শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
ইদানীং চর্চায় শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। চর্চা তাঁর প্রেমজীবন নিয়ে! প্রযোজক-পরিচালক-অভিনেতার প্রেমে নাকি নতুন করে হাবুডুবু দুই প্রজন্মের নায়িকারা। তালিকায় গার্গী রায়চৌধুরী, কৌশানী মুখোপাধ্যায়, রুক্মিণী মৈত্র এবং আরও অনেকে। শিবপ্রসাদ নতুন এমন কী করলেন? উইন্ডোজ় প্রযোজনা সংস্থার পুজোর ছবি ‘বহুরূপী’র নায়ক ‘বিক্রম প্রামাণিক’-এর প্রথম লুক প্রকাশ্যে। এই চরিত্রে অভিনয় করেছেন শিবপ্রসাদ। এই চরিত্রের জন্য তিনি ১০ কেজি ওজন কমিয়েছেন। বড় চুল রেখেছেন। তার পর রূপটানের সাহায্যে কোঁকড়া করে নিয়েছেন তাকে। তাতেই নাকি নতুন করে নায়িকারা তাঁকে হৃদয় দিয়েছেন। বিষয়টি জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল তাঁর সঙ্গে। ছবির নায়কের দাবি, “পুরোটাই রূপটানশিল্পী পাপিয়া চন্দর কাজ। ওঁর মাথা থেকেই এই বিশেষ লুকের ভাবনা এসেছে।”
আনন্দবাজার অনলাইন কথা বলেছিল রূপটান শিল্পী পাপিয়ার সঙ্গেও। তিনি জানিয়েছেন, শিবপ্রসাদের এই বিশেষ লুকের জন্য তিনি অনেক খেটেছেন। প্রথম দু-তিনটে লুক পরিচালক নন্দিতা রায়কে দেখানোর পরে তিনি আরও একটু অন্য রকমের কিছু করে দেখানোর অনুরোধ জানান। তখনই তাঁর শেষ অস্ত্র, কোঁকড়া চুলের শিবপ্রসাদ। এই লুক দেখার পর দারুণ খুশি নন্দিতা। পিঠ চাপড়ে দেন রূপটানশিল্পীর। ঠিক হয়, শিবপ্রসাদ এই বিশেষ রূপ সারা ছবিতে বহন করবেন। পুরো রূপটান শেষ করতে দু’ঘণ্টারও বেশি সময় লাগত। শিল্পীর দাবি, পুরোটা সময় খুব শান্ত হয়ে বসে থাকতেন নায়ক। ভীষণ সহযোগিতা করেছেন। শুটিংয়ের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চুল যাতে ঠিক থাকে তার জন্য দ্বিতীয় বার দুপুরে খাওয়ার সময় ‘টাচ আপ’ করতে হত শিবপ্রসাদকে।
টং দিয়ে চুলের লুক বদলে ফেলার কেরামতি সাধারণত নায়িকারাই বেশি করে থাকেন। এক জন নায়ক সেই পথে হাঁটলেন। অভিজ্ঞতা কেমন?
জবাবে শিবপ্রসাদের বক্তব্য, “রূপটানের পর সেটের বাকি অভিনেতাদের অনেকেই চিনতে পারেননি। পাশা দিয়ে হেঁটে গিয়েছি। তাঁরা চিনতে না পেরে অন্যের কাছে গিয়ে আমার খোঁজ করেছেন! লুক সেটের পর পরিচালক নন্দিতা রায় প্রথম দেখেন। দেখে ওঁর মুখে চওড়া হাসি। পুরো রূপটান নেওয়ার পরে নিজেকে নিজেই চিনতে পারছিলাম না!” তিনি আরও জানিয়েছেন, যে সময়টাকে তাঁরা পর্দায় দেখাচ্ছেন সেই সময়টা গরমকাল। ফলে, তাঁদেরও গরমের মধ্যেই শুটিং করতে হয়েছে। তাই, প্রস্থেটিক রপটান নেওয়া সম্ভব হয়নি। পাপিয়া সেই সময় শিবপ্রসাদকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, “প্রস্থেটিক রূপটানের সাহায্য ছাড়াই নিজের চেহারা, চুল দিয়ে অনেক কিছু করা যায়। যেমন, লম্বা চুল রেখে তাঁকে কোঁকড়া করে নিলে মুখের চেহারা বদলে যায়।” কথাটা মনে ধরে অভিনেতার। তিনি সঙ্গে সঙ্গে সেই পথে হাঁটেন। এই রূপটানের জন্য ভোর চারটেয় শিবপ্রসাদের কলটাইম থাকত।
‘বহুরূপী’তে শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের লুক নিয়ে গার্গী রায়চৌধুরীর মন্তব্য। ছবি: ফেসবুক।
এই লুক নিয়ে সমাজমাধ্যমে শিবপ্রসাদের নায়িকা গার্গী লিখেছেন, “করেছ কী! লাল্টুবাবু? মিতালি যে পুরো বেসামাল!” পর্দার ‘বিক্রম’কে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তিনি। পিছিয়ে নেই তাঁর নায়কও। সরস জবাব, “লাল্টু শুধু তোমার।” কথা তুলতেই হাসতে হাসতে প্রযোজক-পরিচালক-অভিনেতা জানিয়েছেন, রুক্মিণীও ব্যক্তিগত ভাবে তাঁকে প্রশংসা করেছেন। ছবির জন্য আগাম শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। আপনার নায়িকা কৌশানী তো আপনাকে দেখে ১০ কেজি না হোক চার কেজি ওজন কমিয়ে ফেললেন! বলতে না বলতেই দরাজ হাসি। পুরোটাই যে শিবপ্রসাদ উপভোগ করছেন হাসিই তার এক মাত্র সাক্ষী।