কৃষ্ণনগরের অনুষ্ঠানে ইমন চক্রবর্তী।
শহরের তথাকথিত সংস্কৃতিবান, সঙ্গীতরসিক, সুশীল নাগরিকদের সংগঠন-আয়োজিত সঙ্গীতানুষ্ঠান। গত রবিবার সেখানে গান শেষ করে মঞ্চ থেকে নামার পরেই কর্মকর্তাদের হাতে চরম লাঞ্ছিত হয়েছেন বলে অভিযোগ সঙ্গীতশিল্পী ইমন চক্রবর্তীর। ফেসবুকে লাইভে সেই হেনস্থার কথা বিস্তারে বর্ণনাও করেছেন তিনি। প্রশ্ন তুলেছেন শিল্পীর স্বাধীনতা ও মর্যাদা নিয়ে।
ঘটনার নিন্দায় সরব হয়েছেন অধিকাংশ কৃষ্ণনাগরিক। প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যদিও আয়োজক সংস্থা ‘কৃষ্ণনগর সাংস্কৃতিক মঞ্চ’ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ইমন দাবি করেছেন, রবিবার মঞ্চ থেকে নামার পরে কর্মকর্তারা তাঁর গাড়ি আটকে দেন। তাঁকে গালিগালাজ করে মাঠের গেটে তালা দিয়ে দেওয়া হয়। তুইতোকারি করে তাঁকে আরও কিছু গান গাওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয় এবং কথা না শুনলে দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। বাদ্যযন্ত্র শিল্পীদের ধাক্কাও দেওয়া হয়। শিল্পী ও তাঁর সহযোগীদের এই ভাবে লাঞ্ছিত হতে দেখে শেষ পর্যন্ত জনতা গেট ভেঙে তাঁদের উদ্ধার করে গাড়িতে তুলে দেন।
ইমনের কথায়, ‘‘শিল্পীদের টাকা দিয়েছেন বলে কিছু মানুষ তাঁদের কেনা গোলাম বলে মনে করেন।’’ আরও বলেন, ‘‘যে ভাবে আমাদের অপমান ও হেনস্থা করা হয়েছে ভাবা যায় না। দর্শকেরা এগিয়ে এসে আমাদের সাহায্য না করলে চরম বিপদ হত।’’
শহরের প্রায় কেন্দ্রস্থলে কৃষ্ণনগর পাবলিক লাইব্রেরির মাঠে অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছিল। আয়োজক মঞ্চের সম্পাদক অনন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
কৃষ্ণনগর সাংস্কৃতিক মঞ্চ স্থানীয় পুরসভার আর্থিক সাহায্য পায়। নতুন বোর্ড হয়নি বলে দায়িত্বে রয়েছেন মহকুমাশাসক অম্লান তালুকদার। তিনি খোঁজখবর করছেন। প্রাক্তন পুরপ্রধান অসীম সাহা মঞ্চের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক। তাঁর খেদ, “সংস্কৃতির নামে অপসংস্কৃতির পরিচয় দিল সাংস্কৃতিক মঞ্চ। অত্যন্ত লজ্জাজনক ঘটনা।”
রবিবার ওই অনুষ্ঠানে থাকা বেশ কিছু দর্শক দাবি করেন, গান গেয়ে চলে যাচ্ছিলেন ইমন। আচমকা অনন্ত গাড়ি থামিয়ে দেন। আরও গান গাইতে বলা হয়। অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করা হচ্ছিল। তখন তাঁরা রুখে দাঁড়ান। দর্শকদের একাংশের পাল্টা দাবি, তাঁরা শুধু কয়েকটি গান শুনতে চেয়েছিলেন। তাতে ইমন দুর্ব্যবহার করেন। এবং সময়ের আগে গান থামিয়ে নেমে যান। এই অভিযোগ অবশ্য ইমন অসত্য বলে দাবি করেছেন।