(বাঁ দিক থেকে) অর্ণ মুখোপাধ্য়ায়, কমলেশ্বর মুখোপাধ্য়ায়, তৃণা সাহা, ঋতব্রত মুখোপাধ্য়ায়। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
রাফায় ইজ়রায়েলি হামলার বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় উঠেছে। সমাজমাধ্যমে বলিউডের বহু তারকাই এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। টলিপাড়ার তারকারা কী বলছেন, খোঁজ নিয়ে দেখল আনন্দবাজার অনলাইন।
পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় নিজের রাজনৈতিক মতামত স্পষ্ট করে বলেন। সমাজমাধ্যমেও তিনি সক্রিয়। রাফা সম্বন্ধে পরিচালক বলেন, ‘‘এ সমস্যা তো ১৯৪৮ থেকে চলে আসছে। তখন থেকেই প্যালেস্টাইনের জমির দাবি তোলা হয়েছিল। তখন থেকেই এই রাফা অঞ্চলটি ভাগ হয় গাজ়া ও রাফার মধ্যে। দিনের পর দিন এখানকার বাসিন্দাদের উপর অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে ইজ়রায়েল। আমেরিকার সহায়তায় এই অত্যাচার চালানো হচ্ছে। দু’দিন ধরে যা ঘটনা ঘটছে, তা নিন্দনীয় ও ঘৃণ্য। মানবাধিকার লঙ্ঘন একদম শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে। ১৩৫টি দেশ প্যালেস্টাইনকে দেশ হিসেবে মেনে নিচ্ছে। তাই অবিলম্বে বোমাবর্ষণ বন্ধ করা উচিত। রাফায় ইজ়রায়েলের এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে সবার প্রতিবাদ জানানো উচিত।’’
রাফার ঘটনায় স্তব্ধ অভিনেতা অর্ণ মুখোপাধ্যায়। তবে সমাজমাধ্যমে প্রতিবাদ জানানো খুব একটা কাজে দেয় বলে মনে করেন না তিনি। অর্ণ র কথায়, ‘‘আলাদা করে পোস্ট করায় আমি খুব একটা বিশ্বাস করি না। আসলে এই ঘটনাগুলোয় ভিতরটা পুড়ে যায়। পৃথিবী যে ভয়ঙ্কর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তা এই ঘটনাগুলি দেখেই বোঝা যায়। এ সব দেখে এক প্রকার অবশ হয়ে গিয়েছি। পোস্ট করেও কিছু যাবে-আসবে না। যারা এগুলো ঘটাচ্ছে, তারা ঘটাতেই থাকবে। আমাদের দেশ ও গোটা পৃথিবীই অন্ধকার সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটাই বোধ হয় সবচেয়ে অন্ধকার সময়। পোস্ট করাটাও যেন ভার্চুয়ালি উদ্যাপন করার মতোই লাগে।’’
‘অল আইজ় অন রাফা’- সমাজমাধ্যমে এই ছবির মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়েছেন অনেকেই ছবি-সংগৃহীত।
প্যালেস্জ়রায়েল বিষয়ে ভারতের ভূমিকা প্রসঙ্গে অভিনেতার মন্তব্য, ‘‘ভারতীয় রাজনীতি তো প্রহসনের জায়গায় চলে গিয়েছে। ভাবলেশহীন হয়ে দেখা ছাড়া উপায় নেই। সামনেই ছবি মুক্তি পাচ্ছে ঠিকই। কিন্তু আমরা এমন এক বুদবুদের মধ্যে আছি যে কোথাও কিছু বুঝে ওঠা যাচ্ছে না। নাটক বা ছবির মাধ্যমে কিছু বলার চেষ্টা করলে ১০ বছর আগেও মানুষ বুঝত। কিন্তু এখন আর সেটা হচ্ছে না।’’
অভিনেতা ঋতব্রত মুখোপাধ্যায় সমাজমাধ্যমে শেয়ার করেছিলেন ‘অল আইজ় অন রাফা’। তিনি বলেন, ‘‘আমরা বলি পৃথিবী কতটা এগিয়েছে। কিন্তু প্যালেস্টাইনের দিকে বা ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের দিকে তাকালে বুঝি, আমরা বিবর্তনের উল্টো দিকে এগোচ্ছি। রাফায় যা ঘটল তা বিশ্ববাসী হিসেবে আমাদের সকলের কাছে লজ্জার ও দুঃখের। এত মাইল দূরে বসে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে এ সব দেখে। সারা পৃথিবীর মানুষ বিশ্ববিদ্যালয়ে বা বিপ্লবের মাধ্যমে অথবা সমাজমাধ্যমে এই শিশুহত্যার নিন্দা করছে। মানবাধিকার থেকে মানুষকে যে ভাবে বঞ্চিত করা হচ্ছে, তা যে কোনও সংবেদনশীল মানুষ সমর্থন করে না।’’
ঋতব্রত এই প্রসঙ্গে যোগ করেন, ‘‘এই যুদ্ধ থামা দরকার অবিলম্বে। যুদ্ধের বিরোধিতা করা বা যে কোনও ধরনের প্রান্তিকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো পৃথিবীর নাগরিক হিসেবে আমাদের কাজ। জানি না, সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে কী হবে। কিন্তু লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রতিবাদ করছে, যাতে এই গণহত্যা বন্ধ হয়।’’
সমাজমাধ্যমে পোস্ট না করলেও ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন অভিনেত্রী তৃণা সাহা। অভিনেত্রী বললেন, ‘‘আমি পোস্ট করিনি। অনেকেই দেখেছি পোস্ট করেছেন। আমি বিশদে বিষয়টা নিয়ে দেখেছি। রাফায় যা হচ্ছে সত্যিই খুব দুঃখজনক। অবিলম্বে এই অবস্থা বন্ধ হওয়া দরকার।’’