Swastika Ghosh: অডিশন দিতে এসে বাড়ি ফিরতে পারিনি, স্টেশনে রাত কাটিয়েছি, বললেন স্বস্তিকা

নতুন চরিত্রের জন্য তিন দিনে স্কুটি চালানো শিখেছেন ছোট পর্দার অভিনেত্রী স্বস্তিকা ঘোষ। অবসরে ভরতনাট্যম নিয়েও চর্চা করেন।

Advertisement

নবনীতা দত্ত

শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৮:৫২
Share:

স্বস্তিকা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার রায়দিঘির মেয়ে স্বস্তিকা ঘোষ। সদ্য উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছেন তিনি। বছর দুয়েক হল অভিনয় জগতে এসেছেন। এর মধ্যেই ‘অনুরাগের ছোঁয়া’ ধারাবাহিকে মুখ্য চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেয়ে গিয়েছেন স্বস্তিকা। ‘সরস্বতীর প্রেম’ ধারাবাহিক দিয়ে তাঁর অভিনয় জীবনে পথচলা শুরু। ছোটবেলা থেকেই অভিনেত্রী হওয়ার ইচ্ছে ছিল। স্বস্তিকার কথায়, ‘‘মা-বাবা, দিদি, বন্ধুরা সকলেই খুব উৎসাহ জুগিয়েছে। ওরা সবসময়েই বলত, ‘তুই পারবি, তুই অনেক বড় হবি’ আর আমার মধ্যেও সেই জেদটা ছিল। বাবা-মা দু’জনেই গানের সঙ্গে যুক্ত। মা রবীন্দ্রসঙ্গীত নিয়ে চর্চা করেন। আমিও ভরতনাট্যম শিখেছি, ফোর্থ ইয়ার শেষ করেছি। ফলে গোড়া থেকেই নাচ-গান, অভিনয়জগতের প্রতি আকর্ষণ ছিল। তিন বছর আগে অডিশন দিতে শুরু করি। প্রথম প্রথম রায়দিঘি থেকে বাবার সঙ্গে অডিশন দিতে আসতাম কলকাতায়। ট্রেনে করে আসতে সময় লাগত তিন ঘণ্টা আবার বাড়ি যেতে আরও তিন ঘণ্টা। এমনও অনেক দিন হয়েছে যে, বাড়ি ফিরতে পারিনি। দু’-তিন বার তো স্টেশনেই রাত কাটাতে হয়েছে। আমার বাবাও খুব কষ্ট করেছেন তখন আমার সঙ্গে।’’

Advertisement

বাবা, মা, দিদি, ভাই ও ঠাকুমাকে নিয়ে রায়দিঘিতে তাঁর সুন্দর পরিবার। ছুটিছাটায় বাড়িতে গেলে ভাই আর দিদির সঙ্গেই সময় কেটে যায়। স্বস্তিকা এখন টালিগঞ্জে বাবার সঙ্গে থাকেন। তবে আর কিছু দিনের মধ্যে পরিবারকে নিজের কাছে এনে রাখার ইচ্ছে রয়েছে তাঁর। ‘অনুরাগের ছোঁয়া’য় যখন সে দীপা (দীপান্বিতা) চরিত্রের জন্য ডাক পায়, তখন যেমন খুব আনন্দ হয়েছিল, তেমনই উত্তেজনাও কাজ করেছে। ‘‘এই চরিত্রের জন্য আমার মেকআপে টোন ডাউন করা হয়েছে। কিন্তু তাতে আমার কখনও খারাপ লাগেনি বা কিছু মনে হয়নি। বরং চরিত্রের জন্য এ ভাবে প্রস্তুতি নিতে বেশ ভাল লেগেছে। নতুন ধরনের কিছু করার সাহস পেয়েছি মনে মনে। এই চরিত্রটার জন্য খাটতেও হয়েছে। তিন দিনে স্কুটি চালানো শিখেছি আমি।’’

চরিত্রের জন্য খাটতে সদাপ্রস্তুত স্বস্তিকা। কিন্তু বাড়িতে সময় পেলেই রূপচর্চা আর ঘুম। ‘‘অবসর তো সে ভাবে পাই না। পেলে বিশ্রাম নিই। মাঝেমাঝে নাচ প্র্যাকটিস করি। পড়াশোনা করতে কোনও দিনই সে ভাবে ভাল লাগত না। তবে গল্পের বই পড়ি। আর লকডাউনে ঘরকন্নার অনেক কাজ শিখে গিয়েছি। আমি এমনিতে ভীষণ অগোছালো। রান্নাবান্না কিছুই পারতাম না। কিন্তু লকডাউনে সব শিখে গিয়েছি। এখন বাসন মাজাটাও এনজয় করি।’’

Advertisement

তবে বাড়িতে লকডাউনে খুব বোর হয়েছেন স্বস্তিকা। সেটে থাকাই বেশি উপভোগ করেন তিনি। তার সঙ্গে মাঝেমাঝে টেনশনও হয়। ‘‘অনেক সময়ে হয়তো ঠিক করে শট দিতে পারি না, তখন খুব চিন্তা হয়। কী করব বুঝতে পারি না। কিন্তু আমার সহ-অভিনেতারা ও পরিচালক খুব সাহায্য করেন। তাঁরা আমায় সাহস জোগান।’’ সহ-অভিনেতা দিব্যজ্যোতি দত্তর সঙ্গেও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তাঁর। শুটিংয়ের ফাঁকে যেমন সিন নিয়ে আলোচনা চলে, তেমনই হয় গানের লড়াই। ‘‘ক’দিন আগেই দিব্যজ্যোতির সঙ্গে কথা হচ্ছিল আমার চরিত্রটা নিয়ে। আমি যে দিন অডিশন দিতে যাই এই চরিত্রের জন্য, সে দিন আমার আগে আরও পনেরো-ষোলো জন অডিশন দিয়েছিল।’’ কিন্তু তার পরে চরিত্রটা পেয়ে যান স্বস্তিকা। ভোর ছ’টায় উঠে প্রস্তুত হন সেটে যাওয়ার জন্য। সাতটা নাগাদ থাকে কলটাইম।

কিন্তু তাতে কোনও অসুবিধে হয় না তাঁর। রায়দিঘি থেকে কলকাতায় এসে টিকে থাকার লড়াইয়ে কখনও ভেঙে পড়েন না তিনি। বরং এই শহরে তাঁকে যে নিজের জায়গা করতে হবে, সেই জেদটাই তাঁকে
সব সময়ে মনোবল জুগিয়ে যায়। আর সব সময়ে তাঁর মুখে লেগে থাকে হাসি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement