দেবালয়। ছবি: অর্পিতা প্রামাণিক
প্র: দ্বিতীয় ছবি করার জন্য তিন বছর সময় নিলেন...
উ: আসলে প্রথম ছবি (‘রোগা হওয়ার সহজ উপায়’) একদম চলেনি। তাই নিজেকে একটু সময় দিচ্ছিলাম। কোন ভাষায় গল্প বলব, সেটা নিয়েও ভাবনাচিন্তা চলছিল।
প্র: ‘বিদায় ব্যোমকেশ’-এর পিছনের ভাবনাটা কী?
উ: মূলত দুটো। আমি নিজে গোয়েন্দা গল্পের বড় ভক্ত। দেশি-বিদেশি সব থ্রিলার আমার ভাল লাগে। আর দ্বিতীয়ত, ব্যোমকেশ আমার কাছে তার গল্পের চেয়েও বড়। ব্যোমকেশকে নিয়ে এত ছবি হচ্ছে, তার সবই আমি দেখি। সেখান থেকেই গল্পটা মাথায় আসে।
প্র: ব্যোমকেশকে বৃদ্ধ দেখানোর ভাবনা কেন?
উ: দর্শক যে এত ব্যোমকেশের ছবি দেখছেন, সেটা কিন্তু শুধু তার গল্পের জন্য নয়। চরিত্রটার জন্য। আর ব্যোমকেশকে বরাবর আমার সাংসারিক মনে হয়। যেটা ফেলুদাকে নিয়ে কখনও ভাবিনি। আমার নিজের যেমন বয়স বাড়ছে, ব্যোমকেশেরও তেমনই বয়স বাড়ছে। আমার এক বন্ধুকে আমার স্ত্রী বলেন, ‘এই হল তোমার অজিত!’ আর একটা বিষয়, শার্লক হোমসকে যে ভাবে বিবিসি ডিকনস্ট্রাক্ট করেছে, আমরাও করব না কেন! সমসাময়িক প্রজন্মের জন্য মৌলিক গোয়েন্দা চরিত্র তৈরি করতে চাই, যেটা এই মুহূর্তে নেই।
প্র: আবীর চট্টোপাধ্যায় বরাবরই প্রথম পছন্দ ছিলেন?
উ: হ্যাঁ, আবীর খুব ভাল কাজ করেছে। তবে সত্যি কথা বলতে, আমি প্রথমে গল্পটা খুব ছোট স্কেলে ভেবেছিলাম। প্রস্থেটিক করার বাজেট ও ঝামেলা নেওয়ার সাধ্য ছিল না। কিন্তু প্রযোজনা সংস্থার সাহায্যে সেই অসম্ভবটা সম্ভব হয়েছে। মেকআপ শিল্পী ধনঞ্জয় প্রজাপতি শিডিউল দেখে বলেছিলেন, ‘এটা তো দেড় মাসের ছবি। কুড়ি দিনে হয় নাকি?’ আমরা কিন্তু কুড়ি দিনেই কাজ শেষ করেছি (হাসি)।
প্র: ‘অভিশপ্ত নাইটি’, ‘দুপুর ঠাকুরপো সিজ়ন ওয়ান’, ‘হোলি ফাক’... আপনার লেখা চিত্রনাট্য যৌনতাপূর্ণ...
উ: ‘দুপুর ঠাকুরপো’ আর ‘হোলি ফাক’-এর চিত্রনাট্য আমার লেখা নয়। আমি পরিচালনা করেছি সিরিজ় দুটোর। ‘অভিশপ্ত নাইটি’ যখন লিখেছি, তখন কিন্তু ওয়েব এতটা সক্রিয় হয়নি। ছবির ক্ষেত্রে সেন্সরের ভয় ছিল। বাংলার রাজনীতিও একটু যেন থমকে গিয়েছিল। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে মনে হয়েছিল, এমন কিছু লিখব যেটা মধ্যবিত্ত বাঙালির মূল্যবোধকে আঘাত করবে। আমার কাছে গোটা ব্যাপারটাই একটা পলিটিক্যাল স্টেটমেন্ট। সুড়সুড়ি দেওয়ার কোনও উদ্দেশ্য ছিল না।
প্র: বিরসা দাশগুপ্ত আপনার খুব ভাল বন্ধু। এই ছবির সঙ্গে তিনি কোনও ভাবে যুক্ত?
উ: না, কোনও ভাবেই নয়। তবে ও ছবিটার খুব প্রচার করছে।
প্র: শুনেছি, আপনি আর বিরসা ইন্ডাস্ট্রির বাকিদের সম্পর্কে বড্ড গসিপ করেন?
উ: (জোরে হাসি) একদমই না। তার কারণ বিরসা আর আমি পারিবারিক বন্ধু। তাই আমাদের যখনই দেখা হয়, পরিবার সঙ্গেই থাকে। হাসি-ঠাট্টা, খাওয়াদাওয়া, হুল্লোড় হয়। তবে কাজের কথা একদমই হয় না।
প্র: ট্রোলড হওয়ার ভয় পান?
উ: আমার ছবি নিয়ে ভাল বলুক, খারাপ বলুক ক্ষতি নেই। কিন্তু নজরে না থাকার ভয় পাই। ছবি এল আর চলে গেল... সেটা হলে আমার জীবনের দুটো বছরও তার সঙ্গে বিফলে চলে যায়।
প্র: পরের ছবি নিয়ে ভাবছেন?
উ: ভাবনাচিন্তা চলছে। এই মুহূর্তে কমেডি বানানোর পরিকল্পনা নেই। একটা লাভস্টোরি করতে চাই। অনেক দিনের ইচ্ছে (হাসি)।