সেলেবদের বিরুদ্ধে আলটপকা মন্তব্য করে লাইমলাইটে থাকার চেষ্টায় বুঁদ হয়ে থাকেন কমল আর খান ওরফে কেআরকে। বছর দুই আগে সুপারস্টার অক্ষয় কুমারের বিরুদ্ধে এমনই এক মন্তব্য করে বসেন তিনি।
সেটা ছিল অক্ষয়ের নায়িকা অদিতি রাও হায়দারিকে নিয়ে। মিটু আন্দোলনের সময় তাঁর সেই টুইট নিয়ে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। প্রথমে সরাসরি নাম না নিয়ে এবং পরে সরাসরি নাম করেই টুইট করেছিলেন কেআরকে।
বিষয়টি এমন ছিল, অভিনেত্রী অদিতি রাওয়ের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন অক্ষয় এবং তা নাকি মোটা টাকার বিনিময়ে ধামাচাপা দিয়েছেন তাঁর স্ত্রী টুইঙ্কল।
অদিতির সঙ্গে ‘বস’ ছবিতে জুটি বেঁধেছিলেন অক্ষয়। এর পর আরও দু'টি ছবিতে তাঁদের একসঙ্গে কাজ করার কথা ছিল। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে সে সময় সেই অন্য দু'টি ছবি আর মুক্তি পায়নি। ঠিক কী কারণে সেগুলো মুক্তি পেল না, তা জানা যায়নি তখন।
পরে মিটু আন্দোলনের সময় অদিতির কিছু টুইট নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়। নাম না নিয়েই মিটু তিরে অক্ষয়কে বিদ্ধ করেন অদিতি।
২০১৮ সালে বলিউডে মিটু আন্দোলন আসে। যার সুত্রপাত করেছিলেন অভিনেত্রী তনুশ্রী দত্ত। এমন এক আন্দোলনে মহিলাদের পাশে না দাঁড়িয়ে পারেননি টুইঙ্কল খন্না। তিনি টুইট করেন, ‘কী অন্যায় তাঁদের সঙ্গে হচ্ছে, মহিলাদের এবার চিৎকার করে জানাতে হবে'।
ঠিক তার পরের দিনই অদিতি একটি টুইট রিটুইট করেন। সেই টুইটের বিষয়বস্তু এমন ছিল, ‘যাঁরা খুব ভাল করেই জানেন তাঁদের স্বামীরা যৌন হেনস্থা করে থাকেন, সেই তাঁরাই আবার নির্লজ্জের মতো মিটু নিয়ে জ্ঞান দিচ্ছেন। এর থেকে নিজেদের স্বামীর উপর নজর রাখুন'।
টুইটটি যে টুইঙ্কলের উদ্দেশে ছিল, তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি কারও। এর পর দিন আবার অক্ষয় মিটু আন্দোলনকে সমর্থন জানান। এক টুইটে তিনি লেখেন, ‘যত দিন না তদন্তের ফল জানা যায়, আমি এমন কারও সঙ্গে কাজ করতে চাই না যিনি যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত'। সে সময় সাজিদ খানের ছবি ‘হাউসফুল ৪’-এ কাজ করছিলেন তিনি এবং সাজিদ ছিলেন অভিযুক্ত।
অক্ষয়ের এই টুইট সামনে আসার পর দিন ফের অদিতি রাও একটি টুইট করেন। এই টুইটেও নাম না নিয়ে অক্ষয়কে আক্রমণ করেন তিনি।
এর কিছু দিন পর থেকেই তোলপাড় হতে শুরু করে মিডিয়ায়। নাম না নিলেও কাদের উদ্দেশে অদিতি এমন টুইট করছেন, তা খোলসা করতে শুরু করে গণমাধ্যম।
বলিউডে গুঞ্জন যখন তুঙ্গে, এমন সময় আসরে নামেন টুইঙ্কল স্বয়ং। স্বামীর উপর মিটু অভিযোগ যাতে না আসে তার জন্য নাকি পরিকল্পনা করেন তিনি। টাকা দিয়ে নাকি মিডিয়ার মুখ বন্ধ করে দেন।
তখন শোনা গিয়েছিল, অদিতির মুখ বন্ধ রাখার জন্য নাকি তাঁর বাড়ি ১০ কোটি টাকার চেক পৌঁছে গিয়েছিল।
এমনকি এও শোনা গিয়েছিল যে, বড় বড় মিডিয়া হাউসগুলোতেও পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল কোটি কোটি টাকার চেক। তাই আচমকাই কয়েক দিন পর থেকে এই সমস্ত টুইট নিয়ে চর্চা বন্ধ হয়ে যায়।
তবে কয়েকটি মিডিয়া তখনও এ নিয়ে খবর প্রকাশ করছিল। সরাসরি নাম না নিলেও ঘটনা পরম্পরা জুড়লে বিষয়টি কী দাঁড়াচ্ছে, তা পরোক্ষ ভাবে বুঝিয়ে দিয়েছিল তারা। অভিনেত্রী অদিতিকে এবং সমস্ত বড় মিডিয়া হাউসগুলোকে টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ রাখার বিষয়টিও প্রকাশিত হয়েছিল কাগজে।
ঠিক কী হয়েছিল? অক্ষয় সত্যিই অভিযুক্ত ছিলেন কি না তা আজও স্পষ্ট নয়, তবে টুইট এবং রিটুইটগুলোকে জুড়লে অভিযোগের তির এই বলি সুপারস্টারের দিকেই যায়।