৫০০-য় পা ‘বেদের মেয়ে জ্যোৎস্না’র, চকোলেট কেক কেটে সেলিব্রেশন

সকাল থেকেই তুমুল উত্তেজনা। টেকনিশিয়ান স্টুডিওর সেটে সাংবাদিকের ঢল। সবার মুখে মুখে ফিরছে, কনগ্র্যাচুলেশন অ্যান্ড সেলিব্রেশন। কেন? ৫০০ পর্ব ছুঁতে চলেছে সান বাংলার ‘বেদের মেয়ে জোৎস্না’।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৯:০৪
Share:

‘বেদের মেয়ে জ্যোৎস্না’ ধারাবাহিকে শ্রীমা এবং অর্কজ্যোতি।

সকাল থেকেই তুমুল উত্তেজনা। টেকনিশিয়ান স্টুডিওর সেটে সাংবাদিকের ঢল। সবার মুখে মুখে ফিরছে, কনগ্র্যাচুলেশন অ্যান্ড সেলিব্রেশন। কেন? ৫০০ পর্ব ছুঁতে চলেছে সান বাংলার ‘বেদের মেয়ে জোৎস্না’।

Advertisement

এত আনন্দ সবাই কীভাবে ভাগ করে নেবেন? আজ তার নির্দেশনায় বাড়তি ব্যস্ততা পরিচালক সুমন রায়ের। হাসি-ঠাট্টার মধ্যেই টুকরো স্মৃতির ঝাঁপি খোলা। ‘রোহিনী’ শ্রীমা ভট্টাচার্য, ‘অগ্নি’ অর্কজ্যোতি পালচৌধুরী, ‘কালনাগিনী’ চান্দ্রেয়ী ঘোষের মুখে চওড়া হাসি।

করোনা জিতিয়ে দিল জোৎস্নাকে

Advertisement

‘‘খুব টেনশনে ছিলাম অতিমারির সময়। দর্শকেরা মনে রাখবেন, না ভুলে যাবেন? সেই সময় রিপিট টেলিকাস্ট চলছিল আমাদের। ফি-দিন ফার্স্ট, ডাবিং মেগা ‘নন্দিনী’। আমাদের কী হবে? লকডাউন উঠতেই যেন ম্যাজিক দেখলাম! ‘নন্দিনী’কে হারিয়ে চ্যানেলের রেটিংয়ে আমরা প্রথম! মনে হল পরিশ্রম সার্থক। করোনা জিতিয়ে দিল জ্যোৎস্নাকে’’-- ৫০০ পর্বে পৌঁছে স্মৃতি রোমন্থন নায়িকার।

উদযাপনের দিনেও শুট বন্ধ নেই। আজ শ্রীমা উজ্জ্বল, গাঢ় গেরুয়া কমলা বাঁধনি টপ আর আগুনে লাল ঘাঘরা, ওড়নায়। সঙ্গে ম্যাচিং অক্সিডাইজড জুয়েলারি, কপালে উল্কি টিপ। ধন্যবাদ জানাতে ভুললেন না পুরনো ‘জোৎস্না’ টিম এবং দর্শকদের। যাঁদের জন্য এই গর্বের দিন দেখার সুযোগ ঘটল।

রোজ রকমারি সাজ। গল্পও কি ততটাই রঙিন? প্রজাপতির মতোই ছটফটিয়ে উঠলেন, ‘‘একদম। রাজকুমারী সেজে নিলাম এই সুযোগে। ভাল লাগে ভীষণ। চাপেরও। লিড রোল মানেই অনেকটা দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব সবাইকে সঙ্গে নিয়ে পালন করা বিশাল ব্যাপার। সেটা যে নতুন টিম পেরেছে, এটাই আনন্দের।’’ ‘বিএমজে’র জন্য নতুন কিছু না কিছু শিখতে হচ্ছেই। যেমন, তলোয়ার চালানো। ফলে, কাজেও উৎসাহ পাচ্ছেন বেশি। ‘‘ধারাবাহিকও রেটিংয়ে, দর্শকের ভালবাসায় ঝলমলিয়ে উঠছে তাই’’, মন্তব্য শ্রীমার।

কিছু মুহূর্ত

সেটে নাকি তিনিই সব থেকে দুষ্টু? সঙ্গে সঙ্গে স্বীকারোক্তি, "দুষ্টুমি না করলে বরং সবাই মাথা খারাপ করে দেয়, কী হয়েছে শ্রীমা-- জানতে চেয়ে’’। রাজকুমারীর মন ফেরাতে ‘অগ্নি’ নাকি চকোলেট হাতে ঘোরেন!

৫০০-র হার্ডল টপকে রিল্যাক্সড?

একটুও রিল্যাক্সড নন ‘অগ্নি’ ওরফে অর্কজ্যোতি পাল। বললেন, ‘‘এই প্রথম ক্রোমা শুটিং। শুরুতে বুঝতে অসুবিধে হচ্ছিল। তখন প্রায় হাতে ধরে কাজ শিখিয়েছেন শ্রীমা থেকে পরিচালক, ইউনিটের সবাই।’’ ওঁরা পাশে না থাকলে এভাবেও সফল হতে পারতেন না। ৫০০ এপিসোড ছুঁয়ে উপলব্ধি তাঁর।

মেগা সফল করতে তাই নতুন উদ্যমে গা ঘামাচ্ছেন, রোজই। আজকের দিনটা যদিও স্পেশাল, বললেন অর্ক। ‘‘আজ সবই হচ্ছে, তুলনায় হাল্কা চালে। হাসতে হাসতে শট দিচ্ছি। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হচ্ছি। মাঝে লাইভে আসব। তার পর চকোলেটে মোড়া সাদা ক্রিমে সাজানো কেক কাটব সবাই। কেকের উপরে ধারাবাহিকের সুন্দর ছবি। শ্রীমার সঙ্গে সেই ছবিতে আমিও আছি!’’

জয় কালনাগিনীর জয়...

ভুলেও এমন কথা উচ্চারণ করেননি চান্দ্রেয়ী ঘোষ। কিন্তু গলার স্বরে সেই আনন্দ ছিল ষোল আনা। ‘‘শুরুতে ঘুরে ফিরে আসতাম যেতাম। ক্যামিও রোল ছিল। ৩৭০ এপিসোডের পর ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে গেল ‘কালনাগিনী’! গুরুত্ব বেড়ে গেল চরিত্রের। এখন আমি প্রায়ই পর্দা জুড়ে। এটাই ৫০০ এপিসোডের উপহার!’’ জানালেন চান্দ্রেয়ী।

তিনিও আন্তরিক ভাবে মনে করলেন পুরনো টিমওয়ার্ক, কলাকুশলী, অভিনেতাদের। বললেন, একটা ধারাবাহিকে যদি ফ্যান্টাসি, জীবনযুদ্ধ আর গ্রাফিক্সের ত্রিবেণী সঙ্গম হয়, তা হলেই বোধ হয় ৫০০ পর্ব পেরোয় সেই মেগা।

১২ সেপ্টেম্বর দর্শকেরা থাকছেন তো?

অভিনেতা এসেছেন, অভিনেতা গিয়েছেন। পরতে পরতে গল্প খোলস ছেড়ে বদলেছে তার রূপ। একমাত্র তিনিই 'বেদের মেয়ে জোৎস্না'র বহমানতার সাক্ষী। পরিচালক সুমন রায়কে এ কথা বলতেই গলায় স্মৃতির ছায়া, ‘‘আমার ছেলেবেলার সুপারহিট ছবি 'বেদের মেয়ে জোসনা'। মা-বাবার সঙ্গে দু'বার দেখেছিলাম হলে গিয়ে। সেই একই নামের ধারাবাহিক যখন পরিচালনার সুযোগ এল মন খুশি।’’ আছে নাকি সিনেমার ছোঁয়া? ‘‘নেই’’ জবাব পরিচালকের। তাঁর কথায়, রাজকুমারীর বেদে সমাজে বেড়ে ওঠা, নিজের পরিচয় জানা, আবার রাজবাড়িতে ফেরা এবং নিরন্তর লড়াই করে চলা, এই হল ধারাবাহিকের পটভূমি। এখন জোৎস্নার মেয়ে রোহিনী কেন্দ্রীয় চরিত্র। মাকে ন্যায় পাইয়ে দিতে প্রাণপণ লড়ছে সেও।

এই সেই কেক

সব মেগাই লড়াইয়ের গল্প বলে। এই মেগায় বাড়তি কী? লড়াইয়ে জিতে ফেরার জেদ, কী করে জিতবে রোহিনী, কী হবে উত্তেজনা-- সব মিলিয়ে টানটান চিত্রনাট্য। যা বসিয়ে রাখে দর্শকদের, যুক্তি পরিচালকের। জানালেন, এই ধারাবাহিক দিয়েই গ্রাফিক্স মেগার হাতেখড়ি হয়েছে তাঁর।

কথা শেষে সুমন আবার ক্যামেরার পিছনে। চোখে ঝিলমিল করছে আরও ৫০০ পর্বের আগাম স্বপ্ন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement