ভিকি-ক্যাটরিনার সঙ্গে ছবি করতে চান না ইমতিয়াজ।
প্রশ্ন: অনেক দিন পরে কলকাতায়...
ইমতিয়াজ: হ্যাঁ, অনেক দিন পরে। আগে এক সময়ে ঘুরেফিরে আসতাম। এখানকার নানা ধরনের খাবার আমার বাঁধাধরা ছিল। যেমন, আমিনিয়ার বিরিয়ানি। মালাই টোস্ট, পুরি-ভাজি, শিঙাড়া আরও অনেক কিছু। দু’দিন আছি। সেই সব খাবার আবার খাব। ঘুরে দেখব শহরকে।
প্রশ্ন: কলকাতার আর কী কী জিনিস পছন্দের?
ইমতিয়াজ: উত্তর কলকাতার বাড়িগুলো। বাড়িজুড়ে পুরনো ধাঁচের নকশা। হয়তো সংস্কার কম হয়েছে। অদ্ভুত গন্ধ ছড়ানো ওই বাড়িগুলোর গায়ে। আমায় ভীষণ টানে। রাস্তাঘাট টানে। উত্তর কলকাতার ব্যান্ডপার্টির ড্রাম বাজানোর ধরন খুব ভাল লাগে। এখানকার শিল্প, সংস্কৃতিও ভীষণ পছন্দের। সব মিলিয়ে গোটা শহরেই অদ্ভুত মাদকতা। যখনই আসি, নতুন করে যেন দেখি শহরকে।
প্রশ্ন: ২০২০-র ‘লাভ আজকাল’ শেষ ছবি। কবে শ্যুট শুরু করছেন?
ইমতিয়াজ: চিত্রনাট্য লেখা শেষ হয়েছে। খুব শিগগিরিই ছবির কাজে হাত দেব। তবে কী বিষয়, কারা অভিনয় করছেন, এখনই জানতে চাইবেন না। এগুলো ক্রমশ প্রকাশ্য (হাসি)।
প্রশ্ন: জামশেদপুরের ছেলে বলিউডি পরিচালক। স্বজনপোষণ দেখেছেন?
ইমতিয়াজ: আমার চোখে কিন্তু মুম্বই বিশ্বের আর পাঁচটা শহরের মতোই। এখানে বাইরে থেকে আসা মানুষেরাও সফল। মুম্বই প্রতিভার কদর করতে জানে। পাকিস্তান থেকে আসা শিল্পীরাও নিজেদের ক্ষমতার জোরে জায়গা করে নিয়েছেন মায়ানগরীতে। আমি মনে করি, জামশেদপুর থেকে এসে আখেরে লাভই হয়েছে। এখানে অনেকে আমায় সাহায্য করেছেন বাইরে থেকে এসেছি বলে। এবং তাঁরা ইন্ডাস্ট্রিরই অন্যতম ব্যক্তিত্ব। ফলে, আমি অন্তত কোথাও স্বজনপোষণ দেখিনি।
প্রশ্ন: এই মুহূর্তে বলিউড ছবির ধারা হয় জীবনীচিত্র, নয় রহস্য-রোমাঞ্চ বা ভৌতিক ছবি। আপনি ভালবাসা, সম্পর্কেই আটকে থাকবেন?
ইমতিয়াজ: আমিও জীবনীচিত্র বানাব। ইচ্ছে আছে রহস্য-রোমাঞ্চ ছবি বানানোর। ভূতের ছবিও আমার খুব পছন্দের। একটু অপেক্ষা করুন। সব দেখতে পাবেন।
প্রশ্ন: অতিমারি কি অনেকটাই বদলে দিয়েছে বলিউডকে?
ইমতিয়াজ: গত দু’বছরে অনেকটাই বদলে গিয়েছে হিন্দি ছবির দুনিয়া। বিষয় বদলেছে। দর্শকদের দৃষ্টিভঙ্গি, রুচি বদলেছে। প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে দেখার অভ্যাসেও বদল ঘটছে। ফলে, যে ছবি মুক্তি পাচ্ছে বা আগামী দিনে মুক্তি পাবে সেগুলো আরও ঝকঝকে হবে।
কাজ নিয়ে অকপট ইমতিয়াজ।
প্রশ্ন: সিনেপ্রেমীদের একটা বড় অংশ ইমতিয়াজের অনুরাগী। ইমতিয়াজ কার?
ইমতিয়াজ: অনুরাগ বসুর কাজ খুব ভাল লাগে। অনুরাগ কাশ্যপ, রাজু হিরানি এঁরাও আমার ভাল বন্ধু। কাকে ছেড়ে কাকে বলি? তবে সত্যি বলতে, আমি আমার আগের প্রজন্মের পরিচালকদের কাজ বেশি পছন্দ করি। যেমন, জেপি দত্ত বা রাহুল রাওয়ালের নাম খুব কম লোকে নেন। আমি ওঁদের অনুরাগী। তালিকায় মণিরত্নমও আছেন।
প্রশ্ন: বাংলার প্রথম সারির পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় হিন্দিতে ‘বেগমজান’, ‘সাবাশ মিতু’, ‘শেরদিল’ বানালেন। প্রতিদ্বন্দ্বিতা না প্রতিযোগিতা বাড়ল?-
ইমতিয়াজ: (হেসে ফেলে) দুটোর একটাও নয়। সৃজিত আমার ভাল বন্ধু। ওঁর ‘বেগমজান’ আমি দেখেছি। বাংলায় যেটা ‘রাজকাহিনী’। দেশভাগের সময়ের কথা অদ্ভুত সুন্দর ভাবে দেখিয়েছেন। আমি ব্যক্তিগত ভাবে চাই, শুধু সৃজিত কেন! বাংলার বাকি পরিচালক, অভিনেতারাও মুম্বইয়ে আসুন। বলিউডে কাজ করুন। হিন্দি ছবি আরও সমৃদ্ধ হবে।
প্রশ্ন: কলকাতা এত পছন্দের, এই শহরকে আপনার ছবিতে ধরবেন না?
ইমতিয়াজ: কলকাতা আমার ছবিতে আছে। হয়তো দর্শকেরা বুঝতে পারেননি। এখানকার কলাকুশলীদের নিয়েও কাজ করার ইচ্ছে অনেক দিনের। ওঁরা বড্ড নিখুঁত। তাই বাংলা ছবির মান এত ভাল।
প্রশ্ন: আপনার ‘জব উই মেট’ এখনও কেউ ভুলতে পারেননি। ‘জব উই মেট ২’ বানাবেন?
ইমতিয়াজ: (হাসতে হাসতে) মাথা খারাপ! শেষে মার খাব নাকি আপনাদের মতো সমালোচক আর দর্শকদের থেকে? প্রথম ছবির মতো ভাল না হলে কেউ ছেড়ে কথা বলবে না।
প্রশ্ন: তখনকার চর্চিত যুগল শাহিদ-করিনা কপূরকে নিয়ে কাজ করেছেন। এখনকার চর্চিত দম্পতি ‘ভিক্যাট’কে নিয়ে কাজ করবেন?
ইমতিয়াজ: আমি কখনও চলতি হাওয়ায় গা ভাসাইনি। ‘জব উই মেট’ ছবিতে ওঁদের প্রয়োজন ছিল। তাই ওঁরা এসেছিলেন। চর্চিত যুগল বলে নয়। জানি, ‘ভি-ক্যাট’ এখন ব্র্যান্ডিং। শুধু মাত্র সেই কারণে ওঁদের নিয়ে ছবি তৈরি ইচ্ছে আমার বিন্দুমাত্র নেই।