মুখোমুখি রাজ চক্রবর্তী
Raj Chakraborty

Raj Chakraborty Interview: ‘কেউ এগোচ্ছেন দেখলে তাঁকে পিছনে টানার চেষ্টা হবেই’

যে দেশে অমর্ত্য সেন, অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো মানুষদের ট্রোল করা হয়, সেখানে আমি তো তুচ্ছ ব্যক্তি।

Advertisement

দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২১ ০৭:৫৮
Share:

ফাইল চিত্র।

Advertisement

প্র: আপনার সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে খাদ্য বিতরণ, রক্তদান শিবির, দুঃস্থদের সাহায্যের ছবি। এগুলো কি বিরোধীদের কাছে কাজের খতিয়ান দেওয়ার একটা প্রচেষ্টা?

উ: বিরোধী কোথায়? ব্যারাকপুর এখন বিরোধীশূন্য। যাঁরা আছেন, তাঁরা তৃণমূল কংগ্রেসে আসার কথা ভাবছেন। পোস্ট দেওয়ার অন্যতম কারণ সাধারণ মানুষকে জানানো যে, সরকার তাঁদের পাশে আছে। যে কোনও প্রয়োজনে আমাকে ডাকলেই পাওয়া যাবে।

Advertisement

প্র: বিধায়কের এই দায়িত্ব কতটা উপভোগ করছেন?

উ: এটা একটা অন্য জীবন। আমি চিরকালই যে কোনও দায়িত্ব সততার সঙ্গে পালন করে এসেছি। এটাও তাই, শুধু কাজের পরিধি বেড়েছে।

প্র: আপনার তো বোধহয় ৪৮ ঘণ্টায় দিন হলে ভাল হয়?

উ: একেবারেই তাই। অনেক রকমের প্রশাসনিক কাজ থাকে। কোভিড পরিস্থিতিতে সেগুলো বেড়ে গিয়েছে। যেহেতু এই অঞ্চলে অনেক কলকারখানা রয়েছে, তাই শ্রমিকরা লকডাউনে সমস্যায় পড়েছেন। তাঁদের খাবারের সংস্থান করা, এলাকার ভ্যাকসিনেশন প্রক্রিয়া সুষ্ঠু ভাবে চালানো, কেউ সাহায্যের জন্য এলে বিষয়টি শুনে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া... এ সব তো আছেই। ভোটের সময়ে জলনিকাশি ব্যবস্থা ভাল করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, সেই কাজটাও করতে হবে। সে দিন একটা ঘটনায় এত মন ভেঙে গিয়েছিল যে, বলার নয়। সম্প্রতি এক বৃদ্ধার ছবি ভাইরাল হয়েছিল, তাঁকে তাঁর সন্তান ফেলে চলে গিয়েছে। অনেক চেষ্টা করেও ওঁর পরিবারের কারও সন্ধান পাইনি। অগত্যা সরকারি হোমেই বৃদ্ধাকে রাখার বন্দোবস্ত করতে হল। হোমে যাওয়ার সময়ে উনি ভাবছিলেন, নিজের বাড়িতে যাচ্ছেন। খুব খুশি হয়ে গিয়েছিলেন। মুখ ফুটে সত্যিটা বলতে পারিনি!

প্র: আপনি নিজে কি এখন ব্যারাকপুরের বাসিন্দা?

উ: হ্যাঁ। আমাদের হালিশহরের বাড়িতে থাকছি এখন। কলকাতায় থাকলে যাতায়াত করতেই সময় নষ্ট হত। সকাল ১০টায় বেরিয়ে পড়ি, বাড়ি ফিরতে ন’টা বাজে। অনেক জায়গায় হয়তো আমার নিজের না গেলেও চলে, কিন্তু দায়িত্ববোধ থেকেই যাই।

প্র: আপনার এই ব্যস্ততা নিয়ে শুভশ্রী অনুযোগ করছেন না?

উ: একদমই না। ও খুব খুশি। আমরা এখন সকলেই হালিশহরের বাড়িতে রয়েছি। শুভ হালিশহর থেকেই কাজ করছে। ইউভানের এখানে এসে খুব মজা। অনেক খোলামেলা জায়গা পায়।

প্র: এর মধ্যে অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন, তা সত্ত্বেও আপনাকে নিয়ে ট্রোল জারি রয়েছে...

উ: ট্রোলিং নিয়ে আর ভাবি না। এখন সোশ্যাল মিডিয়ার কমেন্ট সেকশন পড়াটাই বন্ধ করে দিয়েছি। যে দেশে অমর্ত্য সেন, অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো মানুষদের ট্রোল করা হয়, সেখানে আমি তো তুচ্ছ ব্যক্তি। লোকের হাতে এখন সময় আছে, তাই এই সব করছে। দেখুন, কেউ এগিয়ে যাচ্ছে দেখলে, তাঁকে পিছনে টানার চেষ্টা করা হবে। আমাকে তাড়া করলে আরও জোরে দৌড়ব, এটা ভুলে যাচ্ছে সকলে।

প্র: বন্ধু রুদ্রনীল ঘোষের সঙ্গে কথা হয়েছে এর মধ্যে?

উ: না, কারও সঙ্গেই এর মধ্যে বেশি কথা বলতে পারিনি।

প্র: তৃণমূল কংগ্রেসের সাংস্কৃতিক শাখার সভাপতি করা হয়েছে আপনাকে। ঠিক কী ধরনের দায়িত্ব ক্ষেত্রে পালন করতে হবে?

উ: দলের তরফ থেকে এই পদটা তৈরি করা হয়েছে। আমাদের তথ্য ও সম্প্রচারের সরকারি দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেই বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হবে। পশ্চিমবঙ্গকে সাংস্কৃতিক হাব হিসেবে গড়ে তোলার একটা চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি প্রাথমিক ভাবে ইন্দ্রনীলদা (সেন), ব্রাত্যদার (বসু) সঙ্গে কথা বলেছি। তবে এগুলো একটু পরে শুরু করব। আগে বিধায়ক হিসেবে জরুরি কাজগুলো শেষ করতে চাই।

প্র: অনেকে মনে করছেন, ‘বিশ্বাস ব্রাদার্স’-এর উপরে চাপ তৈরি করার জন্যই আপনাকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি ছোট পর্দার জট কাটানোর ঘটনায় আপনি মধ্যস্থতাও করেছেন।

উ: কারা এটা মনে করছেন, জানি না। কারও উপরে চাপ দেওয়ার জন্য কিছু করা হচ্ছে না। বরং কোনও জটিলতা থাকলে, সেটা সহজ করে দেওয়াই আমাদের সকলের উদ্দেশ্য।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement