান্নাঘরে বন্দি নারীর ব্যথা। মশলা বাটতে বাটতে তাঁদের হাতে কড়া পড়ে, চামড়া উঠে যায়, দেখেছিলেন নিজের চোখে। তাঁর সেই অভিজ্ঞতা থেকেই জন্ম নিয়েছিল গুঁড়োমশলা। প্রথম বাজারে এসেছিল গুঁড়ো হলুদ।
এমন বিষয় নিয়ে এর আগে কোনও ছবি হয়নি। অরিন্দম কেন বেছে নিলেন এই বিষয়? আনন্দবাজার অনলাইনকে পরিচালকের জবাব, ‘‘বিষয়টি জানার পরে আমিও চমকে গিয়েছিলাম। ভাবিয়েছিল আমায়। মনে হয়েছিল, ছোট ছবির জন্য ভাল বিষয় হতে পারে। বিশেষ করে, সেই যুগে এক অল্পবয়সী বিধবা কী করে স্বামীর অবর্তমানে পাঁচ সন্তানকে মানুষ করেছিলেন। মাছ দিতে পারতেন না ছেলেমেয়েদের পাতে। পাতলা করে কাটা বেগুন ভাজা দিয়ে বলতেন, এটাই মাছ। বড় ছেলে সেই ফাঁকি ধরতে পেরে আজীবনের জন্য মাছ খাওয়া ছেড়ে দিয়েছিলেন।’’ স্বামীর রমরমা ব্যবসাও ছলে-বলে হাতিয়ে নিয়েছিলেন দোকানের এক কর্মচারী। পরে বড় ছেলে বাবার ব্যবসার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন।
এক নারীর আত্মত্যাগ অনুভব করেছিলেন এক পুরুষ। বিধবা মা, স্ত্রীর সারা ক্ষণ রান্নাঘরে পড়ে থাকা সেই পুরুষের ভাল লাগেনি। তিনিই মশলার ব্যবসা চালানোর পাশাপাশি নিয়ে আসেন গুঁড়োমশলা। যা ব্যবহার করেন বিশ্বের সব নারী। সেই সময় যদিও পুরুষ সমাজ প্রশ্ন তুলেছিল, ‘‘গুঁড়ো মশলায় রান্না হলে বাড়ির মেয়েরা কী বসে বসে খাবে?’’ প্রবল বিরোধিতার মুখে পড়তে হয়েছিল সেই পুরুষকে। তবু দমেননি।
ছোট ছবিতে বিধবা মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন দেবযানী চট্টোপাধ্যায়। বড় ছেলে শুভ্রজিৎ দত্ত। তাঁর স্ত্রী ইশা সাহা। এ ছাড়াও আছেন চন্দন সেন সহ এক মুঠো তাবড় অভিনেতা। ক্যামেরায় মধুরা পালিত। গানের দায়িত্বে পণ্ডিত বিক্রম ঘোষ। কোন মাধ্যমে, কবে, কী ভাবে মুক্তি পেতে চলেছে ‘মশলাকথা’? অরিন্দম-কথায়, ‘‘ছবিটি আগে ছোট ছবির চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নেবে। তার পর মুক্তির কথা ভাবা হবে।’’