Rishi Kaushik

Interview: ‘দর্শক দেখছেন বলেই টিভির কনটেন্টে সাংসারিক গল্প চলছে’

এক দশকের বেশি সময় ধরে ধারাবাহিকের মুখ ঋষি কৌশিক।

Advertisement

নবনীতা দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২২ ০৭:৩৭
Share:

ঋষি।

প্র: এত বছর ধরে ধারাবাহিকে মুখ্য ভূমিকায়... কেমন লাগে?

Advertisement

উ: প্রায় সতেরো বছর হয়ে গেল। ২০০৫ সালে ‘একদিন প্রতিদিন’-এ শুরু, সেখান থেকে এখন ‘সোনা রোদের গান’। এখানে আমি ডা. অনুভবের চরিত্রে। এটা আমার সৌভাগ্য। প্রত্যেক ধারাবাহিকেই কাজটা খুব মন দিয়ে করি।

প্র: ‘সোনা রোদের গান’-এর প্রস্তাব পেলেন কী ভাবে?

Advertisement

উ: ধারাবাহিকের প্রযোজক অর্কর (গঙ্গোপাধ্যায়) সঙ্গে আমার অনেক দিনের যোগাযোগ। অর্কর কাছ থেকেই প্রস্তাবটা পাই। প্রথমে এই ধারাবাহিকের হিন্দিটা অর্থাৎ ‘থোড়া সা বাদল থোড়া সা পানি’র জন্য আমাকে প্রস্তাব দেওয়া হয়। তখন দু’-তিন দিনের মধ্যে সব গুছিয়ে মুম্বই শিফট করে যেতে হত। সে সময়ে হুট করে বাইরে চলে যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না।

প্র: আফসোস হয়নি পরে?

উ: না, আফসোস করার মতো হলে তো চলেই যেতাম।

প্র: অনেক অভিনেতাই তো মুম্বই চলে যাচ্ছেন। সিরিজ়ের কাজ করছেন। আপনার পরিকল্পনা কী?

উ: আমারও ইচ্ছে আছে। ভাল প্রস্তাব পেলে মুম্বই যাব। তবে এখানেও তো সিরিজ়ের কাজ করছি। গত বছর সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘ফেলুদা ফেরত’-এ ছিলাম। ক’দিন আগে ‘শ্বেতকালী’ সিরিজ়ের শুটিং করলাম। পরে সিরিজ়ের প্রস্তাব পেলে আবার করব। আপাতত টেলিভিশন করছি মন দিয়ে।

প্র: এখন তো ওটিটির রমরমা, তার সঙ্গে বড় পর্দাতেও পরপর ছবি মুক্তি পাচ্ছে। টিভির বাজার কি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে?

উ: না, সেটা আমি মনে করি না। যে প্রজন্ম টিভি দেখছেন, তাঁরা কিন্তু টিভিই দেখবেন। কারণ তাঁরা ওটিটি সাবস্ক্রিপশন বা অত কিছুর সঙ্গে এখনও অভ্যস্ত নন। তাঁরাই কিন্তু টিভির মূল দর্শক। যাঁরা মাঝে মাঝে এক-দুটো সিরিয়াল দেখছেন, তাঁরা কোর দর্শক নন। আর মূল দর্শক টিভি ছাড়বেন না। তা ছাড়া ওটিটিতেও একটা সিরিজ় এক সময়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সিরিয়াল থেকে যাচ্ছে রেগুলার এন্টারটেনমেন্টের জায়গায়। রোজকার বিনোদনের জন্য টিভির পরিবর্ত কিছু নেই। তাই টিভির বাজারে খুব একটা প্রভাব এখনই পড়বে না। পরবর্তী প্রজন্ম যখন দর্শকাসনে আসবেন, তখন হয়তো টিভিতেও অনেক বদল আসবে।

প্র: ওটিটি বা সিনেমার গল্পে তো অনেক বদল এসেছে। তা হলে টিভির কনটেন্টে কেন পরিবর্তন আসছে না?

