প্র: যে ছবিটা দক্ষিণী ভাষায় হয়ে গিয়েছে, সেটা রিমেক করার কি প্রয়োজন ছিল?
উ: এই প্রশ্নটা আমিও ভেবেছিলাম। আমি যখন ‘অর্জুন রেড্ডি’ দেখেছিলাম, খুব ভাল লেগেছিল। তাই যখন বলা হয়, এর হিন্দি রিমেক হবে, আমি তার পক্ষে ছিলাম না। কিন্তু ‘অর্জুন রেড্ডি’র পরিচালক সন্দীপ ভঙ্গা নিজেই হিন্দি রিমেক করার জোর করলে সাহস পেলাম। এ ছাড়া মীরাও (কপূর) আমাকে চরিত্রটা করার জন্য সাজেস্ট করেছিল।
প্র: তা হলে কাজের ক্ষেত্রে আপনি মীরার পরামর্শ মেনে চলেন?
উ: মীরার পরামর্শ আমার জীবনে সব সময়েই গুরুত্বপূর্ণ।
প্র: কবীর সিংহের মতো ইনটেন্স চরিত্র করার প্রভাব কি ব্যক্তিগত জীবনে পড়েছে?
উ: পাগল! কোনও দিন না। সে রকম হলে মীরা আমাকে বাড়িতে ঢুকতেই দিত না। আর আমি খুব প্র্যাকটিকাল অভিনেতা। ব্যক্তিজীবন এবং পেশা গুলিয়ে ফেলি না।
প্র: ‘হায়দর’, ‘উড়তা পঞ্জাব’ বা ‘কবীর সিংহ’-এ আপনার চরিত্রগুলো ধূসর। মনে হয় না কি এতে ইমেজের ক্ষতি হবে?
উ: একদমই না। তাই যদি হতো, তা হলে অমিতাভ বচ্চন কোনও দিন অ্যাংরি ইয়ংম্যান বা দিলীপ সাব ‘দেবদাস’ করতেন না। এক জন অভিনেতাকে দর্শকের রুচি অনুযায়ী ছবি করতে হয়। আর এখন সময় বদলেছে। শুধু মাত্র নায়ককে দেখতে দর্শক থিয়েটারে যান না। সিনেমার মধ্য দিয়ে সামাজিক-নৈতিক অনেক বার্তাই দেওয়া যায়। তবে সব ছবিতে জোর করে মেসেজ দেওয়া সম্ভব নয়।
প্র: ছবিতে কবীর সিংহের হার্টব্রেক হওয়ার পরে সে কিন্তু নিজেকে সামলাতে পারেনি। আপনি সামলেছিলেন কী করে?
উ: যখন প্রথম ‘অর্জুন রেড্ডি’ দেখেছিলাম, তখন কলেজ জীবনের অনেক স্মৃতি চোখের সামনে ভেসে উঠেছিল। হার্টব্রেক হওয়ার পরে কারওরই কিছু ভাল লাগে না। নিজেকে পছন্দ করতাম না। চারপাশের সকলের উপরে রাগ হতো। আমাদের সকলের মধ্যেই কবীর সিংহ আছে।
প্র: কিন্তু ইদানীং এ রকম ভালবাসা বিরল নয় কি?
উ: আমার তো মনে হয় না। আমি এ রকম প্যাশনেট ভালবাসাতেই বিশ্বাসী। নতুন প্রজন্ম হয়তো একটু আলাদা আমাদের চেয়ে। আই বিলিভ ইন লাভ অ্যান্ড ম্যারেজ।
প্র: আপনার বাচ্চারা এখন ছোট। তাঁরা বড় হলে কি আপনি এই ধরনের চরিত্র করবেন?
উ: এটা তো আমার কাজের অংশ। ক্যামেরার সামনের মানুষ আর মিশা-জ়ায়ানের বাবা আলাদা একটা মানুষ। আমি যদি বাচ্চাদের সামনে ড্রিঙ্ক করতাম আর এ দিকে পর্দায় খুব ভাল মানুষের চরিত্র করতাম, সেটা কি ভাল হতো? আমার সন্তানরাও নিশ্চয়ই সেটা বুঝবে। আমি চাই পরিণত হয়ে আমার মিশা-জ়ায়ান ‘উড়তা পঞ্জাব’ দেখুক। সমাজের সমস্যাগুলোকে অ্যাড্রেস করা উচিত। লুকিয়ে রাখলে তা আরও বিশাল আকার নিতে পারে। আর সিনেমা তো আমাদের জীবনেরই আয়না। সব কিছু ভাল দেখালে দর্শক কী জানবে?
প্র: আপনার পরিবার এখন সম্পূর্ণ। কী রকম অনুভূতি হয়?
উ: খুব স্পেশ্যাল। আমি আর মীরা দু’জনেই কাজ করি। তবে মীরাই বাচ্চাদের বেশি সময় দেয়। আমি যখনই শহরে থাকি, বাচ্চাদের সঙ্গে সময় কাটাই। ওদের ন্যাপি বদলে দিই। মীরা অবশ্য এখনও ন্যাপি বদলাতে গাঁইগুঁই করে (হাসি)! ওদের গল্পের বই পড়াই, ঘুরতে নিয়ে যাই। এগুলো করতে ভাল লাগে। না করতে পারলে বরং গিল্ট ফিলিং হয়। বাচ্চাদের সঙ্গে স্পেশ্যাল কানেকশন হওয়াটা খুব জরুরি।
প্র: আপনার কি মনে হয়, পাপারাৎজ়ির আধিপত্য এখন খুব বেশি হয়ে গিয়েছে?
উ: আমাদের দু’পক্ষেরই একে অপরকে দরকার। একটা ব্যালান্স রাখা উচিত। যেটা থাকে না। আমি যখন একা ট্রাভেল করি, তখন কোনও অসুবিধে হয় না। কিন্তু আমার ছেলেমেয়েরা তো এতে অভ্যস্ত নয়।
প্র: আপনাকে দেখলে মনে হয় না যে, আপনার বয়স ৩৮। রহস্যটা কী?
উ: বৌয়ের কথা শুনে চলি, ভেজ খাই আর কোনও নেশা নেই (হাসি)!