অনিন্দিতা চক্রবর্তী। ছবি ফেসবুক।
যিনি হাতাকাটা পোশাক পরতে ভয় পেতেন, তিনি মঞ্চে বিচারকদের সামনে বিকিনি সুন্দরী!
এক নারীর এই উত্তরণে আর এক নারী আপ্লুত। আনন্দে বাক্যহারা। নান্দীকার নাট্যগোষ্ঠীর ‘মানুষ’ নাটকের নায়িকা অনিন্দিতা চক্রবর্তী রবিবার সন্ধ্যায় এ ভাবেই গুটিপোকা থেকে রঙিন প্রজাপতি হয়ে উঠলেন। অনিন্দিতা এ দিন স্টেরয়েড ফ্রি বিকিনি মডেল প্রতিযোগিতায় পঞ্চম স্থান দখল করেছেন। নামঘোষণা হতেই নাকি উল্লাসে সিটি দিয়ে উঠেছেন তাঁর মঞ্চের নায়ক সপ্তর্ষি মৌলিক!
অনিন্দিতার এই রূপান্তরে অভিভূত সোহিনী সেনগুপ্ত। আনন্দবাজার অনলাইনে সেই গর্ব, আনন্দ, উচ্ছ্বাস ভাগ করে নিয়েছেন রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্তের কন্যা। বলেছেন, ‘‘নবদ্বীপের মেয়ে। সারা ক্ষণ জড়োসড়ো হয়ে থাকত। এ দিকে নান্দীকারের প্রতিটি বিভাগের দায়িত্ব ভীষণ যত্ন নিয়ে পালন করে। মঞ্চে যখন ওঠে, তখন ওর অভিনয়ের পাশে কাউকে দাঁড়াতে দেয় না! সেই মেয়ে এত বড় কাণ্ড ঘটাল। এই আনন্দ ভাগ না করে পারি?’’ এ-ও জানিয়েছেন, অনিন্দিতার স্বামী অর্ঘও নাকি ভয়ানক গোঁড়া। স্ত্রী হাতাকাটা পোশাক পরবে, সবার সঙ্গে কথা বলবে, মঞ্চে উঠবে- মানতে পারতেন না। সেই অর্ঘই নাকি স্ত্রীকে হাতে ধরে প্রতিযোগিতার মঞ্চ পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছেন!
কী করে এমন অসাধ্যসাধন সম্ভব হল? জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল অনিন্দিতার সঙ্গেও। তখনও নব্য বিকিনি মডেলের গলা থেকে আনন্দের ঘোর কাটেনি। সেই আবেশ নিয়েই তাঁর দাবি, ‘‘সবটাই হয়েছে সোহিনীদি, সপ্তর্ষি, অর্ক আর প্রশিক্ষক অনিমেষ দাসের জন্য। ‘মানুষ’ নাটকের জন্য আমায় শরীরচর্চা করতেই হত। সোহিনীদির কথায় শেষে জিমে ভর্তি হলাম। সেটাই নেশা হয়ে দাঁড়াল। অনিমেষ দাসের প্রশিক্ষণে রোজ দু’ঘণ্টা জিম করেছি। প্রশিক্ষকের তত্ত্বাবধানেই এর পর এই বিশেষ প্রতিযোগিতায় নাম দিই।’’
সাত মাস শরীরচর্চার পাশাপাশি বিশেষ ডায়েট মেনে চলতে হয়েছে। এই সাত মাস বাইরের কোনও খাবার খেতে পারেননি অনিন্দিতা। অল্প ভাত, সেদ্ধ সবজি, চিকেন, প্রোটিন ওটস, ডিমের সাদা অংশ খেতেন। তাঁকে এই সব রান্না করে দিতেন তাঁর স্বামী! অনিন্দিতার মতে, অর্ঘ সাহস না জোগালে তিনি এত কিছু করেই উঠতে পারতেন না। স্বামীর সাহসেই তিনি প্রতিযোগিতার মঞ্চে দ্বিধাহীন।
স্পোর্টস বিকিনি মডেল হিসেবে বিশেষ ভঙ্গিতে দাঁড়িয়েছেন। বিচারকদের দেখিয়েছেন শরীরের সুগঠিত মাংসপেশি। অনিন্দিতার এই উত্তরণে খুশি তাঁর পরিবারও। মা-বাবা-বোন সবাই সমর্থন জানিয়েছেন। মেয়ের গর্বে গর্বিত তাঁরাও।