Kumar Sanu

আমি এখন নায়কদের জন্য গান গাই না সেটা তাঁদের দুর্ভাগ্য, আমার না: কুমার শানু

নেপোটিজম থেকে রিয়্যালিটি শো-এর বাস্তব, আনন্দবাজার ডিজিটালের কাছে অকপট গায়ক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২১ ২২:০২
Share:

কুমার শানু।

প্রায় ১ বছর পর কলকাতায় ফিরছেন কুমার শানু। হাতে একগুচ্ছ কাজ নিয়ে শহরে থাকার মেয়াদ মাত্র ২দিন। দু’খানা গানের রেকর্ডিং সেরে একটু ফাঁক পেয়েই জুড়ে দিলেন আড্ডা। নেপোটিজম থেকে রিয়্যালিটি শো-এর বাস্তব, আনন্দবাজার ডিজিটালের কাছে অকপট গায়ক।

Advertisement

কতদিন পর কলকাতায় ফিরছেন?

প্রায় ১ বছর পর ফিরছি।

Advertisement

এত দিন পর নিজের শহরে ফিরছেন, কিছু প্ল্যান করেছেন?

নাহ, সেই সুযোগই নেই। এয়ারপোর্ট থেকে সোজা বর্ধমান যাব একটা মিটিংয়ের জন্য। ফিরেই আবার একের পর এক রেকর্ডিং।

ছবির গান না অ্যালবাম?

এই মুহূর্তে কাজ নিয়ে খুব বেশিকিছু বলা যাবে না। তবে দুটোই রয়েছে।

আপনার মেয়ে শ্যানন তো গায়িকা হিসাবে খুব জনপ্রিয়তা পাচ্ছে…

হ্যাঁ। ও নিজের মতো করে খুব ভাল কাজ করছে। বাবা হিসাবে আমার গর্ববোধ হয় ওকে। হলিউডে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটা গান গেয়েছে। বলিউডেও গেয়েছে। তবে কম। আমি মনে করি হলিউডে থাকাটাই ওর জন্য বেশি ভাল।

শহরে এসে একাধিক কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন তিনি।

বাকিদের মতো আপনাকে ছেলেমেয়েদের প্রচার করতে দেখা যায় না কেন?

দেখুন, আমি মনে করি, ওদের প্রতিভা থাকলে ওরা নিজেরাই নিজেদের জায়গা তৈরি করে নেবে। বাবা হিসেবে জীবনের স্ট্রাগলটা ওদের বুঝতে দিতে চাই। আমি যদি থালায় করে সবকিছু সাজিয়ে দিই, তা হলে ওরা কিছু শিখবে না। যারা সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মায়, তাদেরকেও বাস্তবটা দেখানো দরকার। যতটুকু সাহায্য না করলেই নয়, তার বাইরে আমি কিছু করতে রাজি নয়।

‘বিগ বস’ বিতর্কের পর ছেলের সঙ্গে আর কথা হয়েছে?

না। ওর সঙ্গে আমার আর কোনও কথা হয়নি। ও যথেষ্ট বুদ্ধিমান। নিজেরটা নিশ্চয়ই বুঝবে। কিন্তু আমি এই বিষয়ে আর কোনও কথা বলতে চাই না।

বেশ, তবে বলুন আপনাকে ফের বিচারকের আসনে কবে দেখা যাবে?

খুব শিগগিরি। স্টার জলসা অলরেডি আমাকে একটা শোয়ের জন্য সাইন করে নিয়েছে। হয় তো ফেব্রুয়ারি-মার্চ থেকেই আপনারা আমাকে আবার টেলিভিশনে দেখতে পাবেন।

রিয়্যালিটি শো কি আদৌ নতুন প্রতিভাদের এগিয়ে দেয়?

এর মাধ্যমে অনেক নতুন ট্যালেন্ট এগিয়ে আসে। অনেকের পাতে রুটি তুলে দেয় এই শোগুলো। আমি মনে করি কারও মধ্যে যদি সত্যি প্রতিভা থাকে তা হলে তাঁকে কেউ আটকাতে পারবে না। কাজটাই হল শেষ কথা। ভাল কাজ করলে নিশ্চয়ই সে টিকে থাকতে পারবে।

আপনি যে সব নায়কদের জন্য গান গেয়েছেন তাঁরা এখনও দাপিয়ে কাজ করছেন অথচ তাঁদের কণ্ঠে এখন অন্য শিল্পীরা গান করছেন…

