মালাইকা আরোরা। অভিনেত্রী, মডেল, ভিডিয়ো জকি, নৃত্যশিল্পী এবং টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব। এতগুলো পরিচয়ের সমান্তরালে পরিচয় বহন করেন মালাইকা। তিনি অত্যন্ত আত্মনির্ভর এবং আত্মসচেতন।
মাত্র ১১ বছর বয়সে মা-বাবাকে আলাদা হতে দেখেছেন তিনি। তার পর মা আর বোন অমৃতার সঙ্গেই সময় কেটেছে তাঁর। দুই মেয়ের ভরণপোষণের জন্য মাকে কাজে বার হতে হত। তাই ছোট থেকে বোন অমৃতার দেখভালের সমস্ত দায়িত্ব এসে পড়েছিল তাঁর কাঁধেই।
সমস্ত দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি তাঁর প্যাশন মডেলিংকেও সমান গুরুত্বে লালনপালন করেছেন মালাইকা। তাঁর জীবনে সব সময়েই গুরুত্ব পেয়েছে দুটো বিষয়। এক, তাঁর প্যাশন মডেলিং এবং দুই, প্রেম।
১৯৯৭ সাল থেকে মডেলিং কেরিয়ার শুরু করেন মালাইকা। মডেলিংয়ের দৌলতেই আরবাজ খানের সঙ্গে তাঁর পরিচয়।
ইন্ডাস্ট্রিতে মালাইকার জীবনে সেটাই ছিল প্রথম প্রেম। এক সময় একে অপরকে তাঁরা মন দিয়েই ভালবেসেছিলেন। খান পরিবারেরও তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে কোনও আপত্তি ছিল না।
১৯৯৮ সালে তাঁদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামী এবং সংসার নিয়ে খুশি ছিলেন মালাইকা। তাঁদের এক সন্তানও রয়েছে। কিন্তু ভাগ্য তাঁদের একই ভা্বে খুশি থাকতে দিল না।
অভিনয়, ফিল্ম, নাচ, মডেলিং, সব কিছু নিয়েই কেরিয়ার এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন মালাইকা। আরবাজও ফিল্মে মুখ্য চরিত্রের দৌড় শুরু করেছিলেন। কিন্তু বেশি দূর তিনি দৌড়তে পারেননি। ফিল্মে নায়ক হিসাবে তেমন সাফল্য পাননি আরবাজ।
সলমনের সাহায্যে প্রযোজনাতেও হাত লাগান। কিন্তু সেখানেও তেমন সাফল্য আসেনি। একদিনে মালাইকার সফল কেরিয়ার আর অন্যদিকে আরবাজের ক্রমশ তলিয়ে যাওয়া কেরিয়ার- এই দুই কারণেই সম্ভবত তাঁদের সম্পর্কে ফাটল ধরায়।
মালাইকার একার পক্ষে সংসারের ভার বহন করা সম্ভব হচ্ছিল না। আর স্বনির্ভর মালাইকা পছন্দ করতেন না তাঁর স্বামী সলমনের সাহায্যে জীবন কাটান। দু’জনের মধ্যে দূরত্ব বাড়ছিল ক্রমশ।
সে সময় খান পরিবারে নিত্য যাতায়াত ছিল অর্জুন কপূরের। সলমনের সঙ্গে থেকে নিজেকে গ্রুম করছিলেন অর্জুন।
ক্রমে মালাইকার ভাল বন্ধু হয়ে পাশে দাঁড়ান অর্জুন। দাম্পত্য কলহের যাবতীয় কথা অর্জুনের সঙ্গে শেয়ার করতে শুরু করেন মালাইকা।
এই ভাবেই শুরু হয় তাঁদের সম্পর্ক। বিষয়টি যে ভাল দিকে যাচ্ছে না তা পরিষ্কার আঁচ করে নিয়েছিল সলমনের অভিজ্ঞ চোখ। রোজ রোজ অর্জুনের বাড়িতে আসা বন্ধ করে দেন তিনি।
কিন্তু তাতেও সমাধান হয়নি। মালাইকা এবং আরবাজের দাম্পত্য কলহ এতটাই বেড়ে যায় যে খানদের বাড়ি ছেড়ে ভাড়ার ফ্ল্যাটে চলে যান মালাইকা। সেই ফ্ল্যাটেই এ বার আনাগোনা শুরু হয় অর্জুনের। অর্জুনের বাবা বনি কপূরকে ফোন করে সেটাও বন্ধ করিয়ে দেন সলমন।
খান বাড়ির সম্মান রক্ষার সেই প্রচেষ্টাও পুরোপুরি ব্যর্থ হয়। এতদিন আলাদা থাকলেও আরবাজকে ডিভোর্স দেননি মালাইকা। সলমনের এই প্রচেষ্টার পর খান বাড়ির সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে বেরিয়ে আসেন তিনি। আরবাজকে ডিভোর্স দেন।
এর আগে পর্যন্ত অর্জুন বা মালাইকা কেউই তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে মুখ খোলেননি। উল্টে বারবারই একে অপরকে ভাল বন্ধুর পরিচয় দিয়ে এসেছিলেন।
ডিভোর্সের পর পরই তাঁরা সম্পর্কের কথা স্বীকার করেন। একসঙ্গে থাকতেও শুরু করেন। প্রায় প্রতিদিনই অর্জুনে নতুন করে মুগ্ধ হন, জানিয়েছেন মালাইকা।
সম্প্রতি দু’জনে একসঙ্গে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। একসঙ্গেই নিভৃতবাসে গিয়েছিলেন। অর্জুনের সঙ্গে নিভৃতবাসে থেকে তাঁর এতটাই ভাল লেগেছে তিনি নাকি আবারও অর্জুনের সঙ্গে নিভৃতবাসে যেতে প্রস্তুত, জানিয়েছিলেন মালাইকা।