আনন্দবাজার অনলাইনে আড্ডায় স্বস্তিকা। ছবি: সংগৃহীত।
পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর মাধ্যমে টলিপাড়ায় তাঁর হাতেখড়ি। তার পর হাফ ডজন সিরিয়ালে মুখ্য চরিত্রে অভিনয়ও করে ফেলেছেন। তিনি কখনও ডালি, কখনও রাধিকা, কখনও আবার ঝিলমিল। ব্যক্তিগত জীবনের জন্যেও অনেক সময় শিরোনামে উঠে এসেছে তাঁর নাম। তিনি স্বস্তিকা দত্ত। ২৩ এপ্রিল তাঁর জন্মদিন। এই বিশেষ দিনে ব্যক্তি স্বস্তিকার খোঁজ নিল আনন্দবাজার অনলাইন।
প্রশ্ন: শুভ জন্মদিন, কেমন কাটছে দিনটা?
স্বস্তিকা: ধন্যবাদ। এ বছর আমার জন্মদিনটা রবিবার পড়েছে। তাতেই আমি খুশি। ছুটি পেয়েছি। মা-বাবার সঙ্গে ভরপুর সময় কাটাব। বিকেলে বন্ধুদের সঙ্গে খেতে যাব।
প্রশ্ন: বয়সটা কি বলা যাবে?
স্বস্তিকা: এই রে ! নায়িকাদের বয়স, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট আর প্রেমিক গোনা বলা উচিত নয় তো...
বয়স জানাতে নারাজ স্বস্তিকা। ছবি: সংগৃহীত।
প্রশ্ন: আচ্ছা, তা হলে আপনার প্রেমিকের সংখ্যাই বলুন না হয়?
স্বস্তিকা: সত্যিকারের প্রেম, না কি ভাললাগাগুলোও এর মধ্যে ধরা হবে? একশোটা তা হলে হয়েই গিয়েছে। আর কিছু জিনিস ব্যক্তিগত থাকা ভাল। সবটা কি বলে দিলে চলে!
প্রশ্ন: নিজের বয়স তো না হয় বললেন না, ইন্ডাস্ট্রিতে কত বয়স হল?
স্বস্তিকা: আচ্ছা বয়সের ক্ষেত্রে এটা বলতে পারি, এমন একটা বয়সে পা রাখছি, যে বয়সে আমায় হয়তো সবাই আরও খানিকটা পরিণত দেখতে চায়। বিশেষত কমিটমেন্ট এবং গাম্ভীর্যের দিক থেকে। আর ইন্ডাস্ট্রির বয়সটা বলতেই পারি। ১১ বছর হয়ে গেল এই পেশায়।
শোভনের সঙ্গে বিচ্ছেদ প্রসঙ্গে মুখ খুললেন স্বস্তিকা। ছবি: সংগৃহীত।
প্রশ্ন: রাজ চক্রবর্তীর সিনেমার মাধ্যমে হাতেখড়ি। তার পর ছোট পর্দায় অভিনয়ের দিকে ঝুঁকলেন কেন? সাধারণত এমনটা দেখা যায় না।
স্বস্তিকা: আমি নিজেকে একটা গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ করে রাখতে চাইনি। আর যে ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে আমার কোনও ধারণা নেই, সেখানে এত কিছু ভাবব কী করে। প্রথম ছবির প্রযোজক ‘এসভিএফ’ আর পরিচালক রাজ চক্রবর্তী। এর থেকে বড় পাওনা আর কী হতে পারে! তখন কাজ শেখাটা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তাই শুধু সিনেমাই করব, অন্য কোনও কাজ করব না, এমনটা ভাবিনি কখনও। যখন যেমন সুযোগ পেয়েছি, তার সদ্ব্যবহার করার চেষ্টা করেছি। সত্যি বলতে কখনও ভাবিওনি যে, সিরিয়ালে অভিনয় করব না। অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছি, সেটাই বড় ব্যাপার।
প্রশ্ন: বেশ অনেক বছর পর তো আবার আপনাকে বড় পর্দায় দেখা যাবে?
স্বস্তিকা: হ্যাঁ, পাঁচ বছর পরে।
প্রশ্ন: পাঁচ বছর পর আবারও বড় পর্দায় কাজ, তা-ও আবার নন্দিতা রায় এবং শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের প্রযোজিত ছবিতে! কেমন অনুভূতি?
স্বস্তিকা: আমার মনে হচ্ছিল ‘ফাটাফাটি’ সিনেমাটার শুটিং আরও বেশ কিছু দিন চললে ভাল হত। আমাদের পরিচালক অরিত্রদা (অরিত্র মুখোপাধ্যায়) অসম্ভব ভাল। খুব মজা করেছি। অভিনেত্রী হিসাবে আমার একটা বাকেট লিস্ট আছে। যার মধ্যে একটা ছিল ‘উইন্ডোজ়’-এর সঙ্গে কাজ করার। তার পাশে একটা সবুজ টিক হয়ে গেল।
প্রশ্ন: আজকাল তো শোনা যাচ্ছে ছোট পর্দার অভিনেতাদের সিনেমায় সুযোগ পেতে বেশ কষ্ট করতে হয়। এই ভাগাভাগির মধ্যে আপনাকে পড়তে হয়েছে?
স্বস্তিকা: হ্যাঁ, এই সমস্যা আমি বুঝতে পারি। আমার মনে হয়, যাঁরা ট্রোল করেন তাঁরাই এই ভাগাভাগিটা করেন। ইন্ডাস্ট্রির মানুষেরা এমনটা করেন না। সিরিয়াল আর হলে গিয়ে সিনেমা দেখার দর্শক আলাদা। তবে এমনটা নয়, যিনি সিনেমা দেখতে যাচ্ছেন, তিনি সিরিয়াল দেখবেন না। আমায় এক বার এক জনপ্রিয় পরিচালক বলেছিলেন, “তোমার মুখ এক বার যদি ছোট পর্দায় ব্যবহৃত হয়, তা হলে আর বড় পর্দায় কাজ হয় না।” এটা অবশ্য মুখ্য চরিত্রের অভিনেতাদের ক্ষেত্রে বেশি হয়। কিন্তু লিড ছাড়া আরও তো চরিত্র আছে। ‘ফাটাফাটি’-তে আমার চরিত্র খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন: বর্তমানে নাকি ইন্ডাস্ট্রির নতুন ট্রেন্ড, বড় পর্দায় কাজ করলে নয় কেউ বোটক্স করাচ্ছেন, কেউ লিপ সার্জারি করাচ্ছেন। আপনিও কি কিছু করালেন? চিবুকটা বেশ স্পষ্ট দেখাচ্ছে।
স্বস্তিকা: জ লাইন বোঝা যাচ্ছে! আমি অনেকটা ওজন ঝরিয়েছি। কাজের ফাঁকে রোজ জিম করছি। সত্যি এখনও পর্যন্ত নাক-ঠোঁট, কোনও কিছুর জন্যই কোনও ক্লিনিকে যেতে হয়নি। যে দিন ক্যামেরা চাইবে, সে দিন বোটক্স করাব।
প্রশ্ন: বেশ কিছু দিন ধরেই আপনার আর শোভন গঙ্গোপাধ্যায়ের সম্পর্ককে ঘিরে নানা রকম আলোচনা চলছে। ১ এপ্রিল শোভনের জন্মদিনেও আপনি কোনও পোস্ট করেননি। সব ঠিক আছে? এ ব্যাপারে কিছু বলতে চান?
স্বস্তিকা: আমি কিন্তু শোভনকে রাত ১২টাতেই জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছি। এক জন ভক্তের মন্তব্যও পড়লাম। লিখেছে ,“তুমি ভীষণ ন্যাকা। কেন তুমি শোভনকে সোশ্যাল মিডিয়ায় শুভেচ্ছা জানালে না?” সব কিছুই কি সোশ্যাল মিডিয়ায় জানাতে হবে? এখন অনেকেই বলবেন যখন আমরা সম্পর্কে ছিলাম, তখন অনেক কিছু পোস্ট করতাম। কিন্তু ভাল করে লক্ষ করলে দেখা যাবে, আগেও আমি কখনও ওর ছবি পোস্ট করে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাইনি।
প্রশ্ন: শোভনের সঙ্গে বিচ্ছেদের কথা আপনি নিজেই বললেন, তা হলে আপনার বিশেষ দিনে নিশ্চয়ই ওঁকে মিস করছেন? আগের বছর জন্মদিনেও আপনার সঙ্গে শোভন ছিলেন।
স্বস্তিকা: আমি সাধারণত জন্মদিনে কাজ করে থাকি। তবে এই বছরে মা-বাবাকেই শুধু সময় দিতে চাই। শুটিংয়েরও ছুটি। আর শোভনকে মিস করা প্রসঙ্গে যদি ডিপ্লোম্যাটিক উত্তর দিই, তা হলে বলব, একটুও মিস করছি না। যদি ইমোশনালি বলি, খুব মিস করছি। যেমন ও নিশ্চয়ই ১ এপ্রিল মিস করেছে আমায়।
প্রশ্ন: আপনাদের বিচ্ছেদের জল্পনা নিয়ে যে এত লেখালেখি হল, সেই নিয়ে কিছু বলতে চান?
স্বস্তিকা: যে যা খুশি লিখতে পারে। তবে এটা বলতে পারি, আমাদের দু’জনের মধ্যে কোনও তিক্ততা নেই। আমরা সম্পর্কটা শেষ করেছি হ্যাপি নোটে। এটা আমাদের যৌথ সিদ্ধান্ত। আমাদের নিজেদের মতো ভাল থাকতে দিন। ধন্যবাদ।