বরুণ
প্র: এত এনার্জি রাখেন কোথায়?
উ: (হেসে)আরে, অপনে পকেট মে রাখতা হুঁ। কিসিকো জরুরত পড়ে তো দে ভি দেতা হুঁ। আরে না না, মজা করছিলাম। আসলে ভাল খাবারদাবার মেলে। সুস্থসবল থাকি। তাই এনার্জিও অফুরান।
প্র: প্রেমের গল্প আর গল্পে প্রেমের মধ্যে ফারাকটা ঠিক কোথায়?
উ: বড় পার্থক্য। প্রেমের গল্প বোঝাতে গেলে অনেক সময়েই দেখানো হয়, কী ভাবে কেউ কারও প্রেমে পড়ল। কিন্তু এখানে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে, প্রেমের মানে। আমি যদি জিজ্ঞেস করি, প্রেমে পড়ে কেমন লেগেছে? আপনি এক রকম বলবেন, অন্য কেউ আর এক রকম। কিন্তু ছবিটায় প্রেম সম্পর্কে সম্যক একটা ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।
প্র: সুজিত সরকারের মতে, ছবিটা নিঃশর্ত ভালবাসার গল্প। নিজে কখনও তা উপলব্ধি করেছেন?
উ: মা-বাবা, দাদার প্রতি ভালবাসা তো নিঃশর্তই। ছোটবেলার দু’-এক জন বন্ধু আছে, যাদের জন্য আমি সব কিছু করতে পারি। তারাও একই ভাবে আমার জন্য করতে পারে। আমরা তো কত জনকে বলি, ‘তোমাকে ভালবাসি’। কিন্তু তার কতটা সত্যি? তবে এটা কিন্তু ঠিক যে, নিঃশর্ত ভালবাসা কখনও মিথ্যে হতে পারে না।
প্র: আপনার কাছে ভালবাসা কী? চিত্রনাট্যের সংলাপ বলে বসবেন না যেন!
উ: (হেসে)আমার কাছে ভালবাসা মানে আনুগত্য, বিশ্বাস, নিজেকে ভুলে কারও জন্য সবটা দিতে পারা। এবং অবশ্যই যা-ই হয়ে যাক না কেন, তার পাশে দাঁড়ানো।
প্র: ‘জুড়ুয়া টু’র পর এই যে ‘অক্টোবর’ বা ‘সুই ধাগা’র মতো ছবি বাছছেন, সেটা কি ভেবেচিন্তে?
উ: বেশির ভাগ ছবিতেই আমার চরিত্রের কোনও পেশা নেই। কাজই করে না সে! (হেসে) নিকম্মা, হাসি-খুশি, এ দিক ও দিক ঘুরে বেড়ায়... এই ধরনের ছবি বাছার একটা কারণ অবশ্যই পেশা। মানে ‘অক্টোবর’-এ ড্যান হোটেলে কাজ করে, ‘সুই...’তে আমি শ্রমিক। আসলে ওই একই ধরনের চরিত্র বারবার করতেও চাইছি না। এটা অবশ্যই ঠিক যে, আমি নাচ-গান করতে খুবই ভালবাসি। লোকে যদি আমার ছবি দেখে হাসে, তা হলে কেনই বা আমার ভাল লাগবে না? তবে চরিত্রের পেশা ভিন্ন হলে নিজেকে নানা ভাবে ফুটিয়ে তুলতেও পারব। এমনকী কমেডিগুলোও বদলে বদলে যাবে। আর কমেডি করতে ভালবাসার মানেই তো এটা নয় যে, শুধু তা-ই করে যেতে হবে! দেখুন, ছ’বছরে ন’টা ছবিতে অভিনয় করেছি। পাঠকদের বলতে চাই, এত তাড়াতাড়ি আমাকে বিচার করবেন না। সবে তো শুরু...
প্র: এই ছবিতে আপনার লুক আলাদা। যাকে বলে স্বপ্নালু...
উ: (হেসে) আপনার ভাল লেগেছে, না? এটার পুরো কৃতিত্বই সুজিত স্যরের। যত বারই মেকআপ করতাম, এসে মুছে দিতেন!
