ছবিতে অনির্বান
বিদেশি ছবিতে দর্শক যখন ড্রাকুলা চরিত্র দেখেন, তখন তার একটা নির্দিষ্ট আবহ থাকে। দুর্গের মতো বাড়ি, ঘোড়ার গাড়ি, কফিন... এই অনুষঙ্গগুলো ড্রাকুলা কনসেপ্টের সঙ্গে অদ্ভুত ভাবে জড়িয়ে। দেবালয় ভট্টাচার্যের ‘ড্রাকুলা স্যার’-এর কাহিনিতে মিশেছে বাঙালি উপাদান। এত বিষয় থাকতে ড্রাকুলা কেন? ‘‘আমার নিজের এই কনসেপ্টটা বেশ ভাল লাগে। মিথ, রহস্য সব কিছু রয়েছে। তাই বাংলায় যখন ড্রাকুলা নিয়ে ছবি করার কথা ভেবেছিলাম, তখন সেই কাহিনির মিথ, তার ব্যাকস্টোরি সব কিছুর মধ্যেই বাঙালিয়ানা রাখতে হত,’’ বলছিলেন দেবালয়।
বাঙালি দর্শক যতই ‘টোয়াইলাইট’, ‘ভ্যাম্পায়ার ডায়েরিজ়’ দেখুন না কেন, বাংলা ছবি হিসেবে ড্রাকুলা তাঁদের কাছে কতটা গ্রহণযোগ্য হবে? ‘‘সত্যি বলতে খানিকটা ঝুঁকি নিয়েই এই ছবিটা করা। তবে টিজ়ার, ট্রেলারে দর্শকের প্রতিক্রিয়া দেখে আমি আশাবাদী। আর সাহিত্য অনুরাগী বাঙালি দর্শক কিন্তু বইয়ের পাতায়
ড্রাকুলা পড়েছেন,’’ যুক্তি দেবালয়ের। পরিচালক জানালেন, তাঁর ড্রাকুলা ছবির রেফারেন্স পয়েন্টে সে অর্থে কোনও বিদেশি ছবির প্রভাব নেই। তবে কেউ কেউ সত্যজিৎ রায়ের লেখা কাহিনি ‘শিবু আর রাক্ষসের কথা’র উল্লেখ করছেন। যদিও মিল সামান্যই।
ছবিতে নামভূমিকায় অনির্বাণ ভট্টাচার্য। নতুন ধরনের বিষয় বলেই অনির্বাণ বেশি উত্তেজিত। তাঁর কাছে ছবিটি শুধুই ড্রাকুলাকেন্দ্রিক নয়, কাহিনির মনস্তাত্ত্বিক পরতও সমান আকর্ষক। পরিচালকও তাঁকে নির্বাচন করেছেন বিশেষ কারণে, ‘‘অনির্বাণ এত দিন যে সব চরিত্র করেছে, সেগুলো বুদ্ধিদীপ্ত, তীক্ষ্ণ। ওর মধ্যে যে ভালনারেবিলিটি আছে, সেটা এক্সপ্লোর করা হয়নি।’’
এই ছবি দিয়ে অনেক দিন পরে কাজে ফিরেছিলেন মিমি চক্রবর্তী। সে কারণে ছবিটি তাঁর কাছে স্পেশ্যাল। মিমির কথায়, ‘‘ছবির গল্প, লুক-ফিল সবটাই ভীষণ অন্য রকম। একটা বড় অংশ সত্তরের দশকের প্রেক্ষাপটে। এই ধরনের ছবি আমি আগে করিনি।’’ মিমিকে সচরাচর গ্ল্যামারাস চরিত্রে দেখা যায়। কিন্তু দেবালয়ের মতে, মিমির মধ্যে এক ধরনের ‘বিষাদ’ রয়েছে, যেটা ছবির মঞ্জরীর সঙ্গে ভীষণ ভাবে মানানসই। ছবিতে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে রয়েছেন বিদীপ্তা চক্রবর্তী, রুদ্রনীল ঘোষ।