Entertainment News

ঘোষণা ছিল অনেক, কিন্তু হরর ফিল্ম হয়ে উঠতে পারল কোথায় ‘পরী’?

অভিনয়ে সকলেই নিজেদের ঢেলে দিয়েছেন। পরোপকারী, ভীরু শহুরে অর্ণবের চরিত্রে পরমব্রত যথাযথ। পর্দায় অনুষ্কার সঙ্গে তাঁর কেমিষ্ট্রিও চমৎকার। বলিউডি অভিষেকে ঋতাভরীও তাঁদের যোগ্য সঙ্গত করেছেন।

Advertisement

সুজিষ্ণু মাহাতো

শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৮ ১৭:০৮
Share:

‘পরী’র একটি দৃশ্যে অনুষ্কা শর্মা।

বিয়ের আসরের ‘পরী’কে মনে আছে? পর্দার ‘পরী’ ওরফে অনুষ্কা কিন্তু একেবারেই আলাদা।

Advertisement

আগের যে ছবিতে তাঁকে পর্দায় দেখা গিয়েছিল তাতে তিনি চঞ্চল, উচ্ছল। তাঁর অভিনীত চরিত্রের নামের মানেও ছিল তাই। সেজল।

‘যব হ্যারি মেট সেজলের’ পরে অনুষ্কা শর্মার বিয়ের সময়েও প্রচার জুড়ে তাঁর গ্ল্যামার। পর্দায় ফিরলেন অবশ্য সব গ্ল্যামার ঝেড়ে ফেলে। ছবির নাম ‘পরী’ হলে কী হবে, এই ছবি যে রূপকথা নয় তার ‘সতর্কবার্তা’ ছিল ট্রেলার-টিজারেই। নিজের প্রযোজনার ‘সুপারন্যাচরাল থ্রিলারে’ অনুষ্কার লুক ছিল আঁতকে ওঠার মতোই। নতুন ছবিতে নিজেকে ভেঙে দর্শককে চমকে দিতেই চেয়েছেন অনুষ্কা।

Advertisement

চমকে দেওয়ার নানা উপাদানও বলিউডে নিজের প্রথম ছবিতেই মজুত করেছেন বাঙালি পরিচালক প্রসিত রায়। আদতে কলকাতার ছেলে প্রসিত নিজের ছবিতে কলকাতা এনেছেন অন্য রূপে। সেই কলকাতার ছবি দমবন্ধ করা, বিষণ্ণ। এমন এক বিষণ্ণ, বর্ষার বিকেলের এক দুর্ঘটনা, মৃত্যু। তার জেরেই অর্ণবের (পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়) সঙ্গে রুখসানার (অনুষ্কা) পরিচয়। বদলে যাওয়া অর্ণবের ‘স্বাভাবিক’ জীবনের।

আরও পড়ুন, মুভি রিভিউ: ‘মুক্কাবাজ’ আবার দেখাল অনুরাগ কাশ্যপ কেন আলাদা

মৃত্যু দিয়ে গল্পের শুরু করে দর্শককে ভয় পাওয়াতে এসেছে অনেক কিছুই। প্রচুর রক্ত, হঠাৎ চিৎকার, নিষিদ্ধ তন্ত্রমন্ত্র। বলিউডে এ ধরনের হরর ছবি বলতেই যে ধারণা মনে আসে ‘পরী’ সেই ধারণাকে ভেঙে দিতে চায়। ভয়ের গল্প বলতে যে আবহ দরকার, সেই আবহ যথার্থ তৈরি হয় প্রথমার্ধে। অস্বস্তি, বিষণ্ণ রঙে ভরা ফ্রেমে দমবন্ধ হয়ে আসে দর্শকের। সেই পরিবেশ আনতে, ছবিকে টানটান রাখতে জিষ্ণু ভট্টাচার্যের ক্যামেরা পরিচালককে সাহায্য করেছে।


‘পরী’র দৃশ্যে অনুষ্কা এবং পরমব্রত।

সেই টানটান ভাব খানিক হারিয়ে যায় ছবির দ্বিতীয়ার্ধে। এমন ছবি খুব যুক্তিনির্ভর হবে সেই আশা দর্শক করবেন না, তবু তন্ত্রসাধক অধ্যাপক (রজত কপূরের) দলবলের কার্যকলাপ, ছোটবেলায় রুখসানার সঙ্গে তাদের মোলাকাতের খানিক বিশদ ব্যাখ্যা দরকার ছিল। খাপছাড়া চিত্রনাট্যের জন্য তাই দ্বিতীয়ার্ধে এলিয়ে পড়ে ছবির গতি। তাই বলিউডি হররের থেকে অন্য রকম হতে চাইলেও চিত্রনাট্যের জন্যই ফের সেই একই ফাঁদে পড়ে যায় ‘পরী’।

আরও পড়ুন, মুভি রিভিউ: ‘ভালবাসার বাড়ি’র ভাষা নিপাট, প্রেমও মিষ্টি

অভিনয়ে সকলেই নিজেদের ঢেলে দিয়েছেন। পরোপকারী, ভীরু শহুরে অর্ণবের চরিত্রে পরমব্রত যথাযথ। পর্দায় অনুষ্কার সঙ্গে তাঁর কেমিষ্ট্রিও চমৎকার। বলিউডি অভিষেকে ঋতাভরীও তাঁদের যোগ্য সঙ্গত করেছেন। রজত কপূর প্রত্যাশা মতোই অসাধারণ। তবে সবাইকে ছাপিয়ে গিয়েছেন অনুষ্কা। নিজের প্রযোজনার ছবিতে নিজেকে ভেঙেছেন, গড়েছেন ইচ্ছেমতো। এই ছবিতে তিনি কখনও ভীরু, সঙ্কুচিত, পেলব। কখনও আবার ভয়ঙ্কর হিংস্র। কিছু দৃশ্যে যে ভাবে মুহূর্তে এই দুই ভিন্ন আবেগ চেহারায় ফুটিয়েছেন অনুষ্কা, তা মনে রাখার মতো।

আরও পড়ুন, অনুষ্কার প্রিয় বাংলা শব্দ? ‘পরী’তে জেনে ফেলেছেন পরমব্রত

প্রাকৃত-অতিপ্রাকৃতে যাতায়াতের মধ্যেই ছবির গল্প অশুভকে হারিয়ে শুভের জয়গান গায়। একাধিক মৃত্যু, প্রচুর রক্ত থাকলেও পরি তাই জীবনের গল্প হয়ে উঠতে চায়। প্রথম ছবিতে গতানুগতিকতাকে ভাঙার চেষ্টাটুকুর জন্য ধন্যবাদ প্রাপ্য প্রসিতের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement