সন্ধ্যা
প্র: নতুন ওয়েব সিরিজ়ে একঝাঁক তারকার মাঝে আপনি। ছবিও কম করেন। কেন?
উ: আসলে আমি কোনও দিনই একগুচ্ছ কাজ করতে হবে বলে প্রতিযোগিতায় নামিনি। পরপর ছবি না করলেও আমার চলবে। কিন্তু মনমতো চরিত্র না পেলে করতে পারব না আমি। এর জন্য হয়তো কম কাজ পেয়েছি, কম স্ক্রিনটাইম পেয়েছি, টাইপকাস্ট হয়েছি। কিন্তু সাফার করলেও নিজের সিদ্ধান্ত বদলাইনি। ‘মেন্টালহুড’-এ করিশ্মা কপূর, তিলোত্তমা সোম, শ্রুতি শেঠ, শিল্পা শুক্লদের মাঝে আমিও রয়েছি। আমার কাজ যদি ভাল হয়, নিশ্চয়ই চোখে পড়ব। অনেকেই ভেবেছিলেন, এটা মেল ব্যাশিং, ফেমিনিস্ট সিরিজ় হতে চলেছে। আসলে তা নয় একেবারেই।
প্র: ‘সাথিয়া’তে একটি হাসিখুশি মেয়ে, ‘পেজ থ্রি’-তে খুব বোল্ড একটি চরিত্র, বিভিন্ন ধরনের কাজ করেছেন আপনি। তা-ও টাইপকাস্ট হলেন কেন?
উ: হ্যাঁ, কারণ দর্শক-পরিচালকরা আমায় যখন যেমন চরিত্রে দেখতেন, ধরে নিতেন ‘ও শুধু এটাই পারে’। মিষ্টি মেয়ে থেকে বোল্ড-বিন্দাস ইমেজে পরিচিত হয়ে গিয়েছিলাম এক সময়। ধীরে ধীরে অবশ্য ছবিটা পাল্টায়। বলিউডের গল্প বলার ধরনও। তাই হয়তো ‘হানিমুন ট্রাভেলস প্রাইভেট লিমিটেড’, ‘অ্যাংরি ইন্ডিয়ান গডেসেস’, ‘সেকশন থ্রিসেভেনটিফাইভ’-এর মতো বিভিন্ন ধরনের ছবির অংশ হতে পারি এখন। আদিল হুসেনের সঙ্গে ‘নির্বাণ ইন’-এ কাজ করেও খুব আনন্দ পেয়েছি সম্প্রতি। আসলে এখন একটা ব্রিজ তৈরির চেষ্টা চলছে। আর ওয়েব প্ল্যাটফর্ম জনপ্রিয় হয়ে ওঠাটা আমাদের মতো অভিনেতাদের কাছে উপরি পাওনা। এখন শুধু নায়িকাদের ভাল দেখাচ্ছে কি না, তা দিয়ে আর শো চলে না। সেটাই আশার কথা।
প্র: ‘স্বাভিমান’, ‘জস্সি জ্যায়সি কোই নেহি’র মতো ধারাবাহিকে কাজ করেছেন। টেলিভিশন ছেড়ে দিলেন কেন?
উ: কারণ সেখানে কেন্দ্রীয় চরিত্র পেতে গেলে আপনাকে পারফেক্ট বৌমার চরিত্র করতে হবে। না হলে পার্শ্বচরিত্র। আমার কাজের ধরন বা চাহিদার সঙ্গে মেলাতে পারছিলাম না। তাই ব্রেক নিতে বাধ্য হয়েছিলাম। এখন আমি সিরিয়াল দেখি না, তাই বলতে পারব না পরিস্থিতি কতটা বদলেছে। আমার বাড়িতে টেলিভিশনও নেই, খবরের কাগজও নিই না।
প্র: কাজের জায়গায় হেনস্থার অভিযোগে আপনি অলোকনাথের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন। সেই ঘটনার কোনও প্রভাব কি কাজের ক্ষেত্রে পড়েছে?
উ: না। বরং অনেকেই আমার পিঠ চাপড়ে দিয়েছিলেন সাহস করে মুখ খুলতে পেরেছিলাম বলে। কারণ অলোকনাথের মতো আরও অনেক মুখোশধারী এখনও ঘুরে বেড়াচ্ছে ইন্ডাস্ট্রিতে। যাদের মুখোশ টেনে খোলার মতো কেউ নেই। এ ব্যাপারে এখনও ইন্ডাস্ট্রি একজোট হতে পারেনি। সকলের হয়তো সেই পরিস্থিতি থাকেও না, তবে আমি আমার কাজটুকু করেছিলাম। কারণ যে বা যাঁরা এমন পরিস্থিতির শিকার, তাঁদের পাশে দাঁড়ানোটা কর্তব্য বলে মনে করি আমি।
প্র: এর পর কী করছেন? এখন তো শুটিং বন্ধ, বাড়িতেই বা কী ভাবে সময় কাটাচ্ছেন?
উ: আমার একটা ছবির শুটিং গত সপ্তাহেই শুরু হওয়ার কথা ছিল, যা এখন পিছিয়ে গিয়েছে। মহারাষ্ট্রের অবস্থা খুব খারাপ, তাই বাড়ি থেকে বেরোনো পুরোপুরি বন্ধ। আমার পরিবার দিল্লিতে, তাঁদের কাছে যাওয়ারও উপায় নেই। আমার বাড়ির কাজ আর রান্না করার হাউস-হেল্পদেরও ছুটি দিয়ে দিয়েছি। তাই নিজের কাজ নিজে করে অনেকটা সময় কেটে যাচ্ছে।
প্র: আপনি তো একটা বাংলা ছবিতেও অভিনয় করেছিলেন...
উ: হ্যাঁ, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে, ‘ব্রিজ’ বলে একটা ছবিতে। ওঁর কাছ থেকে পাওয়া কমপ্লিমেন্ট এবং ওঁর সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করার অভিজ্ঞতা আমার কেরিয়ারের স্মরণীয় মুহূর্ত হয়ে থাকবে।