প্র: কমেডির বাইরে অন্য ছবির জন্য কী ভাবে প্রস্তুতি নেন?
উ: একটাই পথ। নিজেকে পুরোপুরি পরিচালকের হাতে সঁপে দেওয়া। সুজিত স্যর আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘তুমি কি নিজেকে একেবারে ছেড়ে দিতে পারবে?’ এক কথায় রাজি হয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু বিশ্বাস করুন, জীবনেও ভাবিনি যে, নিজেকে এতটা ছেড়ে দিতে হবে (হেসে)! যে ভাবে সকালে উঠে শুটিং করতে যেতাম, সে ভাবেই ফিরে আসতাম। কখনও বলতেন, ‘ঘুমোবে না’। কখনও আবার ‘স্নান করবে না’। এমনকী আমার তো চুল ঘেঁটে একসা করে দিতেন।
প্র: সমসাময়িক অভিনেতাদের মধ্যে আপনিই সবচেয়ে সফল। সাফল্যের মন্ত্রটা কী?
উ: ‘অক্টোবর’-ও যেন সফল হয়। তা হলে সেই সাফল্যটা ‘সুই ধাগা’কেও সাহায্য করবে। আর সত্যি বলতে কী, সাফল্যের কোনও মন্ত্র হয় না। বরং যা করবেন, সেটা যেন ভিতর থেকে আসে। আমার বাবা আমাকে একটা জিনিস শিখিয়েছেন— কঠিন পরিশ্রম। জীবনে কোনও দিনই কঠিন পরিশ্রমের পথটা কেউ বদলে দিতে পারবে না। কেউ যদি দুনিয়ার সেরা প্রতিভাবানও হয়ে থাকেন, পরিশ্রম না করলে সেই প্রতিভা কোথাও দাঁড়াবে না। আমি এটা বলছি না যে, আমার সমসাময়িক যাঁরা, তাঁরা খাটেন না। তাঁরা হয়তো আমার চেয়ে বেশিই খাটেন। কিন্তু আমার মনে হয়, লক্ষ্য হওয়া উচিত একটাই। মস্তিষ্ক, শরীর, হৃদয় যেন সেই লক্ষ্যেই অবিরাম কাজ করতে থাকে। আর আমার লক্ষ্য হল, লোককে বিনোদন দেওয়া।
প্র: কখনও কি মনে হয়, অমিতাভ বচ্চন, অক্ষয়কুমার বা খানেদের মতো নিজের সাম্রাজ্য তৈরি করতে পারবেন?
উ: এটা আসলে মানুষের বিশ্বাস। আমির খানের যে ছবিই আসুক, লোকে দেখতে যাবেই। কারণ সেই বিশ্বাসটা আছে। সেই বিশ্বাসই মানুষের মধ্যে তৈরি করতে হবে... যা-ই করি, লোকে বিশ্বাস করে দেখতে আসবে।
প্র: তা হলে বলছেন যে, পঞ্চাশ বছর বয়সেও আপনি দিব্যি রোম্যান্টিক হিরোর চরিত্রে অভিনয় করে যাবেন?
উ: অবশ্যই। তবে সে ক্ষেত্রে চরিত্রটা হতে হবে অন্য ধরনের রোম্যান্টিক হিরো। কলেজছাত্র হতে চাইব না। অবশ্য ওই যে কথায় বলে না, ‘নেভার সে নেভার’।
প্র: ইন্ডাস্ট্রিতে ইদানীং লোকজন তো লুকিয়ে বিয়ে করছেন। আপনারটাও কি টুইটার থেকেই জানতে হবে?
উ: না না। আমাকে আজ অবধি পালিয়ে বা লুকিয়ে কিছু করতে হয়নি। হয়তো মিডিয়ার সামনে ঘটা করে বিয়ে করব না। কিন্তু আপনারা অবশ্যই আগে থেকে জানতে পারবেন। বলেই বিয়েটা করব।
প্র: তা হলে কবে করছেন?
উ: আরে, তারিখই পাচ্ছি না!