(বাঁ দিকে) এআর রহমান ও ইমতিয়াজ় আলি। ছবি: সংগৃহীত।
‘রকস্টার’ ছবিতে ‘কুন ফয়া কুন’ গানটি নিয়ে সন্দিহান ছিলেন এআর রহমান। গানের কথা কোনও ভাবে কারও ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করবে না তো? এই ভাবনা কুরে কুরে খাচ্ছিল সুরকারকে। পরিচালক ইমতিয়াজ় আলিও এ নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। যদিও প্রাথমিক ভাবে গানের অর্থ জানতেন না পরিচালক।
সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে পরিচালক জানিয়েছেন, গীতিকার ইরশাদ কামিলের সঙ্গে গানের কথা নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল তখন। সেই সময় রহমানকে ‘কুন ফয়া কুন’-এর পরামর্শ দেন ইরশাদ। তাঁর কথা শুনে হতভম্ব হয়ে যান রহমান। তিনি পাল্টা জিজ্ঞেস করেন, “কী! তুমি নিশ্চিত, এটা করব আমরা?”
সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি সংক্রান্ত বাণী ‘কুন ফয়া কুন’। এর অর্থ, “যা হচ্ছে, যা হবে তা শাশ্বত।” এই শব্দবন্ধনী নেওয়া হয়েছে কোরান থেকে। রহমানের মতে, নির্দিষ্ট একটি সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অভিব্যক্তি গানে তুলে ধরা সমীচীন নয়। তাই এই গানটি গাইবেন না বলে মনস্থির করেছিলেন রহমান।
এই প্রসঙ্গে ইমতিয়াজ় বললেন, “আমি সেই সময় ‘কুন ফয়া কুন’-এর অর্থ জানতাম না। ওরা দু’জন জানত। ‘কোরান’ থেকে নেওয়া হয়েছে কথাগুলি।” কিন্তু বাইবেল ও ঋগ্বেদেও এই কথার উল্লেখ রয়েছে, জানালেন পরিচালক।
পরিচালকের কথায়, “যে কোনও ধর্মীয় লেখনীর ক্ষেত্রে ভাষা ভিন্ন হলেও অন্তর্নিহিত বিষয়বস্তু একই থাকে। সেটা কোরান, বাইবেল বা ঋগ্বেদ, যা-ই হোক।” তিনি আরও বললেন, “রহমান কিন্তু কিছুতেই রাজি হচ্ছিল না। ওর একটাই ভাবনা, গানের মাধ্যমে কারও ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত করা যাবে না।” পরে অনেক আলোচনার পরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গানের কথা একই থাকবে, কিন্তু সংবেদনশীলতার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হবে।
মনস্থির হল ঠিকই, কিন্তু গানের শুটিংয়ের সময় ঘটে বিপত্তি। দিল্লির নিজ়ামউদ্দিন দরগায় শুটিং হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শুটিংয়ে গিয়ে তাঁরা দেখেন ওই চত্বরে ট্রলি দিয়ে শুট করা যাবে না। দরগার থেকে উঁচুতে ক্যামেরা রেখে শুটিং করা যাবে না, নিয়ম জারি করা হয় দরগার তরফে। তাই পুরো পরিকল্পনাই নাকচ করে দিতে হয়। দরগার নিয়ম মাথায় রেখে নতুন করে শুটিংয়ের পরিকল্পনা করা হয়। পরিচালকের কথায়, “আমরা মনমরা হয়ে পড়েছিলাম। আবার শূন্য থেকে সব শুরু করতে হয়। সব দিক মাথায় রেখে নিজ়ামউদ্দিন দরগায় শুটিং শুরু করি আমরা।”