রণবীর শোরে
প্র: মঞ্চ, বড় পর্দায় চুটিয়ে কাজ করেছেন। অভিনেতা হিসেবে ওয়েব প্ল্যাটফর্ম কতটা উপভোগ করেন এখন?
উ: ওয়েবে নিজের চরিত্রটাকে ভাল করে এক্সপ্লোর করার সুযোগ থাকে। সিরিজ়ের দৈর্ঘ্য বেশি হওয়ায় পরিশ্রমও অনেক বেশি করতে হয়। তবে বিভিন্ন মাধ্যমের পার্থক্য দর্শকের কাছে যতটা স্পষ্ট, অভিনেতা হিসেবে আমাদের কাছে ততটা নয়।
প্র: ‘তব্বর’-এ আপনার চরিত্রটা কেমন?
উ: অজিত সোধি নামে এক ব্যবসায়ী-রাজনীতিকের চরিত্র। সিরিজ়টা আসলে একটা পরিবারের গল্প বলে। কোনও ব্যক্তি নিজের পরিবারের জন্য কত দূর যেতে পারে, তা নিয়েই কাহিনি। পরিচালক অজিতপাল সিংহের কাজের ব্যাপারে অনেক শুনেছিলাম। প্রথম বার কাজ করে খুব ভাল লেগেছে। তা ছাড়া পবন মলহোত্র, সুপ্রিয়া পাঠক, কনওয়ালজিৎ সিংহের মতো অভিনেতারা রয়েছেন। ওঁদের সঙ্গে এক ফ্রেমে দাঁড়ানোই আমার কাছে অত্যন্ত সম্মানের।
প্র: দেশ জুড়ে ধীরে ধীরে খুলেছে সিনেমা হল। প্রেক্ষাগৃহের ভবিষ্যৎ নিয়ে আপনি কতটা আশাবাদী?
উ: সিনেমা হল তার নিজের জায়গাতেই থাকবে। টেলিভিশন আসার পরেও এই একই প্রশ্ন উঠেছিল। স্যাটেলাইটসের দৌলতে অসংখ্য চ্যানেল আসার পরেও কিন্তু সিনেমা হল ব্যবসা করে যেতে পেরেছে। এখন দর্শকের কাছে অপশন আরও বেড়ে গিয়েছে, নির্মাতাদের কাছেও তাই। কারণ নির্মাতারাও বিভিন্ন উপায়ে আরও বেশি সংখ্যক দর্শকের কাছে পৌঁছতে পারছেন। এ সবের মধ্যে কোনও দ্বন্দ্ব আছে বলে আমার মনে হয় না।
প্র: আপনি তো দীর্ঘ সময় ধরে মঞ্চাভিনয়ের সঙ্গেও যুক্ত। থিয়েটারের অবস্থা কি ততটা আশাব্যঞ্জক?
উ: থিয়েটারের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ঠিক উল্টো। যে কোনও ধরনের লাইভ পারফর্মিং আর্টের ক্ষেত্রেই আর আগের মতো সহযোগিতা, কদর কোনওটাই পাওয়া যায় না। দুর্ভাগ্যজনক অবস্থা। প্রাইভেট বা কর্পোরেট সাপোর্ট হোক কিংবা সরকারি সাহায্য, থিয়েটারের পাশে দাঁড়ানো খুব জরুরি। নাট্যনির্মাতাদের দর্শক টেনে আনার ক্ষমতা রাখতে হবে। সেখানে মধ্যমানের চর্চা করলে সেটা থিয়েটারেরই ক্ষতি। লাইভ এনটারটেনমেন্টের মান আরও উঁচু তারে বাঁধতে হবে।
প্র: আপনি তো ইংরেজি নাটকই বেশি করেছেন...
উ: হ্যাঁ। তবে আমার ফার্স্ট লাভ কিন্তু বরাবরই সিনেমা। মঞ্চে অভিনয় করেছি একমাত্র সেই শিল্পমাধ্যমটাকে ভালবেসে, ট্রিবিউট হিসেবে। ডিজিটাল যুগে মঞ্চাভিনয়কে বাঁচিয়ে রাখতে নতুন উপায় বার করতে হবে। আমার বন্ধু অভিনেতা অতুল কুমার যেমন ‘থিয়েটার অ্যাট হোম’-এর মতো অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন।
প্র: আপনার আগামী কাজগুলি সম্পর্কে কিছু বলুন...
উ: রজত কপূরের সঙ্গে ‘আরকে আরকে’ ছবিটা রয়েছে। গুল পনাগ এবং বিনয় পাঠকের সঙ্গে করলাম ‘আইপিসি ফোরটোয়েন্টি’, পরিচালনায় মণীশ গুপ্ত। সন্তোষ শিবনের ‘মুম্বইকর’ও রয়েছে। আশা করি, এর মধ্যে কয়েকটা অন্তত সিনেমা হলে মুক্তি পাবে।
প্র: জওহরলাল নেহরুকে নিয়ে করা একটি সাম্প্রতিক টুইটের জেরে হুমকির মুখে পড়তে হয়েছিল আপনাকে। পরে সেটি ডিলিটও করে দিয়েছিলেন...
উ: এখন এমন অবস্থা হয়েছে যে, ‘জল খাচ্ছি’ লিখে টুইট করলেও কিছু মানুষ এসে বলবেন, ‘আফ্রিকায় কত শিশু জল পায় না, জানেন?’ তা হলে তো কোনও কথাই বলা যায় না! আসলে সোশ্যাল মিডিয়ায় মানুষ বেশি রাগ দেখায়। সামনাসামনি হলে হয়তো সে সাহস পাবে না। আমি মনে করি, সোশ্যাল মিডিয়া সমাজের প্রতিচ্ছবি নয়।