Ushasie Chakraborty

বিবাহিত পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল, কিন্তু সময় থাকতে সরে এসেছি: ঊষসী

ধারাবাহিক ‘শ্রীময়ী’। অন্যতম প্রধান চরিত্র জুন। চরিত্রাভিনেতা ঊষসী চক্রবর্তী। সম্পর্ক, অভিনয় থেকে রাজনীতি, সব বিষয়ই ছুঁয়ে গেলেন তিনি।

Advertisement

মৌসুমী বিলকিস

শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৯ ১৬:৩৬
Share:

বছরখানেক বাদে ফের টেলিভিশনের পর্দায় ফিরলেন ঊষসী চক্রবর্তী।

ধারাবাহিক ‘শ্রীময়ী’। অন্যতম প্রধান চরিত্র জুন। চরিত্রাভিনেতা ঊষসী চক্রবর্তী। সম্পর্ক, অভিনয় থেকে রাজনীতি, সব বিষয়ই ছুঁয়ে গেলেন তিনি।

Advertisement

জুন চরিত্রটা করতে কেমন লাগছে?

ভালই লাগছে। এই ধারাবাহিকে যে ছেলে লিড, সুদীপদা (মুখোপাধ্যায়), মামণিদির (ইন্দ্রাণী হালদার) বর, তার সঙ্গে আমার, মানে জুনের এক্সট্রা ম্যারিটাল অ্যাফেয়ার্স দেখানো হচ্ছে। কিন্তু জুন যে ভিলেন তা নয়। সে ইন্ডিপেন্ডেন্ট, অ্যাকমপ্লিশ এক মহিলা। সত্যি কথা বলতে কি... দ্য ক্যারেক্টার ইজ ভেরি রিয়েল। চারপাশে এ রকম ঘটনা তো ঘটেই। তাই না? জুনের ইমোশন টুয়ার্ডস আ ম্যান... আমি খুব জেনুইন মনে করি এবং ফিল করতে পারি অ্যাজ অ্যান আর্টিস্ট। সে জন্যই ভাল লাগছে।

Advertisement

এ রকম সম্পর্কে বাস্তবে জড়াবেন?

বাস্তবে জড়াবো না। তার কারণ আমি ব্যক্তিগত ভাবে... নতুন লোকের সঙ্গে সম্পর্ক হলে... মানে কী বলব... খুব ইমোশনালি ইনভলভ হয়ে পড়ি। কিন্তু এ রকম ‘সেকেন্ড ওম্যান’ স্টেটাস হলে ভাল লাগবে না। কিন্তু এটাও ঠিক যে অনেকে এ রকম সম্পর্কে জড়ায় এবং খুব সিরিয়াসলি, ইমোশনালি, মোর দ্যান দ্য ম্যারেজ ইন ফ্যাক্ট। অনেক দিন আগে... মানে... অনেক দিন আগে আই হ্যাড আ অ্যাফিনিটি টু আ ম্যারেড গাই। বাট হি ডিড নট স্টেপ আপ টু আ রিলেশনশিপ। সময় থাকতে থাকতে আমি সরেই এসেছি। ওই আর কি... আমি ঠিক এটা হ্যান্ডল করতে পারি না। তবে পুরনো সম্পর্কের অভিঘাত আমার চরিত্রটাতে খুঁজে পাচ্ছি। ফলে চরিত্রটা ফিল করতে পারছি। কিন্তু আমি জাজমেন্টাল নই। এ ধরনের অ্যাটাচমেন্টকে ‘ভাল’ বা ‘খারাপ’ কিছুই বলছি না।

এই মুহূর্তে আপনি কারও সঙ্গে ইমোশনালি অ্যাটাচড?

ডেফিনিটলি। তবে ম্যারেড কেউ নয়।

ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা ঊষসী

শ্রীময়ীর সঙ্গে কাজ করতে কেমন লাগছে?

মামণিদির আমি ফ্যান। শুধু ‘শ্রীময়ী’ বলে নয়, অ্যাক্টর হিসেবে মামণিদিকে প্রচণ্ড পছন্দ করি। ওনাকে আমার ভীষণ জেনুইন মনে হয় অ্যাজ অ্যান অ্যাক্টর, অ্যাজ আ পারফর্মার। তো আমি খুব অনার্ড যে মামণিদির সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করছি।

অনেক দিন আপনাকে টেলিভিশনে দেখা যায়নি।

মাঝে বছরখানেকের ব্রেক নিয়েছিলাম। বিকজ আই ওয়াজ ডুয়িং মাই পিএইচডি ফ্রম যাদবপুর ইউনিভার্সিটি। আই অ্যাম স্টিল ডুয়িং ইট, বাট প্রায় শেষের দিকে। বছরখানেক ফিল্ড ওয়ার্কে ব্যস্ত ছিলাম। তখন টানা অভিনয় করা সম্ভব ছিল না। তবে বিজ্ঞাপন বা ছবির কাজ করেছি। মাঝে টেলিভিশনে কাজ করার অফার পেয়েছি। কিন্তু ভেবেছিলাম যদি টেলিভিশনে কাজ করতে হয় তো আই ওয়াজ সিন টু ওয়ার্ক উইথ লীনাদি (গঙ্গোপাধ্যায়) অনলি। বিকজ লীনাদির সঙ্গে আমার জীবনের প্রথম সিরিয়াল শুট করি, ‘সোনার হরিণ’। সেখানে একটা কমেডি ভিলেনের চরিত্র করতাম। ক্লাস ফোর পাশ, বস্তিতে থাকে, এ রকম এক জন দুষ্টু বাড়ির বউ, মজাদারও। ইট ওয়াজ আ সুপার হিট। করেও খুব ভাল লেগেছিল। আমার মনে হয়েছিল, লীনাদি আমার চরিত্রের প্রতি জাস্টিস করতে পারবেন। মানে তাঁর লেখাতেই কাজ করতে চাইছিলাম টেলিভিশনে।

রিসার্চের বিষয় কী?

‘পিতৃতন্ত্র এবং রাজনীতি’।

এ রকম একটা বিষয় বাছলেন কেন?

কেন বেছে নিলাম (একটু ভেবে)... মনে হয়েছিল যে সব কিছুর মতোই রাজনীতিও প্যাট্রিয়ার্কি অপারেট করে... মহিলা, যাঁরা পলিটিক্স করেন তাঁদের এই বিষয়টা কী রকম ভাবে এফেক্ট করে, সেটার ওপর আমার একটা ইন্টারেস্ট ছিল। যেহেতু আমার মা-ও পলিটিক্স করতেন। সেটা একটা ইনফ্লুয়েন্স বলতে পারেন এই টপিক বাছার ক্ষেত্রে।

কোন টাইম পিরিয়ড ধরছেন?

মূলত ফোকাসিং ফর্টি/ফিফটিজ টু সেভেন্টিজ। কনটেম্পোরারি নয়।

রাজনীতিতে পুরুষতন্ত্র নিয়ে গবেষণারত ঊষসী

এই সময়েও কিন্তু মিমি, নুসরত এবং প্রিয়াঙ্কা গাঁধীকে পোশাকের জন্য আক্রমণ করা হয়েছে!

এটা তো শুধু পলিটিক্সের ক্ষেত্রে নয়, সমাজের সর্বস্তরেই মেয়েদের পোশাক একটা বোন অব কন্টেনশন। অথচ ছেলেরা কী পরল না পরল, সেটা কখনওই কেউ জাজ করে না। কিন্তু মেয়েদের সব সময় পোশাকের নিরিখে জাজ করা হয়। এটা, মানে কী বলব... খুবই সাঙ্ঘাতিক একটা ব্যাপার। অনেক সময় রেপ ভিক্টিমের পোশাক প্রধান বিষয় হয়ে ওঠে, অ্যাজ ইফ পোশাকের জন্য রেপ হওয়াটা জাস্টিফায়েড। খুবই ভয়ঙ্কর প্রবণতা। সবাই চায় যে মেয়েরা কন্ট্রোলে থাকবে, অন্যের ইচ্ছে অনুযায়ী পোশাক পরবে। নিজের ইচ্ছেয় মেয়েরা কিছু করবে, এটায় সবার খুব আপত্তি।

পিতৃতন্ত্রের আর কী কী দিক উন্মোচন করছে আপনার রিসার্চ?

পলিটিক্স এক দিক থেকে মেয়েদের লিবারেটও করেছে... মানে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে কাজ করছে... আমার মনে হয়েছে একটা কন্ট্রাডিকশন আছে। ওই সময়ে দাঁড়িয়ে পলিটিক্স করা মেয়েরা স্টিরিওটাইপ থেকে বেরিয়ে আসছে। পাবলিক লাইফ লিড করছে, মঞ্চে বক্তৃতা দিচ্ছে, পারিবারিক গণ্ডির বাইরে বেরিয়ে আসছে। এগুলোর মধ্য দিয়ে একটা লিবারেশন হচ্ছে। কিন্তু অন্য দিকে আবার পলিটিক্যাল পার্টিগুলো তাদের মেয়েদের কোথাও একটা দমিয়ে রাখারও চেষ্টা করছে বা কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছে। তার মানে পার্টির মধ্যে মেয়েরা প্যাট্রিয়ার্কি ফেস করছে। এই কন্ট্রাডিকশনটা ধরার চেষ্টা করেছি।

সমসময়কে ধরার ইচ্ছে আছে?

হ্যাঁ, সেটা করা যেতেই পারে। দেখা যেতে পারে বিষয়টা কতটা পাল্টালো। খুব বেশি যে পাল্টায়নি সেটা তো মিমি-নুসরতের ট্রোলড হওয়া থেকেই বোঝা যাচ্ছে। তাই না? রাজনৈতিক ভাবে কাউকে অপছন্দ হতেই পারে, কিন্তু কে কী পোশাক পরে পার্লামেন্টে যাবে সেটা নিয়ে কথা বলার কোনও এক্তিয়ারই নেই আমাদের। মানুষের এক্তিয়ারের জায়গাটাই আসলে গুলিয়ে যাচ্ছে।

পলিটিক্যাল স্ট্যান্ডের পিছনে বাবা-মায়ের ভূমিকা?

আমার পলিটিক্যাল স্ট্যান্ডের জায়গায় বাবা-মা কারওরই কোনও ভূমিকা নেই। এটা ইন্ডিপেন্ডেন্ট। কিন্তু আই ডু নট পার্টিসিপেট ইন অ্যাক্টিভ পলিটিক্স টিল নাও। এটা আমি জোর গলাতেই বলতে পারি। এখনও অবধি অ্যাক্টিভ পলিটিক্স করার ইচ্ছে নেই। যদি থাকত তা হলে অনেক আগেই করতে পারতাম, বেস্ট অব দ্য টাইমেই করতে পারতাম।

সুদীপ মুখোপাধ্যায়ের বিপরীতে অভিনয় করছেন 'শ্রীময়ী' ধারাবাহিকে।

এখন কি ওরস অব দ্য টাইম?

আমি বলতে চাইছি এখন রাজনীতি করাটা ডিফিকাল্ট। তার মানে পলিটিক্সে আসার সম্ভাবনা নাকচ করে দিচ্ছি তা নয়। কিন্তু আই ডু নট থিঙ্ক অ্যাবাউট পলিটিক্স অ্যাজ আ প্রফেশন অর অ্যাজ আ ক্যারিয়ার। রাজনৈতিক মতামত নিশ্চয় আছে। কিন্তু সেটা খুব ব্যক্তিগত স্তরে। এখনও পর্যন্ত নিজেকে রাজনীতি করার যোগ্য বলে মনে করি না। যদি কখনও যোগ্য মনে করি নিশ্চয় করব, ফুল ফ্লেজেডই করব।

অভিনেতা হিসেবে নিজের কোন চরিত্র পছন্দ? ভবিষ্যতে আর কী চরিত্র করতে চান?

সত্যবতী আমার ফেভারিট ক্যারেক্টার। আর... ডিটেকটিভের চরিত্র করতে চাই, দ্যাট ইজ মাই ড্রিম রোল। ডিটেকটিভের বউ তো করেছি, বাট আই ওয়ান্ট টু বি আ ডিটেকটিভ। আই হ্যাভ দ্য লুক অ্যান্ড ফিটনেস। আমি তো ফিটনেস ফ্রিক। কেপেবল বলে একটা... কাইন্ড অব ওয়েট লিফটিং করি। সেটাতে আমি ইন্টার ক্যালকাটা প্রাইজও পেয়েছি। তো হাই ফিটনেস আছে, আমার ধারণা আমার ইন্টেলিজেন্ট ফেসও আছে। স্কুলে পড়ার সময় সিরিয়াসলি গোয়েন্দা হতে চেয়েছিলাম। রাইফেল শুটিং-এ ভর্তি হয়েছিলাম, হর্স রাইডিং শিখেছিলাম। কিন্তু পরীক্ষা চলে আসাতে বাড়ির লোকেরা বকাবকি করল। গোয়েন্দা হওয়া আর হল না। কিন্তু ইচ্ছেটা ভেতর ভেতর থেকে গেছে (হাসি)।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement