‘ভুটু আইজান’-এ গান গাইছে শ্রেয়াণ।
সকালেই খবরটা পেয়েছিল সে। ‘হামি’ছবির ‘ভুটু ভাইজান’-এর ছোট্ট গায়ক শ্রেয়ান ভট্টাচার্য। ‘‘আমার গাওয়া ভুটু ভাইজানের ভিউ দেখলাম এক মিলিয়ন হয়ে গেছে। মজা লাগে। সকলে বলে, ফোন করে।’’ তা হলে কি তুমি স্টার হয়ে গেলে? বুদ্ধি ধীর চোখে লজ্জা পায় শ্রেয়ান। প্রথমে আনন্দে বলে, ‘‘হ্যাঁ, হবেও বা।’’ পরে সঙ্গে সঙ্গে সামলে নেয়, বলে,‘‘এখন এ সব ভাবার সময় না। সারেগামাপা লিটল চ্যাম্পে আশাজি বলেছিলেন, কোনও দিকে না ভেবে শুধু গান গেয়ে যেতে। আমি শুধু রেওয়াজ করি।’’ শ্রেয়ানের বাবা নির্মাল্য ভট্টাচার্য সঙ্গীতশিল্পী। তিনি এক সময় স্টেজ শো-ও করতেন। শ্রেয়ানের যখন চার বছর বয়স, তখন প্রথম বার বাবার সঙ্গে স্টেজে উঠেছিল সে। তার পর পাঁচ বছর বয়স থেকে সঙ্গীতের তালিম শুরু হয় গুরু জয়ন্ত সরকারের কাছে। ‘‘ওঁর কাছে আমি ধ্রুপদী সঙ্গীত এবং আধুনিক বাংলা গান শিখছি।’’বলে ওঠে সারেগামাপা লিটল চ্যাম্প বিজয়ী শ্রেয়ান। সোশ্যাল মিডিয়ার গানের জগত এখন ভাইজানের দখলে। এ ভাইজান সলমন নয়। এ ভাইজান, ‘ভুটু ভাইজান’। এটা শুধু বছরের সেরা পার্টি সং নয়, বছরের সেরা চমকের মধ্যেও একটি। কারণ, শিবু-নন্দিতার ছবিতে পার্টি সং থাকে, সেটাই তো ভাবতে পারেননি দর্শক।
ভাইজান গান গাওয়া শুধু নয়, ‘হামি’-তে তো নাচ করে, অভিনয় করে সকলের মন কেড়েছে ক্লাস সেভেনের শ্রেয়ান। ‘‘শিবু আঙ্কল ফ্লোরে যখন নাচতো দারুণ লাগত আমার। শিবু আঙ্কল আমায় গান গেয়ে নাচতে নাচতে অভিনয় করা শিখিয়ে দিয়েছিল।’’
আর ব্রত?
‘‘ও তো বন্ধু হয়ে গেছে খুব। খুব মজার। খালি বলে, ‘‘খাওয়ার জন্যই জীবন। যতদিন বাঁচব শুধু খেয়ে যাব ভাই।’’ বলতে বলতে হেসে ফেলে শ্রেয়ান। কালোজাম বা স্প্যাগেটি পছন্দ না হলেও চিকেন আর ফুচকা তার চাই-ই চাই। তেঁতুল জলে গলা বসে যেতে পারে এমন ভয় শ্রেয়ানের নেই। উল্টে বলে ওঠে, ‘‘আমি তো আইসক্রিমও খাই। খেয়েই একটু জল খেয়ে নিই। ও গলায় কিছু হয় না।’’শ্রেয়ান এই বয়সেই জেনে গিয়েছে রেওয়াজই আসল।
আরও পড়ুন, নতুন রেকর্ড তৈরি করল ‘ভুটু ভাইজান’
গান ছাড়া গল্পের বইয়ের পাতায় মাঝে মাঝে মন চলে যায় শ্রেয়ানের। উত্তেজিত হয়ে বলে ‘‘কী যেন গল্পটা...আংটি...ওহ্ হ্যাঁ, মনে পড়েছে,‘বাদশাহী আংটি’। তবে নিজে পড়ার চেয়ে মা যদি গল্প পড়ে শোনায় তাতে আমার বেশি ভাল লাগে।’’
আগে টাইটেল ট্র্যাক তৈরি হয়নি। ‘‘শুধু গিটারের সঙ্গে অরিন্দমদা গানটা আমায় রেকর্ড করতে বলে। অনিন্দ্য আঙ্কলের কথাগুলো এত ভাল যে গাইতে খুব ভাল লেগেছিল।’’ রেওয়াজ ছেড়ে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে বলে শ্রেয়ান।
বড় হয়ে তাহলে কী হতে চাও? প্রশ্ন শেষ হওয়ার আগেই রেডি উত্তর, ‘‘অরিজিৎ সিংহ।’’ অরিজিৎ সিংহকে শুধু কাছ থেকে দেখার নয়, অরিজিতের ছবিতে কাজ করার অভিজ্ঞতাও ওর খুদে ঝুলিতে ভরে আছে। ‘‘কী ভাল গান করেন, আর খুব ভাল উনি’’,ঝলমলিয়ে ওঠে শ্রেয়ানের মিঠে স্বর।
অঙ্কের খাতা তার পছন্দ নয়। যদিও গানের জগতের অঙ্কটা দারুণ ভাবে মিশে যাচ্ছে শ্রেয়ানের জীবনে। অনুপম রায়ের সঙ্গীত পরিচালনায় ‘ধূমকেতু’ছবিতে গান গাওয়া হয়ে গিয়েছে। অরিজিৎ সিংহও তার পাশে, সঙ্গে শিবপ্রসাদ-নন্দিতার সুপারহিট ‘হামি’ছবির গান।
স্বপ্নে কি আসে তার? সুর? গান?