ইরফান
এখনও তাঁর জীবনের উপর থেকে শঙ্কা কাটেনি। তার পরেও ছবিতে অভিনয় করেছেন, স্রেফ মনের জোরে। এই শুক্রবার মুক্তি পাচ্ছে ইরফান খানের ‘আংরেজ়ি মিডিয়াম’। ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার মাঝেই ছবিটি করেছেন অভিনেতা। কিছু দিন আগেই জানিয়েছিলেন ছবির প্রচারে তিনি থাকতে পারবেন না। চিকিৎসার জন্য ফের বিদেশ যাবেন। সম্প্রতি এক পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ফুটে উঠেছে ইরফানের লড়াকু মনোভাবের কথা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের অসুস্থতার কথা বরাবরই খোলাখুলি বলেছেন অভিনেতা। যেখানে সেন্স অব হিউমর দিয়ে মৃত্যুভয়কে ঢেকে রাখার প্রয়াস দেখা যেত। ইরফানের কথায়, ‘‘মৃত্যুভয়ের চেয়েও খারাপ কী, জানেন? বেঁচে থাকা এবং মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাওয়া। আমি মিরাকলে বিশ্বাস করি। অপ্রাপ্তিগুলো পূরণ করতে চাই আমার নাছোড়বান্দা মানসিকতা দিয়ে।’’ ‘আংরেজ়ি মিডিয়ামে’ ইরফান তেমনই এক নাছোড়বান্দা বাবার ভূমিকায়। যে কারণে তিনি চরিত্রটির সঙ্গে রিলেট করতে পারেন। অসুস্থ হওয়ার পর থেকে দেশে থাকলে ছেলেদের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি সময় কাটাতেন ইরফান। ‘‘বাবা হিসেবে আমি কোনও দিনই কড়া ছিলাম না। ছেলেদের ওদের মতো করে বড় হতে দিয়েছি। সঙ্গে ছিল আমার শর্তহীন ভালবাসা। ওদের কাছে কোনও প্রত্যাশা রাখিনি কখনও। এখন বুঝতে পারি, এটা সকলের জন্যই ভাল হয়েছে,’’ সাক্ষাৎকারে মন্তব্য ইরফানের।
২০১৮ সালে ইরফানের ‘কারওয়াঁ’ মুক্তি পেয়েছিল। তার আগে থেকেই তিনি নিউরোএন্ডোক্রাইন টিউমরে ভুগছিলেন। ‘কারওয়াঁ’র প্রচারেও ছিলেন না ইরফান। লন্ডনে গিয়ে চিকিৎসা করিয়ে খানিক সুস্থ হয়ে তিনি ‘আংরেজ়ি মিডিয়াম’-এ কাজ করেন। শুধু অভিনয় চালিয়ে যেতে হবে বলেই ছবিটা করেননি তিনি। ইরফান বলছেন, ‘‘কম বয়সে আমি নাম, খ্যাতি, যশ, অর্থ চাইতাম। এখন মনে হয়, যে গল্পগুলো বলা দরকার সেগুলো বলি, প্রতিটি মুহূর্ত বাঁচি... শুক্রবারের চাপের বোঝা নিয়ে বাঁচার মানে হয় না। তাতে ছবির ভবিষ্যৎ বদলাবে না।’’ অসুস্থতা তাঁর জীবনের যাপন বদলে দিয়েছে। সিনেমা দেখা আর বই পড়ার অভ্যেস ছিল ইরফানের। অভিনেতা জানান, এখন পড়ার চেয়ে দেখেন বেশি।
ইরফানের পাশে গোটা ইন্ডাস্ট্রি রয়েছে। হোমি আদাজানিয়ার ‘আংরেজ়ি মিডিয়াম’-এ রয়েছেন করিনা কপূরও। তিনি যেমন বলেছেন, এ ছবিটা করার অন্যতম কারণ ইরফান। ছবি প্রোমোশনের একটি ভিডিয়োয় আলিয়া ভট্ট, অনুষ্কা শর্মা, ক্যাটরিনা কাইফ, জাহ্নবী কপূর প্রমুখকে দেখা গিয়েছে।