‘রসগোল্লা’ ছবির একটি দৃশ্য।
‘বাবার নাম গান্ধী’-র পর তিন বছরের ব্যবধান। তার পরেই হাতে এত ছবি! প্রযোজক! পিআর-টা তা হলে ভালই করেন?
শুনুন, একটা কথা বলি। পাভেল মানে পিআর নয়। পার্টি নয়। ইন্ডাস্ট্রির কোনও গ্রুপের মধ্যেও আমাকে দেখবেন না। এগুলো ছাড়াই তো আমার ‘রসগোল্লা’র ট্রেলর হিট। অচেনা কত মানুষ ফোন করে বলেন, ‘দাদা আপনার ‘রসগোল্লা’-র ট্রেলর দেখি রোজ। ওটা না একটা গানের মতো। তাই রোজ দেখতে ইচ্ছে করে।’ পাভেল এই মানুষগুলোর কথা ভেবেই ছবি বানায়।
তাই বলে সব ছেড়ে নবীনচন্দ্র দাসের বায়োপিক! কী এমন আছে এতে?
প্যায়ারের খুশবু আছে। মা আর ছেলের গল্প আছে। লড়াইয়ের জয় আছে। কে বলেছে বলুন তো বায়োপিক মানে শুধু রাজারাজরাদের গল্প দেখাতে হবে? ইতিহাস মানেই শাহজাহান আর মমতাজের কথা বলতে হবে। কেন তাজমহলের নির্মাতারা কী দোষ করল? যারা একটা একটা করে প্রেমের পাথর গেঁথেছে। লোকে আমায় বলেছে শেষে, ‘বায়োপিক অন ময়রা!’ আমি জবাব দিয়েছি, ‘বায়োপিক অন কেওড়া হলে ময়রা কেন নয়?’ (হাসি)
কেওড়া বলতে?
সঞ্জয় দত্ত-র বায়োপিক ভাবুন। আর আমার বিশ্বাস বায়োপিক থেকে মানুষ কিন্তু কিছু শেখে...
ওহ! মানে বলছেন বায়োপিকে জ্ঞান দেওয়ার বিষয় আছে?
নিশ্চয়। মানুষ উদ্বুদ্ধ হয় জীবন দেখে। অনুপ্রেরণা পায়। আপনি জ্ঞান ভাবলে জ্ঞান!
আরও পড়ুন: দেব-রুক্মিণীর বিয়ের শুটিং! শুরু কবে?
আপনি বেশ স্পষ্ট জবাব দেন। শুনেছি সেটে নাকি রাগারাগি করেন?
দেখুন আমি রাগ করি। তার মানে এমন নয় যে আমি হত্যাকারী। ছবির ভালর জন্যই আমি রেগে যাই। তবে ইদানীং রাগ কমিয়েছি। আমি রেগে গেলেই উজান আমার হাত ধরে বলে ‘পাভেলদা চুপ, চুপ’।
পরিচালক পাভেলের কাছে ইন্ডাস্ট্রি মানে তাঁর টেকনিশিয়ানরাও।
ইন্ডাস্ট্রিতে উজান ছাড়া আর কোনও বন্ধু নেই আপনার?
কোনও সিনিয়র আমায় বলেছেন ইন্ডাস্ট্রিতে বন্ধু হয় না। আর আমি ইন্ডাস্ট্রি বলতে শুধু বড় পরিচালক আর নায়ক নায়িকা বুঝি না। আমার কাছে ইন্ডাস্ট্রি মানে আমার টেকনিশিয়ানরাও। সুপ্রিয়, মলয়ের মতো মানুষ। আমার ইউনিটের স্পট বয়। এই তো আমরা এক দিন সবাই পিকনিক করলাম। আমার ইউনিটে চিকেন আছে, ও খুব ভাল রান্না করে। ও রাঁধলো।
আপনার মনের মতো এই ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে আপনি টিকে থাকতে পারবেন তো?
দেখুন, আমি গাধার মতো খাটতে পারি। লিখতে পারি। পরিচালনা করতে পারি। আমার আর কিছু নেই। আমার সে রকম কোনও নায়িকা প্রেমিকা নেই, ধরাবাধা প্রযোজক নেই। পিআর নেই। আসলে এটা হল গ্রাসরুট লেভেলের সমস্যা।
যেমন?
ধরুন পুরুলিয়ার ছেলে ভাল পড়াশোনা করে কলকাতায় অধ্যাপনা করল। নিউ আলিপুরে ফ্ল্যাট কিনল। অস্ট্রেলিয়া থেকে পিএইচডি করা মেয়ে বিয়ে করে আমেরিকা গেল। এই আমেরিকাটা ইন্ডাস্ট্রি। সে মিশে গেল। আর আমি নবারুণ ভট্টাচার্যের ছাত্র। আমেরিকায় তো যাবই না। উল্টে আভেরিকাকে পুরুলিয়া বানাবো। রাজাদের ইতিহাস নয়, সাধারণ মানুষের গল্প বলব। এই মানুষদের কথা আমি বলব না তো কে বলবে?
আরে! আপনিই শুধু বলতে পারেন এ ভাবে?
দাঁড়ান। পরিষ্কার করে বলি। আমিই একমাত্র পরিচালক যে এই সব মানুষের কথা বলবে, এটা বলতে চাইনি। নবারুণ স্যর বলতেন, ইন্টারভিউ, পোস্টার, কেচ্ছা কিচ্ছু থাকে না। ভাল কাজ হলে সেটা থাকবে। আর হাওয়া বদলাচ্ছে। নয়তো স্টার ব্যাগেজ ছাড়া, ‘রসগোল্লা’র মতো ছবির বাজেট তিন কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: আজ বিয়ে কপিল শর্মার, জালন্ধরে প্রস্তুতি তুঙ্গে
এখানে শিবপ্রসাদ-নন্দিতার কথা নিশ্চয়ই বলবেন?
অবশ্যই। ‘রসগোল্লা’ করার ভরসা, সাহস উনডোজের কাছ থেকে। শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় আর নন্দিতা রায়ের কাছ থেকেই পেয়েছি।
একুশে ডিসেম্বর কী করবেন?
চুপ করে যাবো। হয়তো পরে রিঅ্যাক্ট করবো।
‘রসগোল্লা’ ছবির শুটিংয়ের সময় পরিচালক পাভেল।
এখন কী ভাবছেন?
ভাবছি, দুধ কর্নফ্লেক্স খাব? না অন্য কিছু?
কাজের কথাটা বলবেন কি?
সবটা বলব না। উজান বলেছে একটা স্টোরিতে সব বলে দিলে স্টোরির সংখ্যা কমে যাবে।
এই তো বললেন নবারুণ স্যর বলেছিলেন স্টোরি দিনের শেষে থাকে না!
এই তো অনেক বলে ফেলেছি! উজান ঠিক বলে। বেশি বলতে নেই।
খবর আছে, আপনি সামনে গুপী বাঘা করবেন?
করব তো! মন প্রাণ ঢেলে করব। আর বলব না কিছু...প্লিজ...
(সেলেব্রিটি ইন্টারভিউ, সেলেব্রিটিদের লাভস্টোরি, তারকাদের বিয়ে, তারকাদের জন্মদিন থেকে স্টার কিডসদের খবর - সমস্তসেলেব্রিটি গসিপপড়তে চোখ রাখুন আমাদেরবিনোদনবিভাগে।)