আমি এখনও নিয়মিত গান করি। হয় তো সে সব হিরোদের জন্য গাই না, সেটা তাঁদের দুর্ভাগ্য। আমি ওঁদের জন্য যে ধরনের হিট দিয়েছি, সে রকম হিট এখন আর হয় না। এখনও যদি আমি ওই হিরোদের জন্য গাই, তাতে ওদেরই লাভ হবে। আমি তো ‘কুলি নম্বর ১’-এ বরুণের জন্য গাইলাম, ‘দম লাগাকে হাইশা’-তে আয়ুষ্মানের জন্য গেয়েছিলাম। দুটো গানই সুপার ডুপার হিট করেছে। সুতরাং এমন তো নয় যে আমরা গাইলে হিরোর সঙ্গে গলা ম্যাচ করছে না বা হিট করছে না। এ বার আপনাদেরই বুঝে নিতে হবে ভুলটা কোথায়।

খুব শীঘ্রই রিয়্যালিটি শো-তে দেখা যাবে কুমার শানুকে।

তবুও কি কোথাও আক্ষেপ হয়?

না। আমি এত গান গেয়ে রেখেছি যে আর আক্ষেপ করার জায়গাই নেই। এখনও মাথা উঁচু করে কাজ করে যাচ্ছি। কে কী করল তা নিয়ে আমি ভাবি না। নিজের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকি।

নতুন প্রজন্মের গায়কদের মধ্যে কাকে ভাল লাগে?

অরিজিৎকে আমার খুব ভাল লাগে। ওর মধ্যে অনেক পোটেনশিয়াল আছে। ভাল মিউজিক ডিরেক্টর পেলে বারবার সেটা ও প্রমাণ করেছে। আমি এটাও জানি যে অরিজিতও আমাকে খুব ভালবাসে। ওর অনেক শোতেই আমাকে ট্রিবিউট দিয়ে ৭-৮টা গান গেয়েছে ও।

গানবাজনা নিয়ে কথা হয় অরিজিতের সঙ্গে?

না। এখনও ব্যক্তিগত ভাবে ওর সঙ্গে দেখা হয়নি। হলে নিশ্চয়ই কথা হবে। কখনও যদি আমাদের একসঙ্গে গান গাওয়ার সুযোগ হয় খুব ভাল লাগবে।

‘কুলি নম্বর ১’-এ আপনার গান তো দারুণ জনপ্রিয় হয়েছে…

(মৃদু হেসে) হ্যাঁ। খুব ভাল লাগছে। ২৫ বছর আগেও ‘মিরচি লাগি’ হিট ছিল। আজও তাই। অনেকেই বললেন আমার গলা নাকি একদম একই রকম আছে। এটা শুনলে কার ভাল লাগবে না বলুন তো! গাইতে গিয়ে আমি নিজেও খুব উপভোগ করেছি।

যার জন্য গাইলেন তাঁর সঙ্গে কথা হল?

না। বরুণের সঙ্গে কোনও কথা হয়নি। তবে ডিজে চেতাস এবং লিজোর সঙ্গে কাজ হল। দুটি ছেলেই খুব ট্যালেন্টেড। বেশ অন্য ধরনের অভিজ্ঞতা হল গানটা গেয়ে।

তার মানে বলা যায় কুমার শানুর রিমিক্সে কোনও আপত্তি নেই…

যদি আসল গানের আমেজটা রেখে রিমিক্স করা হয় তা হলে আপত্তি থাকা উচিত নয়। আর যিনি গানটি গেয়েছেন তাঁকে দিয়ে গাওয়ালে বিষয়টা বেশ ভাল হয়।

এখন তো খুব ব্যস্ত শিডিউল কিন্তু করোনার সময়টা কঠিন মনে হয়েছিল?

রোজগারের রাস্তা বন্ধ হলে চিন্তা তো একটু হবেই। তবে আমি পজিটিভলি সবটা নিয়েছি। লকডাউনে ১৫ কেজি ওজন ঝরিয়েছি, নতুন নতুন রান্না শিখেছি। তবে খারাপ লাগছিল যে মানুষের কাছে পৌঁছতে পারছিলাম না। যখন আমার করোনা হল, স্ত্রী-সন্তানদের জন্য মন খারাপ করছিল। কিন্তু ওই যে বললাম, আমি পজিটিভ থাকতে ভালবাসি।

তার মানে বলা যায় কণ্ঠের মাধুর্য জীবনেও মিশিয়ে নিয়েছেন আপনি…

একদম। (হেসে উঠলেন গায়ক)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement