প্রয়াত শিল্প নির্দেশক নিতিন দেশাই। ছবি: সংগৃহীত।
গত ২ অগস্ট মিলেছে বলিউডের নামজাদা শিল্প নির্দেশক নিতিন দেশাইয়ের মৃত্যুর খবর। গত বুধবার করজোটে তাঁরই তৈরি করা এনডি স্টুডিয়ো থেকে উদ্ধার করা হয় জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পীর ঝুলন্ত দেহ। প্রাথমিক ভাবে অনুমান করা হয়, আত্মহত্যার ফলেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। প্রয়াণের দিন কয়েকের মধ্যেই হাতে আসে প্রয়াত শিল্পীর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট। সেই রিপোর্টেও মৃত্যুর কারণ হিসাবে আত্মহত্যার তত্ত্বেই সিলমোহর দিয়েছেন তদন্তকারীরা। মাথার উপরে প্রায় ২৫২ কোটি টাকার দেনা ছিল প্রয়াত শিল্পীর। এমনকি, ধার শোধ করতে নিজের তৈরি এনডি স্টুডিয়ো বন্ধকও রাখতে হয়েছিল তাঁকে। আর্থিক অনটনের সঙ্গে আর যুঝতে না পেরেই নাকি আত্মহননের পথ বেছে নেন নিতিন, অনুমান তদন্তকারীদের। খবর, ধার শোধ করার জন্য ঋণদাতা সংস্থার তরফে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল নিতিনের উপরে। এ বার সেই ঋণদাতা সংস্থার আধিকারিক-সহ মোট পাঁচ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করলেন প্রয়াত শিল্পীর স্ত্রী। নিতিনকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে মহারাষ্ট্রের রায়গড় থানায় এফআইআর দায়ের করলেন নেহা দেশাই।
নেহার দাবি, ঋণ শোধ করার জন্য নাকি বার বার চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল নিতিনের উপরে। সেই মর্মেই ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৬ ও ৩৪ ধারায় এফআইআর দায়ের করেছেন ৫৭ বছর বয়সে প্রয়াত শিল্পীর স্ত্রী। ইতিমধ্যেই নিতিনের মৃত্যুর তদন্ত করতে তদন্তকারীদের হাতে এসেছে আরও কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। মৃত্যুর আগে নাকি কাউকে মোট ১১টি ভয়েস মেসেজ পাঠিয়েছিলেন প্রয়াত শিল্প নির্দেশক। যে ফোনের মাধ্যমে ওই ভয়েস নোটগুলি পাঠিয়েছিলেন নিতিন, সেই ফোন ইতিমধ্যেই তদন্তের জন্য ফরেন্সিকে পাঠানো হয়েছে।
গত কয়েক দশক ধরে নিজের হাতে ক্যামেরার নেপথ্যের জগৎ তৈরি করেছিলেন প্রয়াত নিতিন দেশাই। ‘১৯৪২ আ লভ স্টোরি’, ‘লগান’, ‘দেবদাস’, ‘জোধা আকবর’, ‘হম দিল দে চুকে সনম’-এর মতো ছবির সেট জীবন্ত হয়ে উঠেছিল তার হাতের ছোঁয়াতেই। অর্জন করেছিলেন জাতীয় পুরস্কারও। নিজে হাতে তৈরি করেছিলেন সাধের এনডি স্টুডিয়ো। সেই স্টুডিয়ো বাঁচাতে না পেরেই শেষমেশ আত্মহননের পথ বেছে নেন নিতিন দেশাই।