শরমন।
প্র: কলকাতায় আগেও তো এসেছেন ছবির প্রচারে?
উ: আমার কেরিয়ারের শুরুর দিকে যখন থিয়েটার বেশি করতাম, তখন থেকেই কলকাতায় যাতায়াত। গুজরাতি নাটক পারফর্ম করতে বেশ কয়েকবার এসেছি, থেকেওছি এখানে। রিয়া (সেন) এবং রাইমা (সেন) আমার খুব ভাল বন্ধু। ওদের সঙ্গে রাত জেগে চুটিয়ে পার্টি করতাম (হাসি)।
প্র: প্রথম বার পর্দায় জওয়ানের চরিত্রে অভিনয় করলেন। সেই অভিজ্ঞতা কেমন?
উ: খুবই ভাল। সেনা, তাঁদের শৌর্য-পরাক্রম, যুদ্ধক্ষেত্র নিয়ে হিন্দিতে মনে রাখার মতো অনেক ছবি তৈরি হয়েছে। তবে আরিয়ান সাক্সেনার ‘ফৌজি কলিং’ ছবিটা একটু আলাদা ধাঁচের। এখানে ফোকাসে থাকবে জওয়ানের পরিবার। এক জওয়ানের মৃত্যুর পরে তার পরিবার কী ভাবে শোক নিয়ে বেঁচে থাকে, সেটাই গল্প। আরও একটি বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। শুধু সেনা নয়, তার পরিবারও ত্যাগ এবং সাহসিকতার পরিচয় দেয়। জওয়ান বেঁচে ফিরবে কি না, সেই অনিশ্চয়তা নিয়ে পরিবারের বেঁচে থাকা সহজ নয়।
প্র: ‘উরি- দ্য সার্জিকাল স্ট্রাইক’-এর সাড়াজাগানো সাফল্যের পর থেকেই কি এই ধরনের ছবি করার ঝোঁক বেড়েছে?
উ: আমাদের গোটা টিম ট্রেন্ড ফলো করায় নয়, বরং নতুন ট্রেন্ড তৈরি করায় বিশ্বাসী। সত্যি কথা বলতে, খুব ভালবেসে এই ছবিটা তৈরি করেছি। আশা রাখছি, আমরা যেটা করতে চেয়েছি, সেটা পর্দায়ও প্রতিফলিত হবে। দর্শকেরও ভাল লাগবে।
প্র: বিদিতা বাগের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?
উ: এই শহর ওকে বোধহয় একটু বেশিই ভালবাসে (হাসি)। ছবি করার সময়ে ও বেশ গম্ভীর ছিল। হয়তো চরিত্রের মধ্যেই ডুবে ছিল। প্রচারের সুবাদে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে ওকে আরও কাছ থেকে জানার সুযোগ পাচ্ছি।
প্র: প্রথমে কমিক চরিত্রে, পরে সিরিয়াস, তারও পরে ‘হেট স্টোরি থ্রি’র মতো ছবিতে সাহসী চরিত্রে... অভিনেতা হিসেবে ক্রমাগত ইমেজ বদলেছে আপনার। আগামী দিনে কোন ধরনের ছবি করার ইচ্ছে?
উ: ‘হেট স্টোরি থ্রি’র মতো ছবি (হাসি)। ওই ছবির কাজ দারুণ উপভোগ করেছিলাম।
প্র: ওয়েব-বড় পর্দায় এত ধরনের কনটেন্ট এখন। অভিনেতা হিসেবে কি এটাই সেরা সময়?
উ: ইন্ডাস্ট্রির প্রতিটি পরিচালক-প্রযোজক-অভিনেতার জন্য এটা খুব ভাল সময়। সেটা নিয়ে দ্বিমত নেই। অতিমারির আগে থেকেই হিন্দি এবং অন্য ভাষার ছবিতেও ছকভাঙা কনটেন্টের জোয়ার দেখা যাচ্ছিল। অনেক কম বাজেটের ছবিও বক্স অফিসে সফল হয়েছে। পরিচালক-চিত্রনাট্যকারেরা এক্সপেরিমেন্ট করতে আগ্রহ দেখাচ্ছিলেন। তবে লগ্নি ফেরত পাওয়ার জন্য তারকাদের কাস্ট করার দিকেই ঝোঁক ছিল প্রযোজকদের। সেই ভাবনায় কিন্তু বদল এসেছে। এখন ক্রিয়েটিভ প্রোডিউসররা যে ছবির জন্য যেমন কাস্ট দরকার, তেমনই নিচ্ছেন। তাঁরা বাণিজ্যিক দিক দিয়ে সফল কি না, সেটাই শুধু বিবেচ্য নয়।
প্র: নেটফ্লিক্সেও একটি ছবি করেছেন, না?
উ: আব্বাস-মস্তানের একটি থ্রিলার করেছি। গত নভেম্বরে শুট শুরু হয়েছিল। ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ হয়ে গিয়েছে কাজ। মে-জুন মাস নাগাদ হয়তো নেটফ্লিক্সে মুক্তি পাবে।
প্র: গত বছর এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, পারিশ্রমিক বাড়ানোর জেরে ‘গোলমাল’ ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির পরের ছবিগুলিতে আপনাকে নেওয়া হয়নি। সেই কি সমস্যা মিটেছে?
উ: কিছু জিনিস মেনে নিতে হয়। হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি একটা গণতান্ত্রিক প্ল্যাটফর্ম। কাজ করে এখানে টিকে থাকতে হয়। কাজের সুবাদে মানুষের ভালবাসা-সম্মান অর্জন করতে হয়। একটা কাজই অন্য কাজের সুযোগ করে দেয়। তবে এটাও ঠিক, কিছু নির্দিষ্ট মানুষের সঙ্গেই ছবি করতে পছন্দ করেন ইন্ডাস্ট্রির কয়েকজন। কারণ মানুষ হিসেবে যদি একে অন্যের সঙ্গে বন্ডিং তৈরি হয়, তখন কাজ করাটা অনেক সহজ হয়। এটা কখনও বদলানো যাবে না। যাঁদের যোগ্যতা রয়েছে, তাঁরা ঠিক জায়গা পাবেন।
প্র: তারকা-সন্তানদের উদ্দেশ্য করে কি এটা বলছেন?
উ: তারকা সন্তানদের বাড়তি সুযোগ-সুবিধে দেওয়া হবে। কিন্তু সেটা তাঁদের বাবা-মায়েদের পরিশ্রমের ফল। সন্তান যদি বাবা-মায়ের ভাল কাজের ফল ভোগ করে, তাতে তো অন্যায় কিছু নেই।