জীবনের গতি ডানা মেলেছিল সুপারকারের ট্র্যাকে। অভাব এসে এক দিন সেই ডানা কেটে দিল। অর্থাভাবে জীবন মুখ থুবড়ে পড়ল। অস্ট্রেলিয়ার অতীতের সুপারকার ড্রাইভার রেনে গ্রেসি এখন পর্ন ফিল্মের তারকা।
রেনির জন্ম ১৯৯৫ সালের ৫ জানুয়ারি। গত ১৪ বছরের মধ্যে তিনি-ই হয়ে ওঠেন প্রথম পূর্ণ সময়ের মহিলা সুপারকার ড্রাইভার। ২০১৩ সালে তিনি প্রথম মহিলা প্রতিযোগী হিসেবে অংশ নেন পোর্শে ক্যারেরা কাপ অস্ট্রেলিয়া চ্যাম্পিয়নশিপে।
দু’বছর পরে রেনে সুপারকারস ডানলপ সিরিজে অংশ নেন। সেখানে তাঁর কাছে বশ মানে পল মরিস মোটরস্পোর্টসের মতো বাহন। সে বছরই সিমোনা দি সিলভেস্ট্রোর সঙ্গে জুটি বেঁধে অংশ নেন অস্ট্রেলিয়ার আইকনিক বাথার্স্ট ১০০০ সুপারকার রেসে।
১৯৯৮ সালের পরে রেনে-সিমোনা ছিলেন এই প্রতিযোগিতার এমন জুটি, যেখানে দু’জন সদস্যই মহিলা। তাঁদের আগে মেলিন্দা প্রাইস এবং কেরিন ব্রিউয়ার এই প্রতিযোগিতায় একাদশতম স্থানে শেষ করেছিলেন।
২০১২ থেকে ২০১৭ অবধি নিজের দেশ অস্ট্রেলিয়া ও বিদেশের মাটিতে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নেন রেনে। সুপার টু সিরিজ, সুপারকার সিরিজ, বাথার্স্ট ১০০০ সিরিজ-সহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় রেনে পাল্লা দিয়েছেন প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে।
কিন্তু সাধ আর সাধ্যের মেলবন্ধন সব সময় সম্ভব হয় না। রেনের জীবনেও সে রকমই হল। তিনি যা উপার্জন করতেন, তা দিয়ে রেসিং কার ড্রাইভার-এর পেশা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছিল না।
বাধ্য হয়ে স্বপ্ন ভুলে চালকের আসন থেকে উঠে গাড়ির পিছনে চলে গেলেন রেনি। কাজ নিলেন রেসিং কার রাখার জায়গায়। গাড়ি চালানোর বদলে তিনি তখন রেসিং কার-এর যত্ন আত্তি করতেন।
কিন্তু সেই পেশাতেও থাকতে পারলেন না। একে অর্থকষ্ট। তার উপর যে গাড়ি এক দিন নিজে চালাতেন, তার রক্ষণাবেক্ষণের কাজে মন টেকাতে পারলেন না।
বাধ্য হয়ে একটি পর্ন ওয়েবসাইটে নিজের ছবি দিলেন রেনি। তার পর দিলেন ভিডিয়ো। প্রথম সপ্তাহেই উপার্জন করলেন তিন হাজার ডলার।
এখন তাঁর ওয়েবসাইটের সাবস্ক্রাইবার সাত হাজারের বেশি। উপার্জন করেন সপ্তাহে পঁচিশ হাজার ডলার।
প্রথমে স্বপ্নভঙ্গের হতাশা থাকলেও এখন রেনি সে সব কাটিয়ে উঠেছেন। তাঁর কথায়, জীবনের সেরা পর্ব কাটাচ্ছেন তিনি। এক দিন যে অর্থ উপার্জনের স্বপ্ন দেখতেন, এখন সেটা তাঁর কাছে বাস্তব।
অর্থনৈতিক এই স্বাধীনতা তাঁকে ভুলিয়ে দিয়েছে বাকি হীনমন্যতা। আগামি দিনেও তিনি থাকতে চান পর্নতারকা হয়েই। জানিয়েছেন অতীতের রেসিং ট্র্যাকে আগুন ঝরানো সুন্দরী।
রেনির মনে পড়ে, নিজের স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখতে তিনি সব চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু বাঁচিয়ে রাখতে পারেননি। মৃত স্বপ্নকে ভুলে এখন তিনি বাঁচতে চান সচ্ছলতার বাস্তবকে নিয়েই।
মেয়ের পেশা নিয়ে সমস্যা নেই তাঁর বাবার-ও। রেনি জানিয়েছেন, তাঁর জন্য তাঁর বাবা গর্বিত। স্বপ্নের কফিনে শেষ পেরেক পড়ে যাওয়ার পরেও যে মেয়ে বাঁচার পথ খুঁজে পেয়েছেন, তাতে খুশি তিনি।