Film Award Bangladesh Dhaka Ranjit Mallick Prosenjit Chatterjee Jeet

দুই বাংলার সেলুলয়েডের সেরা সম্মান সন্ধ্যায় সম্প্রীতির অনুরণন

রাজনৈতিক বিভাজন যে আলাদা করতে পারে না দুই দেশের আকাশ-মাটি-গান-ছবিকে, সেটাই প্রমাণ করল ভারত-বাংলাদেশ অ্যাওয়ার্ড।

Advertisement

স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়

ঢাকা শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৯ ১৬:৩৫
Share:

ভারত-বাংলাদেশ ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডসে নক্ষত্রের সমাগম।

ভাষা এক। তবু আমরা বিদেশি! বাংলাদেশের মাটি ছুঁলে আজও ভেতরটা খচখচ করে।
ভারত-বাংলাদেশ ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডস উপলক্ষে কলকাতার প্রায় একশো আশি জন মানুষ ঢাকায়। এ হেন চমকে দেওয়া আয়োজনের উদ্যোক্তা ফিল্ম ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া-র সভাপতি ফিরদৌসল হাসান। বাংলাদেশের বসুন্ধরা গোষ্ঠী আর টিএম ফিল্মসের ফারজানা মুন্নি।
এ এক এমন মিলনক্ষেত্র যেখানে সাত বার জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা ও পারের আলমগিরের সঙ্গে রাতের পার্টিতে আড্ডায় মেতে ওঠেন এ পারের রঞ্জিত মল্লিক। জয়া আহসানের বাড়ির দাওয়াতে মোরগ পোলাও খেয়ে মুগ্ধ অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী। তিনি হাজির ‘উড়নচণ্ডী’-র জন্য সাপোর্টিং অ্যাক্ট্রেসের পুরস্কার নিতে।
রাজনৈতিক বিভাজন যে আলাদা করতে পারে না দুই দেশের আকাশ-মাটি-গান-ছবিকে, সেটাই প্রমাণ করল ভারত-বাংলাদেশ অ্যাওয়ার্ড। ব্রাত্য বসু এবং হাসান মামুদ, দুই দেশের মাননীয় মন্ত্রীর উপস্থিতি সম্মানিত করল এই অনুষ্ঠানকে।

Advertisement

অ্যাওয়ার্ড হাতে আবির-পাওলি

‘চলচ্চিত্রে দুই দেশের সংযোগ বাড়ানোর পথ প্রশস্ত করার জন্য আমরা উন্মুখ। ভারত-বাংলাদেশ যৌথ প্রযোজনার ছবি যেন যৌথ প্রতারণা না হয়ে যায় সে দিকে নজরদারির সময় হয়ে এসেছে,’’ সতর্ক করলেন আলমগীর।

Advertisement

আরও পড়ুন: বাঙালদের মতো রান্না কেউ পারে না, ঢাকায় বললেন ঋতাভরী

মন্ত্রী ব্রাত্য বসু পুরস্কার অনুষ্ঠানের অন্যতম জুরি, প্রশ্ন তুললেন বসুন্ধরা কনভেনশনের মঞ্চ থেকে, ‘‘আগে সোশ্যাল মিডিয়া ছিল না। তখন আমরা জানতাম এখানকার ছবি কেমন হচ্ছে। ওখানকার নাটকে কে কী লিখছে? সাহিত্যে কী হচ্ছে? কিন্তু এই ভার্চুয়াল জগৎ তো আমাদের দূরে ঠেলে দিল। আমরা দু’দেশের কেউ কারও খবর রাখি না! মৌলবাদ থাকবে। ভার্চুয়াল জগৎও থাকবে। তবু তার মাঝে দুই বাংলার শিল্পীদের এক হয়ে কাজ করতে হবে। এই কারণেই এই উদ্যোগ।’’
বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী হাসান মামুদের বক্তব্যেও ছিল দুই বাংলার সম্প্রীতির অনুরণন। অনুষ্ঠানের আর এক জুরি পরিচালক গৌতম ঘোষের কথাতেও এল চলচ্চিত্রের গুরুত্ব। তিনি বললেন, ‘‘সিনেমা এক জন রোম্যান্টিক মানুষ। তার মধ্যে দিয়ে অনেক কথা ইচ্ছেমতো সময় ধরে বলা যায়। এই অনুষ্ঠান বাংলা সিনেমার উৎকর্ষ আর বিনোদনের মধ্যে ভারসাম্য তৈরি করবে।’’

জয়া আহসান ঝলমলে লাল শাড়িতে বাংলাদেশের সেরা ছবি আর অভিনেত্রী ‘দেবী’-র সম্মাননা গ্রহণ করলেন।

এই অনুষ্ঠান দুই বাংলার সব তারাকে হিজল আর সবুজ বটছায়ার গন্ধমাখা বাংলাদেশের মাটিতে এক করে দিল। ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত পিঠ খোলা ফিতে বাঁধা গাঢ় নীল ব্লাউজ আর ঘাগড়ায় বসলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের পাশে। শুধু সেরা জনপ্রিয় অভিনেত্রীর পুরস্কার নয়, মঞ্চে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে তাক লাগালেন তিনি। জয়া আহসান ঝলমলে লাল শাড়িতে বাংলাদেশের সেরা ছবি আর অভিনেত্রী ‘দেবী’-র সম্মাননা গ্রহণ করলেন। জামদানির আসরে বেনারসী পইঠাণির রাজকীয় মেজাজে পাওলি ছিলেন সেই দিনের সন্ধ্যাতারা। গৌতম ঘোষের ‘মনের মানুষ’-এ অভিনয় করা পাওলি ভারত থেকে শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় আর নন্দিতা রায়ের পরিচালনায় ‘কণ্ঠ’-র জন্য পেলেন সেরা অভিনেত্রীর সম্মান। জুরি অ্যাওয়ার্ড সম্মানে নায়ক হিসেবে হাত মেলালেন রুদ্রনীল ঘোষ আর আবীর চট্টোপাধ্যায়। একই পুরস্কার পেলেন দামিনী বেণী বসু ‘জ্যেষ্ঠপুত্র’ ছবির জন্য।

আরও পড়ুন: কৃত্রিম পায়েই পুনর্জন্ম, ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনাও বন্ধ করতে পারল না সরস্বতীর বরপুত্রী সুধার বিশ্বজয়

ও পারের পরিচালক নাসিরুদ্দিন ইউসুফ পেলেন সেরা পরিচালকের সম্মান। এ পার থেকে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। এ পারের সেরা জনপ্রিয় অভিনেতা জিতের সঙ্গে ও পারের সেরা জনপ্রিয় অভিনেতার সম্মানে কোথাও এক সূত্রে বাঁধা রইলেন শকিব খান।
অনুষ্ঠানের মাঝে বেজে উঠল দেবজ্যোতি মিশ্রের ভাবনায় সুরের মুর্চ্ছনা। শোনা গেল রূপম ইসলামকে। বিদ্যা সিংহ মিম আর ঋতাভরী চক্রবর্তীকে পৃথক ভাবে মঞ্চে পাওয়া গেল নৃত্যের ছন্দে। ‘ব্যোমকেশ গোত্র’ পেল সেরা সঙ্গীত পরিচালক (বিক্রম ঘোষ) আর সেরা সম্পাদকের সম্মান (সংলাপ ভৌমিক)। গার্গী রায় চৌধুরী আর মীরের সঞ্চালনায় এই দীর্ঘ অনুষ্ঠান দুই বাংলার স্বরকে গেঁথে দিল জোছনা রাত্রির মায়ায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement