হিনা খান।
দেশজুড়ে চলা আনলক ওয়ান পর্বের মধ্যেই মুক্তি পেল ওয়েব ফিল্ম ‘আনলক’-এর ট্রেলার। হিনা খান-কুশল টন্ডন অভিনীত এই ছবি টেক-বেসড ডার্ক সাসপেন্স থ্রিলার জ়ঁরের। হিনার চরিত্র সুহানি আনলক নামের একটি ‘হন্টেড’ অ্যাপ ডাউনলোড করার পর থেকেই নতুন মোড় আসে গল্পে। ‘আনলক’-এর দৈর্ঘ্য খুব বেশি নয়, তাই দর্শককে ধরে রাখবে বলেই বিশ্বাস হিনার। জানালেন, তিনি প্রত্যেক দিন রাতে যখন নতুন নতুন ছবি খোঁজেন অনলাইনে দেখবেন বলে, সব সময়ে ছবিটি কত মিনিটের, সে দিকে চোখ রাখেন। ‘‘দেড়-দু’ঘণ্টার ছবি না হলে দেখতে শুরুই করি না! আমাদের ছবিটাও শর্ট অ্যান্ড স্মার্ট,’’ বললেন হরর-থ্রিলারভক্ত হিনা।
তাঁর নিজের জার্নি শুরু টেলিভিশন থেকে। তবে বেশ কিছু দিন হল, টেলি-দুনিয়া থেকে সচেতন ভাবেই বিরতি নিয়েছেন ‘ইয়ে রিশতা কেয়া কহেলাতা হ্যায়’-এর অক্ষরা। ওয়েব দুনিয়ায় ‘ড্যামেজড’ ছিল তাঁর অভিনীত প্রথম সিরিজ়, আর ‘আনলক’ হতে চলেছে তাঁর মুভি ডেবিউ। ‘‘সিনেমা হল খোলার অপেক্ষা দীর্ঘতর হচ্ছে, তাই সব ছবিই এখন ওয়েব মুভি। এখন ডিজিটাল ছাড়া আর কোনও মাধ্যম নেই যেহেতু, তাই আরও বেশি করে সিরিজ় আর ছবি করতে চাই,’’ বললেন হিনা। তাঁর মতে, টেলিভিশনের পরিবর্ত হয়ে উঠতে ডিজিটালের আরও সময় লাগবে। ‘‘টেলিভিশনের নিজস্ব একটা দর্শক রয়েছে, যার সংখ্যা বিপুল। পছন্দের ডেলি সোপ কোনও অ্যাপে দেখালে তবেই সেই অ্যাপ ডাউনলোড করবেন তাঁরা।’’ ‘নাগিন ফোর’-এর অফার গিয়েছিল হিনার কাছে। আগের সিজ়নে না থাকলেও এ বার ‘নাগিন ফাইভ’-এ কি দেখা যেতে পারে তাঁকে? ‘‘অন্যত্র কমিটমেন্ট থাকায় যে আগের সিজ়নের অফারটা নিতে পারিনি, সেটা একতা (কপূর) জানে। ওঁর সিদ্ধান্তের জন্যই অপেক্ষা করুন,’’ প্রশ্ন ‘ডজ’ করলেন হিনা।
লকডাউনে বই পড়া, রান্নাবান্না, ওয়র্কআউট, নতুন ছবির ডাবিং... এ সব নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন হিনা। ‘‘আমি যে রূপচর্চাতেও অনেকটা সময় ব্যয় করি, সেটা আমার ইনস্টা-ফলোয়াররা জানেন (হাসি)! হেয়ার-কাট করালাম সদ্য,’’ বললেন অভিনেত্রী। বয়ফ্রেন্ড রকি জয়সওয়ালের সঙ্গেও দীর্ঘ দিন পরে দেখা-সাক্ষাৎ হচ্ছে এখন। তবে সম্প্রতি সোনম কপূরের ‘আই অ্যাম প্রিভিলেজড’ টুইটের প্রেক্ষিতে টিভি প্রোডিউসর রকির প্রতিবাদ নিয়ে হিনা মন্তব্য করতে চাইলেন না। চান, সুশান্তের মৃত্যুর তদন্তে সত্যিটা যেন তাড়াতাড়ি সামনে আসে। তিনি নিজে নেপোটিজ়মের শিকার হয়েছেন কি না জানতে চাওয়া হলে বললেন, ‘‘কেরিয়ারের শুরুর দিকে আমাকেও উৎসাহ দেওয়া হত না। ভীষণ মনখারাপ হত তখন। তবে সেই মনখারাপ কখনও হতাশা বা অবসাদের দিকে ঠেলে দেয়নি। এমন নায়িকা বারবার সুযোগ পেয়েছেন আমার জায়গায়, যার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এই সব ‘প্রিভিলেজড’দের জন্যই হয়তো আমার মতো আরও বহু ‘আউটসাইডার’কে প্রাপ্য সুযোগ পাওয়ার জন্য অনেক লড়তে হয়।’’ হিনা মনে করেন, টেলিভিশনে এখনও ট্যালেন্টের আগে বিচার্য গ্ল্যামার। ‘‘টেলিভিশনে এমন অনেক প্রতিভা রয়েছেন, যাঁরা অভিনয়টা দেখানোরই সুযোগ পান না। ভাগ্যক্রমে শুরুর দিকে আমি এমন কিছু প্রজেক্ট পেয়েছিলাম, যা আমার জন্য ক্লিক করে গিয়েছিল। ‘ইয়ে রিশতা কেয়া কহেলাতা হ্যায়’ ভারতীয় টেলিভিশনের অন্যতম দীর্ঘ শো। পরে কমলিকার মতো জনপ্রিয় খলচরিত্র যখন করলাম, সেটাও দর্শক খুব ভাল ভাবে নিলেন। আমার কেরিয়ার ‘স্লো বাট স্টেডি’। তবে যদি স্টারকিড হতাম, তা হলে এত দিনে হয়তো চার-পাঁচটা হিট ছবি আর নামী অ্যাওয়ার্ড থাকত ঝুলিতে!’’ শ্লেষ তাঁর গলায়। তবে নিজের জার্নি নিয়ে কোনও আফসোস নেই হিনা খানের।