শেষযাত্রায় অভিনেতা মনোজ কুমার। ছবি: সংগৃহীত।
ভারতের জাতীয় পতাকায় মোড়া তাঁর শবদেহ, শববাহী গাড়ি সাজানো হয়েছে তিন রঙের ফুলের মালায়। শনিবার সকালে এ ভাবেই বিদায় নিলেন বলিউডের ‘ভারত কুমার’। দীর্ঘ রোগভোগের পর গত ৪ এপ্রিল ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ মুম্বইয়ের এক হাসপাতালে মৃত্যু হয় মনোজ কুমারের। সে দিনই তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় অভিনেতার বাসভবনে। শনিবার রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
এ দিন বেলা ১২টার কিছু আগে জুহুর পবনহংস শ্মশানে তাঁর দাহ সংস্কার করা হয়। শিল্পীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে তার আগেই সেখানে উপস্থিত হন বর্ষীয়ান অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন ও তাঁর পুত্র অভিষেক বচ্চন। একই ভাবে ছেলে আরবাজ় খানকে নিয়ে উপস্থিত হন সেলিম খানও। শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন মনোজের দীর্ঘ দিনের বন্ধু প্রেম চোপড়াও। এ দিন তিনি বলেন, “প্রথম থেকেই আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি। এক দারুণ সফর। ওঁর সঙ্গে কাজ করে সকলেরই কোনও না কোনও লাভ হয়েছে। আমারও হয়েছে। আমার সবচেয়ে ভাল বন্ধু ছিলেন।” প্রয়াত অভিনেতার স্ত্রী শশী গোস্বামী এবং পুত্র কুণাল গোস্বামীর সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা।
শুক্রবার সকালে ৮৭ বছরের অভিনেতা মুম্বইয়ের কোকিলাবেন হাসপাতালে প্রয়াত হন। জানা গিয়েছে, বার্ধক্যজনিত একাধিক শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন বর্ষীয়ান অভিনেতা। সিরোসিস অফ লিভার ছিল তাঁর, যা অভিনেতার স্বাস্থ্যের দ্রুত অবনতি ঘটিয়েছিল। ২১ ফেব্রুয়ারি তাঁকে মুম্বইয়ের কোকিলাবেন ধীরুভাই অম্বানী হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মনোজ কুমারের প্রয়াণে শোকবার্তা পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
১৯৩৭ সালে মনোজের জন্ম পঞ্জাবি ব্রাহ্মণ পরিবারে। পিতৃদত্ত নাম হরিকৃষ্ণ গোস্বামী হলেও ছবির জগতে সে যুগের ধারা মেনে তিনি নিজেকে মনোজ কুমার বলে পরিচয় দিতেন। ১৯৫৭ সালে বলিউডে তাঁর পদার্পণ। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ একের পর এক ছবিতে ছবিতে কাজ করে তিনি পেয়েছেন জনপ্রিয়তা। তাঁর ঠোঁটে ‘মেরি দেশ কি ধরতি’ আজও ভারতবাসীর রক্তে দোলা লাগায়।