১৯৯৮ সালে বলিউডে অভিষেক তাঁর। ফিল্মের নাম ‘ঢুন্দতে রহে জায়োগে’। বক্স অফিসে একেবারেই চলেনি সেই ছবি। তবে এরপরই একাধিক ছবির মাধ্যমে জনপ্রিয় হয়ে উঠলেন এই বলি নায়িকা।
এই নায়িকার প্রেমে নাকি পাগল ছিলেন এক বলিউড পরিচালক। অন্য নায়িকার সঙ্গে আলাপের পর সেই নায়িকাকে ছবি থেকেই বাদ দিয়ে দিলেন তিনি। কোন নায়িকার কথা বলা হচ্ছে বলুন তো?
পরিচালক রাম গোপাল বর্মার ব্লু-আইড গার্ল বলা হত তাঁকে। ঊর্মিলাকে ছেড়ে রাম মজেন তাঁকে দেখেই। যে ঊর্মিলা ছাড়া রাম ছবিই করতেন না, লিড রোলে সেই ঊর্মিলার বদলে ক্রমে নিতে থাকেন এই নায়িকাকে।
এক সময়ে রামগোপাল বর্মার প্রতিটা ছবিতেই তাঁকে দেখা যেত। অভিনয় এবং নাচ—দুটোতেই সমান পারদর্শী ছিলেন। বেশ কিছু হিট ছবিও দর্শকদের উপহার দিয়েছেন।
অথচ এখন বলিউড থেকে প্রায় মুছে গিয়েছে সেই অন্তরা মালির নাম। সোশ্যাল মিডিয়াতেও খুব একটা ধরা পড়েন না তিনি। সেই অন্তরা মালি এখন কী করছেন?
বলিউডের আগে তেলুগু ছবিতেও কাজ করেছেন তিনি, তবে সেখানে খুব একটা সাফল্য মেলেনি। অন্তরা মালি দর্শকদের নজরে আসেন ১৯৯৯ সালে ‘মস্ত’ ছবির হাত ধরে।
তারপর ২০০২ সালে ‘রোড’, ‘কোম্পানি’, ২০০৩ সালে ‘ডরনা মানা হ্যায়’, পরে ‘ম্যাঁয় মাধুরী দীক্ষিত বননা চাহতি হুঁ’ ছবিগুলোতেও তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়।
কোনওদিন অন্তরা জনপ্রিয়তার নিরিখে প্রথম সারিতে আসতে পারেননি। অভিনেত্রী হিসেবে পিছিয়ে পড়ে চেষ্টা করেছিলেন পরিচালনাতেও। ২০০৫ সালে তাঁর পরিচালনায় ‘মিস্টার ইয়া মিস’ মুক্তি পেয়েছিল ।
২০০২ থেকে ২০০৫, এই তিন-চার বছর কেরিয়ারের গ্রাফ বেশ উঁচুতেই ছিল তাঁর। অনেক ফিল্মের অফারও এসেছিল তাঁর কাছে।
তবে ২০০৫ সালের পর আচমকাই যেন বলিউড থেকে ‘গায়েব’ হয়ে যান তিনি। ‘মিস্টার ইয়া মিস’ চূড়ান্ত ব্যর্থ হওয়ার পর আর কোনও ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায়নি তাঁকে।
দেখা গেল পাঁচ বছর পর তাঁক কামব্যাক ফিল্ম ‘অ্যান্ড ওয়ান্স এগেন’-এ।
অমল পালেকর এই ফিল্মটির পরিচালনা করেছিলেন। ছবিতে একজন সন্ন্যাসিনীর ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল তাঁকে।
বলিউডে কামব্যাক করার আগে অবশ্য আরও একটা কারণে খবরে উঠে এসেছিলেন অন্তরা। সেটা ২০০৯ সালে।
২০০৯ সালে গোপনে বিয়ে করেন অন্তরা। বিয়ের সময় জানাজানি না হলেও, কয়েক দিন পরই তাঁর বিয়ের কথা জানাজানি হয়। তাঁর স্বামী চে কুরিয়েন এক আন্তর্জাতিক ম্যাগাজিনের সম্পাদক।
বিয়ের আগে অবশ্য কুরিয়েনের সঙ্গে অনেক হাই-প্রোফাইল পার্টিতে গিয়েছেন অন্তরা। কিন্তু তাঁরা যে বিয়ে করতে চলেছেন তা কখনও বুঝতে দেননি। সব সময় ক্যামেরা থেকে একটু দূরেই থাকতেন তাঁরা।
২০১০ সালে ফিল্ম দুনিয়ায় কামব্যাক করলেও, তার পর থেকে আর কোনও ফিল্মে তাঁকে দেখা যায়নি। কামব্যাক ফিল্মই ছিল তাঁর কেরিয়ারের শেষ ছবি।
অন্তরার বাবা ছিলেন বিখ্যাত আলোকচিত্রী জগদীশ মালি। ভারসোভায় ভবঘুরের দলে ঘুরে বেড়াচ্ছেন জগদীশ, পরনে প্রায় কোনও পোশাক নেই এমন অবস্থায় তাঁকে দেখা যাওয়ার পর সলমন খান এগিয়ে এসেছিলেন সাহায্য করতে।
অন্তরার সঙ্গে সলমনের বচসার সূত্রপাত তখনই। অভিযোগ, অন্তরা তাঁর বাবাকে দেখতেন না। অন্তরা যদিও অস্বীকার করেন অভিযোগ।
তিনি বলেন, তাঁর বাবা ডায়াবিটিসের রোগী। ইনসুলিন না নিযে অসংলগ্ন আচরণ করে ফেলেছিলেন। কারও সাহায্যের প্রয়োজন নেই। জগদীশ সংবাদমাধ্যমে বলেন তিনি অসুস্থ নন। পরবর্তীতে মারা গিয়েছেন জগদীশ।
পরিবার নিয়েই ব্যস্ত থাকেন অন্তরা। অন্তরা এবং চে-র একটি মেয়ে রয়েছে।
অন্তরা সন্তানের দেখভাল ও পড়াশোনা নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। এক সময়ের ডিভাকে দেখলে এখন আর চেনাই যাবে না।