‘এক্কা দোক্কা’র শুটিংয়ের মাঝে আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে আড্ডায় প্রতীক সেন। ছবি: সংগৃহীত।
বড় পর্দায় অভিনয়ের মাধ্যমে টলিউডে তাঁর যাত্রা শুরু। তবে সিরিয়ালে অভিনয়ের মাধ্যমেই সাফল্যের স্বাদ পেয়েছেন তিনি। প্রতীক সেন। এই মুহূর্তে যাঁকে দর্শক চেনেন ডক্টর অনির্বাণ গুহ হিসাবে। ৬ মে অভিনেতার জন্মদিন। এই বিশেষ দিনটা কী ভাবে কাটাবেন তিনি? ‘এক্কা দোক্কা’র শুটিংয়ের মাঝে আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে আড্ডা জমল প্রতীকের।
প্রশ্ন: শুভ জন্মদিন,কী ভাবে কাটাবেন দিনটা?
প্রতীক: ধন্যবাদ। জন্মদিনে আমার কখনও কোনও প্ল্যান থাকে না। আমি এমন কিছু করে ফেলিনি যে জন্মদিন পালন করব। কাছের মানুষেরা খুব রাগ করে। তবে কেউ যদি জন্মদিন উপলক্ষে খেতে চায়, অবশ্যই খাওয়াই। খাওয়াতে আমি খুব ভালবাসি।
প্রশ্ন: আপনার অভিনয় জীবনের কত বছর হল?
প্রতীক: প্রায় ১৫ বছর হয়ে গেল এই ইন্ডাস্ট্রিতে। বেশ অনেকগুলো বছর হয়ে গেল, ভাবতে পারছি না।
ছবি: সংগৃহীত।
প্রশ্ন: যে লক্ষ্য নিয়ে কেরিয়ার শুরু করেছিলেন, সেই লক্ষ্যে কি পৌঁছতে পারলেন?
প্রতীক: কিছুটা হয়তো পেরেছি। তবে তেমন কোনও তৈরি করা লক্ষ্য নিয়ে কেরিয়ার শুরু করিনি। মানুষের যে নিঃস্বার্থ ভালবাসা পাচ্ছি, এতটা আমি সত্যিই আশা করিনি। তবে এখনও অনেকটা পথ চলা বাকি। আর ভালর তো কোনও শেষ নেই।
প্রশ্ন: সাফল্যর পাশাপাশি আপনার জীবনে নিশ্চয়ই ব্যর্থতাও এসেছে?
প্রতীক: হ্যাঁ, তা তো এসেছেই।
প্রশ্ন: কী ভাবে সামলেছেন ব্যর্থতা?
প্রতীক: এটা অনেকটা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাগুলোর মতো। কেউ প্রথম পরীক্ষায় পাশ করে ছক্কা হাঁকায়। কেউ আবার বার বার চেষ্টা চালাতে থাকে। আমার ক্ষেত্রেও তেমন হয়েছে। প্রথম দিকে বেশ কিছু সিনেমা করেছি। অনেকে সেগুলো সুপারহিট ছবি বলে। কিন্তু সেগুলো আসলে বাম্পার ফ্লপ সিনেমা ছিল। পরবর্তী কালে সিরিয়াল যখন করেছি তা সুপারহিট বলা যেতে পারে। তাই তো আমার মনে হয় ভাল আর খারাপ অনেকটা স্বামী-স্ত্রীর মতো। রাত না থাকলে দিন আসবে না। জীবনের নিয়মই এটা।
প্রশ্ন: সিরিয়ালে এত সাফল্য পাওয়ার পর এখন কি বড় পর্দায় মন দিতে ইচ্ছে হয় না?
প্রতীক: যখন আমি সিনেমা ছেড়ে প্রথম সিরিয়ালে অভিনয় শুরু করি, তখন অনেকেই নাক কুঁচকে বলেছিলেন, “তুই সিরিয়ালে অভিনয় করবি!” বড় পর্দা ছেড়ে ছোট পর্দায় অভিনয় করাকে অনেকেই পদাবনতি বলে মনে করেন। তবে আমার ধারণা, সাফল্য বিভিন্ন জায়গা থেকে আসতে পারে। কেউ মুদির দোকান চালিয়েও সফল হতে পারে। কেউ আবার প্রচুর পড়াশোনা করেও সাফল্য পায় না।
প্রশ্ন: ইন্ডাস্ট্রিতে অনেকেই বলেন, আপনি নাকি বেশ রাগী? আপনার সঙ্গে কথা বলতে ভয়ই পান কেউ কেউ। এটা কি সত্যি?
প্রতীক: আমি এক বার মাকে প্রশ্ন করেছিলাম, চুপচাপ থাকি বলেই কি সবাই আমায় ভুল বোঝে। মা আমায় বলেছিলেন, আমার লম্বা-চওড়া চেহারার জন্য নাকি অনেকে ভুল ভেবে ফেলেন। আসলে আমার বড় হওয়াটা একটু অন্য রকম। প্রথাগত স্কুল-কলেজে যাইনি। পুরোটাই ‘হোম স্কুলিং’। তাই ছোট থেকে নানা ধরনের বই পড়েছি। হয়তো সেই জন্য ভাবনাচিন্তাটা ওই ধরনের। তবে হ্যাঁ, মাঝেমাঝে রেগে যাই।
প্রশ্ন: ‘এক্কা দোক্কা’ সিরিয়ালে আপনাকে দেখে অনেকেই বলছেন তবে ‘মোহর ২’ হতে চলেছে?
প্রতীক: শুরুতে নানা লেখালিখি হয়েছিল। কিছু মিল তো থাকবেই। তবে শঙ্খদীপ এবং অনির্বাণ দু’জন ভিন্ন চরিত্র। তা অবশ্য এখন ধীরে ধীরে দর্শক বুঝতে পারছেন। শঙ্খর মতো অনির্বাণ নামেও এখন দর্শক আমায় সম্বোধন করছেন।
প্রশ্ন: আপনার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানুষ কে?
প্রতীক: অবশ্যই আমার মা। মায়ের সঙ্গে আমি সব কথা ভাগ করে নিয়ে পারি। তবে এমনও অনেক সময় হয় যে, কিছু কথা বলতে পারি না। তখন মনে হয়, যদি বন্ধু থাকত তা হলে বলতে পারতাম। আমি সত্যিই জীবনে বন্ধু খুঁজি। মাকে বলি মাঝেমাঝে, সকলের কত দলবল আছে। আমার নেই তেমনটা। আসলে ছোট থেকে স্কুলিংও বাড়িতে। তাই তেমন কেউ নেই আমার। খুব হিংসা হয় অন্যদের দেখে।
প্রশ্ন: সকলের কৌতূহল, আপনি কি সিঙ্গল?
প্রতীক: হ্যাঁ, অবশ্যই। আমি আদ্যোপান্ত সিঙ্গল। বানিয়ে কোনও কথা বলি না। আমি সোজা কথা বলি। আর সোজা সত্যি উত্তর শুনতেও পছন্দ করি। এমনটাও হয়েছে, হয়তো একটা মেয়েকে পছন্দ হয়েছে, গিয়ে বলেছি মনের কথা। সে বিশ্বাসই করতে চায়নি। তার সঙ্গে সঙ্গে উত্তর, সিরিয়ালের হিরো আর কোনও প্রেমিকা নেই, এমন হতেই পারে না। এমনও হয়েছে, হয়তো কাউকে ভালাবাসার কথা বলতে গিয়েছি, সে ভেবেছে আমার তো বিয়েই হয়ে গিয়েছে। এই জন্যই প্রেম হচ্ছে না আমার। বুঝছি, নায়করা প্রেমের প্রস্তাব দিলে কেউ সিরিয়াসলি নেয় না।