উ: যখন দর্শক টিভি দেখতে বসেন, তখন একটা মাইন্ডসেট নিয়ে বসেন। সাংসারিক ড্রামা বা যা-ই বলা হোক না কেন, দর্শক দেখছেন বলেই সেই কনটেন্ট চলছে। কনটেন্ট চলছে বলেই তো একের পর এক সিরিয়াল তৈরি হচ্ছে। না হলে সাংসারিক জটিলতা নিয়ে সিরিয়াল তৈরি হবে কেন? আর একটা বিষয়ও ভুলে গেলে চলবে না, ওই একটা সিরিয়াল থেকে হাজারটা মানুষের সংসার চলে। তাই যে কনটেন্ট টিআরপি দেয়, সেটাই চলে। চ্যানেল কর্তৃপক্ষও জানেন যে, দর্শক কোনটা দেখবেন। এখন যদি নতুন ধরনের কনটেন্ট আনা হয়, তাতে কিন্তু ধারাবাহিক না-ও চলতে পারে। উদাহরণ হিসেবে ‘পুষ্পা’কে ধরা যায়। সিনেমাটা তো হিট। এটা দক্ষিণী ছবি বলে দর্শক দেখছেন। বলিউডে এমন একটা চরিত্র বানালে না-ও চলতে পারে। আবার ‘নো টাইম টু ডাই’ যখন দেখছি, তেমন মাইন্ডসেট নিয়েই দেখছি। এখন জেমস বন্ড যদি শাহরুখ খানের মতো সরষে খেতে দাঁড়িয়ে থাকে, তা হলে কি কেউ দেখবেন?

প্র: মাইন্ডসেটটা কী হিসেবে তৈরি হচ্ছে বলছেন?

উ: একটা প্ল্যাটফর্ম হিসেবে। ওটিটি দেখার সময়ে আমরা কিন্তু অবচেতনেই একটু থ্রিলিং কিছু আশা করি। মনে হয়, একটু রহস্য থাকবে। আবার টিভি দেখার সময়ে কিন্তু সেই মাইন্ডসেট নিয়ে বসি না।

প্র: কিন্তু আগেও তো পারিবারিক অনেক ধারাবাহিক তৈরি হত...

উ: তার পর থেকে টিভির দর্শক বদলে গিয়েছে, পরিস্থিতি পাল্টে গিয়েছে। তখন সকলের বাড়িতে এত টিভি, মোবাইল ছিল না। ‘হম লোগ’, ‘বুনিয়াদ’-এর রেফারেন্স তো এখনও টানা হয়। কিন্তু তখনকার সঙ্গে এখনকার সময়ে দাঁড়িয়ে তুলনা করা যায় না। এখন যেটা চলছে, সেটাই দেখানো হচ্ছে। কয়েক বছর আগে ‘মহানায়ক’ ধারাবাহিক তৈরি করা হয়েছিল। কী ছিল না তাতে? কিন্তু সেটাও তো সে অর্থে চলল না। আসলে এখন অপশন এত বেড়ে গিয়েছে, একসঙ্গে সব দর্শককে সন্তুষ্ট করা যায় না।

প্র: টিভির বাইরে ব্যক্তি ঋষি কৌশিক কেমন মানুষ?

উ: আমি পশুপ্রেমিক। ঘোড়া খুব প্রিয়। অদ্ভুত কিছু শখ আছে আমার। ঘোড়সওয়ারি করতে ভাল লাগে। টার্গেট শুটিং করতে ভালবাসি। আর-একটা পছন্দের জিনিস শারীরচর্চা।

প্র: অতিমারি তো সকলের জীবনেই প্রভাব ফেলেছে। দীর্ঘ-লকডাউনে কোনও পরিবর্তন এল জীবনে?

উ: (একটু ভেবে) না, তেমন কিছু না। বাড়িতে পড়ে-পড়ে বাইকের ব্যাটারি বসে গিয়েছিল, ওটুকুই।

প্র: আপনার পায়ের তলায় তো সরষে...

উ: হ্যাঁ। একটা সিরিয়াল শেষ হলেই বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়ি। আগে যখন টানা শুটিং করতাম, তখনও বলে রাখতাম আমার কিন্তু বছরে একবার দশ দিনের ছুটি লাগবে। আগে থেকে ব্যাঙ্কিং করে রেখে বেরিয়ে পড়তাম। বাইক ট্রিপে ছবি-ভিডিয়ো তুলি না। শুধু ঘুরে বেড়াই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement