Gazi Abdun Noor

Gazi Abdun Noor: বর্তমান প্রজন্ম ধর্মের দোহাই দিয়ে পাকিস্তানকে প্রচ্ছন্ন সমর্থন জানাচ্ছে

আমার ফেসবুক পোস্টে এবং ইনবক্সে কিছু মানুষ আমায় বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে, তাদের ফেক প্রোফাইল দিয়ে। এরা মূলত জামাত ইসলাম শিবিরের লোক।

Advertisement

গাজী আব্দূন নূর

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৮:৪৪
Share:

গাজী আব্দুন নূরের কলমে বাংলাদেশের রাজনীতি।

বুধবার বাধ্য হয়ে মুখ খুললাম নেটমাধ্যমে। সম্ভবত এই প্রথম এত খোলাখুলি রাজনীতি নিয়ে কথাও বললাম। অনেকেই অবাক হয়েছেন পড়ে। জানতে চেয়েছেন এর নেপথ্য কারণ কী? কেউ ভেবেছেন আমার দেশ, অর্থাৎ বাংলাদেশের প্রথম সারির নায়িকা পরীমণির সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাকে কেন্দ্র করেই কি নিজস্ব মত প্রকাশ করলাম? প্রকৃত কারণ জানতে আগ্রহী ভারতবর্ষের প্রথম সারির সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার অনলাইনও। সবার সব প্রশ্নের উত্তর দিতেই অবশেষে কলম ধরলাম।

Advertisement

আপনাদের সঙ্গে নানা বিষয় নিয়ে মত বিনিময় করি। রসিকতা তার সিংহভাগ জুড়ে। তার মধ্যেই বেশ কিছুদিন ধরে আমার ফেসবুক পোস্টে এবং ইনবক্সে কিছু মানুষ আমায় বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে, তাদের ফেক প্রোফাইল দিয়ে। আমি নিশ্চিত, এরা মূলত জামাত ইসলাম শিবিরের লোক। যা বাংলাদেশে সরকারিভাবে অবৈধ এবং নিষিদ্ধ।

কিন্তু তার পরও তারা তাদের প্রোফাইল এবং ভাষা বদলে সারাক্ষণ নানা ভাবে দেশের রাজনীতিকে অন্য খাতে নিয়ে যাওয়ার অনবরত চেষ্টা করে চলেছে। ভারতবর্ষের প্রতি আমার সম্মান নিয়েও তাদের আপত্তি। শেষ কিছু দিন, আমার ফেসবুকে এদের সংখ্যা অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। আমি সশরীরে হয়তো কোনও দিনই রাজনীতি করব না। কিন্তু এটাও ঠিক, রাজনীতি করার জন্য কোনও মঞ্চ বা প্ল্যাটফর্ম দরকার পড়ে না বা তেমন কোনও জায়গায় দাঁড়িয়ে রাজনীতি করতে হবে তারও মানে নেই।

Advertisement

আমার মা, বাবা, ছোট কাকা মুক্তিযোদ্ধা। সেই পরিবারের সন্তান হিসেবে পাকিস্তান এবং পাক-পন্থীদের সঙ্গে তাই হৃদ্যতার কোনও প্রশ্নই নেই। অনেকেই হয়তো বলবেন, ক্ষমা মহৎ গুণ। আমি বলব, ১৯৭১-এ যে দেশের (পড়ুন পাকিস্তান) সেনাদের একটাই লক্ষ্য ছিল, বাংলাদেশকে পাকপন্থী তৈরি করা, তার জন্য আমাদের দেশের ৩০ লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রম নিতেও তাদের হাত থামেনি, আমি তাদের ক্ষমা করে মহৎ হতে চাই না। সে দেশ এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশের উন্নতিতে পদে পদে আটকায়। রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করে। তাদের ভালবাসা দেখানো আমার চোখে অপরাধ।

তবে বর্তমান বাংলাদেশের সমাজব্যবস্থা, ধর্মীয় অনুশাসন এবং রাজনৈতিক অবস্থানে এই প্রজন্ম বিভ্রান্ত হচ্ছে। বর্তমান প্রজন্মের কাছে দেশের সঠিক ইতিহাস পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই তাঁরা মুসলিম ধর্মের দোহাই দিয়ে পাকিস্তানকে প্রচ্ছন্ন ভাবে যেন সমর্থন জানাচ্ছেন। এটা আমার কাছে একেবারেই বাঞ্ছনীয় নয়। আমি যাঁদের রক্তে সৃষ্ট এবং যে ‘আগামী’ আমার রক্তে জন্ম নেবে সে অবশ্যই পাকিস্তানিদের ঘৃণা করবে। লাখো শহিদ এবং ৩০ লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে স্বাধীন বাংলাদেশের এই লাল-সবুজ পতাকা পেয়েছি আমরা। যারা বাংলা ভাষা চায়নি, যারা বাংলাদেশ চায়নি, সেই পাকিস্তানের প্রতি যাদের ভালবাসা তারা অবশ্যই ‘পাকিস্তানি উদ্বাস্তু’ হিসেবে বাংলাদেশে অবস্থান করছে।

এখন মনে হচ্ছে, পাকিস্তানের সেনারা আগামী প্রজন্ম তৈরি করবে বলেই পরিকল্পনা করে মা-বোনদের সম্মান নিয়ে টানাটানি করেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement