মহাব্রত
সিনেমা যদি জিতে যাওয়ার গল্পকে কখনও সত্যি করে তোলে? এ রকমই এক কাহিনি শোনাতে পারে সৌকর্য ঘোষালের নতুন বাংলা ছবি ‘রেনবো জেলি’। তবে ঘটনাটা সত্যি।
ছবিটা এক বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন শিশুকে নিয়ে। নাম ঘোঁতন। যে চরিত্রে অভিনয় করছে মহাব্রত বসু। ১২-১৩ বছরের মহাব্রতও স্পেশ্যাল চাইল্ড। পড়াশোনা কলকাতার এক স্পেশ্যাল স্কুলে। কিন্তু ছবির জন্য নিয়মিত ওয়র্কশপ এবং বিভিন্ন অনুশীলনের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনের ছন্দে ফিরতে পেরেছে সে। এখন আর স্পেশ্যাল স্কুলে যেতে হয় না তাকে। আর পাঁচ জন পড়ুয়ার মতোই শহরের এক বাংলা মাধ্যম স্কুলে পড়াশোনা করছে। ছবির পরিচালক সৌকর্যের কথায়, ‘‘ঘোঁতনের চরিত্রের সঙ্গে মানানসই কাউকে অনেক দিন ধরেই খুঁজছিলাম। মাঝে ‘রেনবো জেলি’র একটা গানের জন্য মৌসুমী ভৌমিকের সঙ্গে কথা বলি। উনিই আমাকে মহাব্রতর কথা বলেন।’’ এ ভাবে চরিত্রকে খুঁজে পাওয়ার পর শুরু হয় তাকে প্রস্তুত করার পালা। ‘‘মহাব্রত যে স্পেশ্যাল স্কুলে পড়ত, সেখানে মুখস্থ করার কোনও ব্যাপার ছিল না। এ দিকে গোটা চিত্রনাট্যে ওর অনেক সংলাপ। আমরা চিন্তিত হয়ে পড়লে, মহাব্রতর মা-ই একটা রাস্তা বার করেন। উনি গোটা স্ক্রিপ্ট ওর সামনে বার বার পড়তেন। এই করে অনেকটা সংলাপ মুখস্থ করে ফেলেছিল মহাব্রত। কিন্তু তার পরের হোঁচটটা ছিল ওর মনঃসংযোগ না করতে পারার সমস্যা,’’ বলছিলেন সৌকর্য।
স্পেশ্যাল স্কুলের এক জন শিক্ষকের সাহায্যে এবং কয়েকটি অনুশীলনের মাধ্যমে টানা তিন মাস ওয়র্কশপ করানো হয় মহাব্রতকে। ‘‘ওর মা-বাবা আমাদের হাতে ওকে পুরো ছেড়ে দিয়েছিলেন। চামচ-মার্বেলের এক্সারসাইজ, ক্যামেরার এক্সারসাইজ এ সব করতে করতে ওর মধ্যে দেখলাম কনসেনট্রেশন অনেক বেড়ে গিয়েছে,’’ ব্যাখ্যা করলেন পরিচালক।
তবে শুধু অনুশীলন আর অভিনয় চর্চাই নয়, সেটের সকলের সাহচর্যও সাহায্য করেছে মহাব্রতকে। সৌকর্যের কথায়, ‘‘ছবিটা ফুড ফ্যান্টাসি বলে সেটে নানা রকম খাওয়াদাওয়া হতো। আর ওকে সকলে প্যাম্পার করে এমন খাওয়াত যে, কয়েক দিনে দেখলাম ওর ওজন বেড়ে গিয়েছে! শেষে আমাকেই কড়া নিষেধ জারি করতে হল।’’ ছবিতে কাজ করছেন কৌশিক সেন, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়, শ্রীলেখা মিত্রও। ঘোঁতনের এই জিতে যাওয়ার কাহিনি পর্দায় দেখা যাবে ১ জুন।