রাজ, শ্রাবন্তী, ইমন ও বিক্রম
অতিমারি রাজ্য থেকে রথযাত্রার আনন্দ কেড়েছে। কিন্তু তাই বলে উৎসবপ্রিয় বাঙালি কি উদ্যাপন থেকে দূরে থাকবে?
একেবারেই নয়। রাস্তায় আগের মতো সাজানো-গোছানো রথ হয়তো দেখা যাবে না। কিন্তু বাড়িতে জগন্নাথদেবের পুজো হতেই পারে। শুভেচ্ছা বিনিময়ও করতে পারেন একে অন্যের সঙ্গে। গত বছরের মতো চলতি বছরেও রথযাত্রার দিনে এই পথটাই বেছে নিয়েছেন বাংলার তারকারা।
বরাবরই জগন্নাথদেবের বড় ভক্ত ব্যারাকপুরের বিধায়ক রাজ চক্রবর্তী। বিয়ের পরে নবদম্পতি দেবতার আশীর্বাদ নিতে পুরী গিয়েছিলেন। নির্বাচনের আগেও সপরিবারে জগন্নাথ ধামে গিয়ে পুজো দিতে দেখা যায় রাজ-শুভশ্রী চক্রবর্তীকে। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে জিতেই আনন্দবাজার অনলাইনকে রাজ জানিয়েছিলেন, সবটাই সম্ভব হয়েছে জনতার ভালবাসায় এবং জগন্নাথদেবের কৃপায়। তারকা পরিচালকের দিন শুরু হয় টুইটারে ‘জয় জগন্নাথ’ লিখে। এ ছাড়া, গত বছরের বিকেলে একমাত্র ছেলে ইউভানকে কোলে নিয়ে বাড়িতে ছোট রথও টানতে দেখা গিয়েছিল ‘রাজশ্রী’-কে।
সকাল থেকেই জাতীয় পুরস্কারজয়ী ইমন চক্রবর্তীর বাড়িতে ধুমধাম করে জগন্নাথদেবের পুজো হচ্ছে। সরাসরি সম্প্রচারে এসে ইমন জানিয়েছেন, তাঁর অনেক অনুরাগীর বাড়িতেই এই বিশেষ পুজো হয় না। তাই লাইভে এসে সেই আনন্দ তিনি ভাগ করে নিচ্ছেন দর্শক-শ্রোতাদের সঙ্গে। নিজের বাড়ির ছাদে আয়োজন করেছিলেন পুজোর। নানা ধরনের ফুল দিয়ে সাজানো প্যান্ডেল। তিন দেবতার মূর্তিতে ফুল-মালা। নানা ধরনের ফল, মিষ্টি নৈবেদ্য দিয়েছেন শিল্পী। হয়েছে যজ্ঞও। এ ছাড়াও, রথযাত্রা উপলক্ষে প্রকাশিত হয়েছে ইমনের ভক্তিগীতি, ‘প্রভু জগন্নাথ’। গোবিন্দ প্রামাণিকের কথায়, রাজকুমার রায়ের সুরে মিউজিক ভিডিয়োয় দেখা যাবে ইমনকেই।
রথযাত্রার মহাপর্ব সোমবার দেখানো হবে জি বাংলার ‘অপরাজিতা অপু’-তে। দৃশ্যে এক দল কীর্তনিয়া এসে গাইবেন ঈশ্বরের নামগান। ওই বিশেষ দৃশ্যের শ্যুটিংয়ের নেপথ্য কাহিনি বলছে, শ্যুটের ফাঁকে দরাজ গলায় ‘নন্দের দুলাল’ গানটি নিজেই গেয়ে উঠেছেন ধারাবাহিকের অন্যতম চরিত্র ‘দীপু’ ওরফে রোহন ভট্টাচার্য। হারমোনিয়ামে অভিনেতাকে সঙ্গত করেন কীর্তন দলের এক শিল্পী। আনন্দবাজার অনলাইনকে রোহন জানিয়েছেন, ‘‘ওই কীর্তনটি আমারও ভীষণ প্রিয়। তাই নিজে গেয়ে যেমন আনন্দ পেয়েছি, তেমনই খুশি আমন্ত্রিত শিল্পীরাও। নেটমাধ্যমে সেই ভিডিয়ো ভাইরাল। বহু অনুরাগী আমার গান শুনে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।’’
রোহনের দাবি, তিনি ঈশ্বরভক্ত। সব ঈশ্বরের থেকেই শক্তি প্রার্থনা করেন। তাঁদের সেরা গুণ নিজের মধ্যে ধারণ করার চেষ্টা করেন। তাই আলাদা করে বাড়িতে জগন্নাথদেবের পুজো না হলেও রথযাত্রার দিনে অন্তর থেকে আরাধনা করেন দেবতার। মঙ্গলকামনা করেন সবার।
অনুরাগীদের রথযাত্রার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, বিক্রম চট্টোপাধ্যায়ও। শ্রাবন্তী আদতে শ্রীকৃষ্ণের ভক্ত। তবে সব দেবতার প্রতিই তিনি সমান শ্রদ্ধাশীল। সেই অনুযায়ী রথযাত্রার দিনে নেটমাধ্যমে তিনি ভাগ করে নিয়েছেন জগন্নাথদেবের ছবি। সবার জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা তাঁর, ‘আজ এই শুভদিনে জগন্নাথদেবের কাছে পৃথিবীবাসীর জন্য সুখ, শান্তি এবং সমৃদ্ধি কামনা করছি। খুব তাড়াতাড়ি পৃথিবী ফিরে পাক তার চেনা স্বাভাবিক ছন্দ।'
বিক্রমও রাজ চক্রবর্তীর মতোই স্মৃতিতাড়িত। ইনস্টাগ্রামে পুরীর রথযাত্রার ভিডিয়ো ভাগ করে নিয়েছেন তিনিও। তাঁর কথায়, ‘আসুন, আমরা রথযাত্রা উপলক্ষে জগন্নাথদেবকে স্মরণ করি। ঈশ্বর যেন সবাইকে শান্তি, সমৃদ্ধি এবং সুখ দেন।'