পরমব্রত। ছবি: তন্ময় সেন
প্র: প্রোফাইল পিকচার ‘পাসওয়ার্ড’ ও ‘সত্যান্বেষী ব্যোমকেশ’-এর মধ্যে ভাগ হয়ে গিয়েছে। পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ও কি নানা কাজে ভাগাভাগি হয়ে গিয়েছেন?
উ: সে তো হয়েছেই।
প্র: অভিনয়ের চেয়ে পরিচালনা-প্রযোজনা মুখ্য হয়ে উঠেছে?
উ: সেটা ঠিক নয়। যখন পরিচালনা-প্রযোজনার কাজে থাকি, তখন খুবই ব্যতিব্যস্ত থাকি। অভিনয় করলে বরং অনেক বেশি রিল্যাক্সড ফিল করি। পুজোর ছবি দু’টি ছাড়াও ‘বনি’, ‘অন্তর্ধান’-এ মুখ্য চরিত্র করেছি। ‘সাগরদ্বীপে যকের ধন’ রিলিজ়ের অপেক্ষায়। অভিনয় মুখ্য ছিল, সেটাই আছে। তবে বিচরণের ক্ষেত্রগুলো ভাগ হয়েছে। আমিও নিজেকে ভাগ করে নিয়েছি (হাসি)।
প্র: অসুবিধে হয় না?
উ: এই মুহূর্তে মাল্টিটাস্কিংটা উপভোগ করছি। বরং এটা না থাকলে আমার অসুবিধে হবে।
প্র: আনন্দ প্লাসের সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, নতুন ইনিংস খেলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কিন্তু এই ফাঁকে অন্যরা এগিয়ে গিয়েছেন। বড় পর্দায় কম আসা কি প্রভাব ফেলে?
উ: ২০১৭ থেকে এখনও অবধি আমি কিন্তু ‘সমান্তরাল’, ‘যকের ধন’-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ ছবি করেছি। কিন্তু বড় প্রযোজক বা পরিচালকের ছবিতে আমাকে তুলনায় কম দেখা গিয়েছে। এর মধ্যে পুজোর ছবিও ছিল না। তবে নতুন প্রজন্মের যারা, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে পরিচিত, তারা কিন্তু এ কথা বলে না। মধ্যবয়স্ক বা বয়স্ক ব্যক্তিদের কাছ থেকে মূলত এই অভিযোগ শুনেছি।
প্র: ব্যোমকেশের মতো চরিত্র এত দেরিতে আপনার কাছে এল কেন?
উ: আসলে দেরি হয়নি। ২০১৩ সালেই প্রথম প্রস্তাব এসেছিল। শুধু অভিনয় নয়, পরিচালনারও প্রস্তাব ছিল। কিন্তু ওই সময়ে আমি মাল্টিটাস্কিং করতাম না। তাই সব দায়িত্ব তখন সামলে উঠতে পারব কি না, বুঝতে পারিনি।
প্র: এ বার তবে কেন রাজি হলেন?
উ: ব্যোমকেশ করার লোভ যে ছিল না, সেটা এক বারও বলব না। আমি যে ব্যোমকেশটা করেছি, সেটা যিশু (সেনগুপ্ত) যে ভাবে চরিত্রটা ফুটিয়ে তুলেছে অনেকটা সে ভাবে। এ বার প্রস্তাব পেয়ে আর ঠেলিনি। কারণ এত বছর ধরে জনপ্রিয়তার পাশাপাশি ব্যোমকেশের বিশ্বাসযোগ্যতাও তৈরি হয়েছে। অভিনেতা হিসেবে নির্ভরযোগ্য কিছু করার লোভ থাকে।
প্র: আপনার পছন্দের সেলুলয়েডের ব্যোমকেশ কে?
উ: ব্যোমকেশ পড়ে আমার চোখে যে ইমেজ ভাসে, রজিত কপূর তাতে খুব মানানসই। আর অন্য চরিত্রে আবীরকে (চট্টোপাধ্যায়) যতটা ভাল লাগে, তার চেয়ে বেশি ভাল লাগে ব্যোমকেশ হিসেবে। তবে শেষের দিকের মাচো নয়, প্রথম দিকের গৃহস্থ ব্যোমকেশ হিসেবে আবীরকে বেশি ভাল লাগে।
প্র: দেব কি বন্ধু না শুধুই সহকর্মী?
উ: ইন্ডাস্ট্রির কেউই আমার তেমন বন্ধু নয়। তবে অনুপম (রায়)-পিয়াকে বন্ধু বলতে পারি। নরমে-গরমে হলেও সৃজিত (মুখোপাধ্যায়), রুদ্রনীল (ঘোষ) বন্ধু। সে দিক থেকে, দেবের সঙ্গে মধুর পেশাদার সম্পর্ক।
প্র: প্রযোজক দেবের কাছ থেকে কিছু শিখতে চান?
উ: আমি শুধু ডিজিটালে প্রোডিউস করেছি। আর ও বড় পর্দায় প্রোডিউস করেছে। ওর ছবির বাজেট-স্কেল অনেক বড়। ওই স্কেলে কোনও দিন ছবি করলে, প্রচারের স্ট্র্যাটেজি কিন্তু ওর কাছ থেকে শিখব। কারণ এই কাজটা ও অনেকটা সময় দিয়ে, প্যাশন দিয়ে করে।
প্র: আগামী প্রজেক্ট কোনগুলো?
উ: কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে একটা ছবির কথা চলছে। আমার পরবর্তী ছবি একটু বড় মাপের। সেটা লেখালিখির কাজ চলছে।
প্র: আপনি কি ম্যারেজ মেটিরিয়াল?
উ: আমি ভীষণ ভাবে ম্যারেজ মেটিরিয়াল।
প্র: তা হলে এখনও সময় নিচ্ছেন?
উ: আমি যে সম্পর্কে আছি, বিয়ের চেয়ে সেটা আলাদা কিছু নয়। তা বলে বিয়ে নামক প্রাতিষ্ঠানিকতাকে উপেক্ষাও করি না। সময় নিয়ে দু’জনে দেখতে চেয়েছিলাম। সেটার প্রয়োজনীয়তা এখনও হয়তো আছে। তবে ভবিষ্যতে হয়তো আমরা বিয়ের পথেও যাব।
প্র: ইকা কি বাংলা ছবি দেখেন?
উ: আমাদের ছবি দেখে না (হাসি)। ঋত্বিক ঘটক, সত্যজিৎ রায়ের ছবি দেখে ওই যুগটা, ওই লেগাসি বোঝার চেষ্টা করে।
প্র: আপনার কাছে কোনও রাজনৈতিক দল থেকে প্রস্তাব এসেছিল?
উ: আমার কাছে রাজনীতিটা খুব ব্যক্তিগত। তার সঙ্গে দলীয় রাজনীতির সম্পর্ক নেই। কোনও দিনই কোনও রাজনৈতিক দলের তরফে আমার কাছে প্রস্তাব আসেনি।
প্র: আপনার ছবির অজিতের (রুদ্রনীল ঘোষ) রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
উ: ও যে রাজনৈতিক বিশ্বাসে বিশ্বাসী ছিল বলে জানি, সেখানে বিশ্বাস থাকলে যে দলে যাওয়ার জল্পনা রয়েছে, সেটা সম্ভব নয়। তবে ও একজন স্বতন্ত্র মানুষ। ভবিষ্যতে কী হবে, সেটা কেউই জানে না।
প্র: পুজোর কোন ছবিটা আগে দেখবেন?
উ: ‘গুমনামী’। গুমনামী বাবার তত্ত্বে আমি নিজে বিশ্বাস করি না। সৃজিত কী ভাবে পুরো বিষয়টা সাজিয়েছে, কী দেখিয়েছে, সেটা নিয়ে কৌতূহল রয়েছে।