‘সন্ধ্যাতারা’ সিরিয়ালের একটি দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত।
চারিদিক আলো দিয়ে সাজানো। কাঞ্জিলাল বাড়ির ছেলের বিয়ে বলে কথা। গ্রাম থেকে বৌ নিয়ে বাড়ি ফিরছে আকাশনীল। ছোট বোন তারাকে পছন্দ করলেও বিয়ে করতে হয়েছে দিদি সন্ধ্যাকে। বৌকে মন থেকে মেনে নিতে পারছে না আকাশ। নতুন বিয়ের পর থেকে টানাপড়েন চলেই যাচ্ছে। এই হল ‘সন্ধ্যাতারা’ সিরিয়ালের গল্প। বিয়ে হওয়ার পর দুই বোন সন্ধ্যা এবং তারার সমীকরণ কেমন হয়? তা জানতে উৎসুক দর্শকও। বৃষ্টির মধ্যেও অনেক সময় স্টুডিয়োর বাইরেই শুটিং করতে হচ্ছে সিরিয়ালের সদস্যদের। স্টুডিয়োর চার দেওয়ালের মধ্যে ‘ধানছড়া’ ফুটিয়ে তোলা যে বেশ মুশকিল। যদিও সন্ধ্যার বিদায় থেকে কাঞ্জিলাল বাড়িতে আসা সবটাই হচ্ছে বাইপাসের ধারের স্টুডিয়োয়। ক্যামেরার সামনে প্রত্যেকের সঙ্গে প্রত্যেক সমীকরণ এক রকমের হলেও ক্যামেরার নেপথ্যের গল্প কিন্তু একদমই অন্য রকম। সেই খোঁজ নিতেই ‘সন্ধ্যাতারা’র সেটে পৌঁছল আনন্দবাজার অনলাইন।
লাল বেনারসি, গয়না , একমাথা সিঁদুর নিয়ে চুপচাপ সেটের সোফাতে বসে রয়েছে সন্ধ্যা অর্থাৎ অন্বেষা হাজরা। সেটে ভর্তি লোক জন। এক দিকে বিয়ের সানাই বাজছে। আবার অন্য দিকে দেখা যাচ্ছে, গ্রাম থেকে বিদায়ও নিচ্ছে বাড়ির মেয়ে। শুটিং এ ভাবেই হয়। টেলিভিশনের পর্দায় যেমনটা দেখা যায়, শুটিং ফ্লোরের ছবিটা থাকে সম্পূর্ণ উল্টো। শট শেষ হতেই সেটেরই একটি সোফাতে চোখ বন্ধ করে বসল পর্দার সন্ধ্যা। আনন্দবাজার অনলাইনকে অন্বেষা বলেন, “আসলে সাত দিন ধরে বিয়ের দৃশ্য চলছে। গলায় ফুলের মালা, বেনারসি, এত গয়না— সব মিলিয়ে ক্লান্ত তো একটু লাগছে। এমনিতেও আমি শটের ফাঁকে এই ভাবেই একটু বিশ্রাম নিয়ে নিই।”
এক মাস হল শুরু হয়েছে এই সিরিয়াল। ১২ জুন থেকে সম্প্রচারিত হচ্ছে ‘সন্ধ্যাতারা’। তবে চার সপ্তাহে টিআরপি তালিকায় খুব একটা নজরে আসেনি সন্ধ্যা এবং তারার গল্পে। তবে টিআরপি নিয়ে মাথা ঘামাতে বিন্দুমাত্র রাজি নন অন্বেষা। তিনি বললেন, “আমি কোনও দিন টিআরপি নিয়ে ভাবিনি। এখনও ভাবছি না। ওই দিকটা বুঝে আমি কী করব বলুন তো? আমার হাতে রয়েছে অভিনয়। সেটাই মন দিয়ে করতে চাই। আমাদের অসাধারণ টিম। সৌরজিৎ (বন্দ্যোপাধ্যায়) আমার যে নায়ক সে ভাল কাজ করছে প্রথম কাজের নিরিখে।” তারার চরিত্রে অভিনয় করছেন অমৃতা দেবনাথ। তাঁকে আগে ‘মন ফাগুন’ সিরিয়ালে দেখেছিলেন দর্শক। এ দিন তাঁর শুটিং না থাকলেও ছোট বোন তারার প্রশংসায় পঞ্চমুখ দিদি সন্ধ্যা।
নায়ক সৌরজিৎও বহু দিন ধরেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন টলিপাড়ায় নিজের জমি শক্ত করার। পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর সহকারী হিসাবে কাজও করেছেন। শটের ফাঁকে আনন্দবাজার অনলাইনকে সৌরজিৎ বলেন, “কত অভিজ্ঞ মানুষদের সঙ্গে কাজ করছি এটাই আমার পাওয়া। অন্বেষাও আমার থেকে সিনিয়র এ ক্ষেত্রে। প্রচুর শিখছি। টিআরপির দিকে তাকাচ্ছি না। নিজেকে অনবরত ভাঙার চেষ্টা করছি।” অন্বেষা, সৌরজিৎ, অমৃতা ছাড়াও এই সিরিয়ালে অভিনয় করছেন মৌমিতা চক্রবর্তী, বিদিশা চৌধুরী-সহ আরও অনেকে। সৌরজিতের কথায়, আমরা এখানে কাজ যেমন করি, মজাও করি। বিদিশা বললেন, “আমাদের মেকআপ রুমের আড্ডা জমিয়ে রাখে মৌমিতাদি। একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া হই-হুল্লোড়। সপ্তাহে সাত দিন যে কাজ করছি, বোঝাই যায় না। এক দিকে মেয়ের বিদায়ের কান্নাকাটির দৃশ্যে অভিনয়ের পরেই হাসাহাসি, সেটা মৌমিতাদিই করতে পারে।”