পরিতোষ
‘‘আপনার কি কোনও বাচ্চা আছে?’’
হোটেলের ব্যাঙ্কোয়েটে চা পরিবেশনকারী ওয়েটারের কাছে এমন প্রশ্ন ছিল ‘সুপার ডান্সার’ শোয়ের টিআরপি মামার। বাস্তবেও এতটাই আমুদে। ‘‘কলকাতার প্রতি ঘরেই প্রতিভা লুকিয়ে আছে। হয়তো এখান থেকে শোয়ের বিজয়ীকেও খুঁজে পাব,’’ শহরে ‘সুপার ডান্সার চ্যাপ্টার থ্রি’-এর অডিশনে এসে বলছিলেন পরিতোষ। তাঁর বাবা-মা কলকাতার কোনও এক নাটকে ‘পরিতোষ মুখার্জি’ নামে এক চরিত্রকে দেখে তাঁর নামকরণ করেছিলেন। পরিতোষও ছোট থেকেই নাটক নিয়ে উৎসাহী ছিলেন। কোনও দিন ভাবেননি অ্যাঙ্কর হবেন। প্রায় দশ বছর স্ট্রাগল করার পরেই আসে ‘সুপার ডান্সার’-এর সুযোগ। শুরুটা হয়েছিল অবশ্য ‘হাসি কা তড়কা’র অ্যাঙ্করিং দিয়ে। ‘‘চোদ্দো বছরে রামের বনবাস শেষ হয়েছিল। কিন্তু আমার স্ট্রাগলিং পিরিয়ড আঠেরো বছর চলেছিল,’’ নিজেকে নিয়ে মজা করতেও পরিতোষের দ্বিধা নেই।
ছোটদের রিয়্যালিটি শো নিয়ে অনেক তর্ক-বিতর্ক চলে। সেই প্রসঙ্গে পরিতোষ বলছিলেন, ‘‘মানসিক ভাবে বা লেখাপড়ার ক্ষতি করে কোনও বাচ্চা এখানে আসুক, চাই না। তাই প্রতিটি বাচ্চা স্কুল থেকে অনুমতিপত্র আনলেই তাকে চূড়ান্ত পর্বে বাছাই করা হয়। কখনও লেট নাইট শুটিং রাখা হয় না। শুটিং চলাকালীন বাচ্চারা পড়াশোনাও করতে পারে।’’ কিন্তু এই প্রতিযোগিতাগুলো কি বাচ্চাদের অতিরিক্ত চাপের মধ্যে ফেলে দিচ্ছে না? ‘‘ছোট বয়সেই সেলেব্রিটি হওয়ার দায় কিন্তু বাচ্চাটির নয়, তার পরিবারের। বাচ্চাকে কখনও সেলেব্রিটি হিসেবে ট্রিট করা উচিত নয়। তা হলে বাড়ির বাইরে কখনও সম্মান না পেলে তার মধ্যে হতাশা তৈরি হয়। ছোট বয়সে বোঝার ক্ষমতা থাকে না, কখন, কোথায় কতটা পাওয়া যায়। আমাদের শোয়ে কোনও বাচ্চা ভাল পারফর্ম না করলে তাকে ডিপ্রেস করা হয় না। বরং এখানে এসে গ্রুমড হওয়ার সুযোগ পায়।’’
কমেডি আর সঞ্চালনা— এই প্যাকেজিং আরও অনেকেরই আছে। তাঁর সবচেয়ে জোরালো প্রতিদ্বন্দ্বী কে? জানালেন, তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী তিনি নিজেই। ‘‘কপিল শর্মাকে শ্রদ্ধা করি। তাঁর মতো সেন্স অব হিউমার অন্য কারও নেই,’’ সোজাসাপ্টা পরিতোষ। ছোট পর্দার পাশাপাশি বড় পর্দাতেও কাজ করতে চান। আর চান, সিঙ্গল থেকে মিঙ্গলড হতে। পরিতোষের অবসরের সঙ্গী তাঁর শায়েরি। চলতি বছরেই প্রথম কবিতার বই প্রকাশ হবে। রোম্যান্টিক রচনার বুননেই তিনি এখন বিহ্বল।