সুদীপ্তা চক্রবর্তী
প্র: ঘরের লোকের ছবি বলে কি একটু বেশিই প্রচার করছেন?
উ: আমি কিন্তু আমার সব ছবিরই প্রচার করি (হাসি)। ‘উড়নচণ্ডী’র পাশাপাশি ‘পিউপা’রও করেছি। এমনকী, ‘শব্দ কল্প দ্রুম’ অনেক দিন আগে শুট হলেও প্রচার করেছি। বাকিরা কিন্তু অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল। তবে ‘উড়নচণ্ডী’ অভিষেকের প্রথম ছবি, রাজনন্দিনী-অমর্ত্যর প্রথম ছবি। আর চিত্রাপিসি সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর ছবির প্রচার করবেন, এটা ভাবা যায় না! তাই বুম্বাদা বলেছিল, ‘তুই এই ছবির ফেস। আমি যে ভাবে ছবির প্রচার করি, তুইও এ বার সেটা কর।’ মলাট চরিত্রে কাজের সুযোগ সে ভাবে তো পাই না। পেলে তো সদ্ব্যবহার করবই (হাসি)।
প্র: আপনাকে ভেবেই কি বিন্দির চরিত্র লেখা?
উ: অভিষেকের মনে প্রথম থেকেই আমি ছিলাম কি না, জানি না। তবে আমাকে কাস্ট করা নিয়ে ওর মধ্যে একটু দোটানা ছিল। লোকে বলবে, প্রথম ছবিতেই বউকে নিল! আমারও সেটা নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল। তবে বুম্বাদা বলল, ‘কে কী বলবে, ভাবিস না। ছবিটা থেকে যাবে।’ তবে সুদীপ (দাস) যে ভাবে চিত্রনাট্য লিখেছিল, তাতে প্রথম থেকেই মনে হচ্ছিল, আমাকে ভেবেই লিখেছে।
প্র: আরবান চরিত্রেও ইদানীং আপনাকে ভাবা হচ্ছে...
উ: হ্যাঁ, কয়েক বছর আগেও আমাকে নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট হতো না। কিন্তু এখন হচ্ছে। ‘পিউপা’য় বড়লোক বাড়ির শিক্ষিত মেয়ে, ডাক্তারের বৌ। আবার ‘ময়ূরাক্ষী’তে অ্যাটেনডেন্ট হলেও সে কিন্তু ই-মেল করতে পারে। অতনু ঘোষের ‘৭২ ঘণ্টা’য় কর্পোরেট জগতের একটা চরিত্র করছি। দেবারতি গুপ্তের ‘অনেক দিনের পরে’তেও আমার একেবারে অন্য লুক। কোঁকড়ানো চুল, চিবিয়ে চিবিয়ে ইংরেজি বলে।
আরও পড়ুন: রামায়ণের সেই সীতাকে এখন কেমন দেখতে জানেন?
প্র: কিন্তু ‘বাড়িওয়ালি’, ‘বুনো হাঁস’-এর মতো চরিত্রেই আপনাকে এক সময়ে দেখা যেত...
উ: আমার মনে হয়, তার কারণ গ্রাম্য মহিলার চরিত্রে কাস্ট করতে গেলে অপশন অনেক কমে যায়। তাই একজন-দু’জনের মধ্যেই ঘোরাফেরা করে।
প্র: এই যে আপনাকে এখন অন্য ধরনের চরিত্রে কাস্ট করা হচ্ছে, তার জন্য নিজেকে বদলেছেন?
উ: আসলে বাংলা ছবির ধরনও বদলেছে। ঋত্বিক চক্রবর্তী বা ঋদ্ধি সেনকে হিরো ভেবে কি দশ বছর আগে ছবি হতো? হতো না। তাই আমাকে নিয়ে ভাবনাচিন্তা থাকলেও কারও ঝুঁকি নেওয়ার সাহস ছিল না। ভারতীয় ছবিতে নায়িকা বলতে যে ইমেজ মাথায় আসে, তেমন পটলচেরা চোখ, সরু কোমর তো আমার নেই (হাসি)।
প্র: অরিন্দম শীল বলেছেন, আপনার প্রতি উনি এখন বায়াসড...
উ: উনি আমাকে লেখাটাও দেখিয়েছিলেন (হাসি)। আসলে সহ-অভিনেত্রী হিসেবে অনেক বছর কাজ করেছি। এখন উনি পরিচালক। মনে আছে, ‘ধনঞ্জয়’-এর জন্য ফোনে দু’লাইনের ব্রিফ ছিল। অবাঙালি চরিত্র, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর আমাকেই করতে হবে।
প্র: ‘ভূমিকন্যা’র দৌলতে অনেক বছর পরে টেলিভিশনে ফিরলেন...
উ: টিভির কাজ শুনেই প্রথমে পালাচ্ছিলাম (হাসি)। আসলে মেয়ে হওয়ার পর থেকেই আমার কাছে টিভির অনেক প্রস্তাব আসছে। কিন্তু তার জন্য যে সময়টা দিতে হবে, সেটা আমার পক্ষে এখন দেওয়া সম্ভব নয়। মেয়ের বড় হওয়ার মুহূর্তে পাশে থাকতে চাই। ‘ভূমিকন্যা’ নির্দিষ্ট সংখ্যক এপিসোডের বলেই করেছি।
প্র: অভিষেক আর আপনি চারিত্রিক দিক থেকে বিপরীতধর্মী?
উ: চার বছরের সম্পর্ক আমাদের। বিয়েও চার বছর। অভিষেককে পুরোপুরি চিনে ফেলেছি, সেটা বলব না। তবে হ্যাঁ, অনেকটাই আলাদা (হাসি)। আমি অনেক বেশি আউটস্পোকেন। আর ও তো বিয়ের আগে আমাকে চিনতই না। আমাদের বিয়ের সময়ে ওর এক ভাইঝি বলেছিল, ‘খাস খবর’-এর সময় থেকে সে আমার ফ্যান! অভিষেক খবর পড়ার বিষয়টা জানত না। বলেছিল, খবর পড়ে না। অভিনয় করে (হাসি)।
প্র: বিদীপ্তা চক্রবর্তীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছে?
উ: কোনও প্রশ্নই নেই। দিদি আমার জায়গা নিতে পারবে না। আমিও দিদির জায়গা নিতে পারব না। বরং কোনও ইভেন্টে যেতে না পারলে আমি দিদির নাম বলি। ও আমারটা।
প্র: কাজ নিয়ে আলোচনা করেন?
উ: ও যখন সিদ্ধান্ত নিতে পারে না, আমাকে ফোন করে। সিনেমার ব্যাপারে বেশি জিজ্ঞেস করে। টিভিটা ও নিজেই নেয়। পরস্পরের ছবি দেখার সুযোগ না পেলে একে অন্যকে গালিও দিই (হাসি)।
প্র: বোনঝিরাও এখন লাইমলাইটে। পরামর্শ নেয়?
উ: না, সব তৈরি হয়েই এসেছে। একেবারে প্রো (হাসি)। বড়জন (মেঘলা) তো বাবাকে অ্যাসিস্ট করছে। ছবির গান হোয়াটসঅ্যাপে পাঠায়। আর ইদা পারলে আমাকেই শিখিয়ে দেবে (হাসি)! আমার শুটে গিয়ে মেকআপ ভ্যান দেখে বলেছিল, ‘তোমারটা এ রকম, আমারটা অন্য রকম ছিল।’ (হাসি)
প্র: রাজেশ শর্মার সঙ্গে যোগাযোগ আছে?
উ: একেবারে নয় (মাথা নাড়িয়ে)।
প্র: কাজের প্রস্তাব এলে করবেন?
উ: ‘ষড়রিপু’ করেছি তো।