শ্রীলেখা এবং স্বস্তিকা।
ফের বিতর্কের কেন্দ্রে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। যার মূলে আত্মহত্যা নিয়ে তাঁর একটি ‘মন্তব্য’। সুশান্ত সিংহ রাজপুত আত্মঘাতী হওয়ার পরে গোটা দেশে এই বিষয়ে বিতর্ক এখন তুঙ্গে। এই পরিপ্রেক্ষিতে স্বস্তিকার সেই ‘মন্তব্য’ কোনও কোনও সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ পাওয়ায় নিন্দার ঝড় উঠেছে নেটাগরিকদের মধ্যে। যদিও স্বস্তিকার দাবি সুশান্ত সিংহ রাজপুতের এই অপমৃত্যুকে কেন্দ্র করে তিনি এ ধরনের কোনও মন্তব্যই করেননি। এবং এরই পাশপাশি জড়িয়ে গিয়েছে শ্রীলেখা মিত্রের নামও। স্বস্তিকার কোন মন্তব্যকে ঘিরে এত বিতর্ক?
দিন দু’য়েক আগে সংবাদমাধ্যমের একাংশে স্বস্তিকাকে নিয়ে একটি খবর প্রকাশিত হয়। যার শিরোনামে লেখা, ‘সুইসাইড আজকাল একটা ফ্যাশন হয়ে গিয়েছে, কটাক্ষ স্বস্তিকার।’ ভাইরালের যুগে তা ছড়িয়ে পড়তে বেশি সময় লাগেনি। এর পরেই নিন্দার ঝড় ওঠে। যখন চারিদিকে মানসিক অবসাদ নিয়ে এত লেখালেখি, এত আলোচনা তখন এক জন পাবলিক ফিগার হয়ে এমনটা কী করে বলতে পারলেন তিনি? প্রশ্ন নেটাগরিকদের। শুধু নেটাগরিকরাই বা কেন, আর এক অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্রও এ রকমই এক লিঙ্ক শেয়ার করে স্বস্তিকাকে খানিক ঠুকেই বলেছেন, ‘বাহ’! শ্রীলেখার সেই শেয়ার করা লিঙ্কে জমা হচ্ছিল কমেন্টের পাহাড়। স্বস্তিকার নিন্দায় ভরে উঠছিল ফেসবুকের দেওয়াল। কেউ কেউ আবার মৃত্যুকামনাও করেছেন তাঁর।
কিন্তু আদপে কি কথাগুলি বলেছেন স্বস্তিকা? আত্মহত্যা নিয়ে করেছেন ‘কটাক্ষ’? ভিডিয়ো শেয়ার করে অভিনেত্রী বলছেন, ‘‘অনেকেই বলছেন আমি যাতে মরে যাই। যে পোর্টালটি আমার ছবি দিয়ে, আমার কোট হিসেবে একটি লাইন চালিয়ে দিয়েছেন তাঁরা কি প্রমাণ দেখাতে পারবেন, আমার সঙ্গে তাঁদের নিউজ পোর্টালের সুশান্তের মৃত্যু, আত্মহত্যা নিয়ে কোনওরকম কথা হয়েছে কিনা? দেখাতে পারবে কোনও হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট বা ফোন রেকর্ডিং? আমাকে ঘৃণা করার আগে খবরের সত্যতা বিচার করুন।’’
স্বস্তিকার ভিডিয়ো
লকডাউনের গোটা সময়টা মুম্বইতেই ছিলেন তিনি। শুক্রবারই বাড়ি ফিরে সদ্যপ্রয়াত বাবার জন্য মন খারাপ হচ্ছিল তাঁর। এরই মধ্যে এমন ‘ভুয়ো’ খবরের উৎপাতে বিধ্বস্ত তিনি। বললেন, ‘‘শুধু সুশান্তই নন, আশেপাশের যত মানুষ এই সময় মানসিক অবসাদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে চলেছেন তাঁদের কারও সম্পর্কেই এ রকম একটা জঘন্য মন্তব্য আমি করতে পারব না কোনওদিন। সবচেয়ে মজার কথা, আমি নিজেও জানিনা আমি এরকম একটা মন্তব্য করেছি! জীবনের ওঠাপড়ার মধ্যে দিয়ে আমিও গিয়েছি। মানসিক অবসাদ মারাত্মক। আমি নিজেও অনেক সুইসাইড প্রিভেনশন ক্যাম্পেনের সঙ্গে যুক্ত থেকেছি। অতএব, সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু পড়ার আগে একটু যাচাই করে নিন।’’
সুশান্তের মৃত্যুর পর থেকে মোটামুটি চুপই ছিলেন এই অভিনেত্রী। সুশান্তকে নিয়ে কোনও স্মৃতিকাতর অনুভূতির কথা লেখেননি তিনি। সুশান্তের সঙ্গে দু’টি ছবিতে কাজ করেছেন স্বস্তিকা। বরং সুশান্তের মরদেহের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যাওয়া নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন, উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে বলেছেন মুম্বই পুলিশকে। সম্প্রতি একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘‘আত্মহত্যা এক সামাজিক উৎসবে পরিণত হয়েছে।’’সুশান্তের মৃত্যু নিয়ে এত জল্পনা-কল্পনা, সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে ‘গোয়েন্দা’দের ভিড়— সে প্রসঙ্গেই হয়তো কথাগুলি বলেছিলেন সুশান্তের শেষ ছবি ‘দিল বেচারা’-র কো-স্টার স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়।.
শ্রীলেখার শেয়ার করা পোস্ট
কিন্তু শ্রীলেখা মিত্র কেন শেয়ার করলেন সেই পোস্ট যেখানে লেখা আছে, ‘সুইসাইড একটা ফ্যাশন হয়ে গিয়েছে, কটাক্ষ স্বস্তিকার। আনন্দবাজার ডিজিটালকে শ্রীলেখা বললেন, “আমাকে স্টোরিটা কেউ শেয়ার করে, তাই আমি পোস্ট করেছি।অনেক কথারই তো ভুল ব্যাখ্যা চলছে এখন। এই যেমন আমার আগের লাইভের ভিত্তিতে আমার নাম না করে স্বস্তিকা ‘স্লাট’ শব্দটা এনে টুইট করল কেন? আমি তো ইন্ডাস্ট্রির প্রেমের কথা বলেছিলাম। ও ‘স্লাট’ বলল কেন? প্রেম আর দেহ বেচা কি এক? আমি নিজে যা দেখেছি সেটাই সোজা বলব। যে যা ভাবে ভাবুক!”
তবে কি চলতেই থাকবে স্বস্তিকা-শ্রীলেখার তরজা?