সদ্য ৪৬-এ পা দিয়েছেন একতা কপূর। অভিনেতা জিতেন্দ্রর মেয়ে একতা বাবার মতোই নিজেকে বিনোদন জগতে সফল করে তুলেছেন। অভিনয়ে নয়, তঁর বিচরণ ক্ষেত্র অবশ্য প্রযোজনা।
২ দশকেরও বেশি সময় ধরে টেলিভিশনে রাজত্ব করে চলেছেন তিনি। অর্জন করেছেন তুমুল জনপ্রিয়তা।
কিন্তু জানেন কি, বিনোদন জগতের এই সাফল্য একতা আসলে চাননি? জীবন নিয়ে তাঁর ভাবনা ছিল অন্য কিছু।
মুম্বইয়ে ১৯৭৫ সালে একতার জন্ম। তারকা পরিবারে জন্ম হওয়ার জন্য প্রথম থেকেই বিনোদন এবং জাঁকজমকের জগতের সঙ্গে তাঁর পরিচয়।
অভিনয়ে আসা বা অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত অন্য কোনও পেশায় তাঁর নাকি কোনও আগ্রহই ছিল না।
একতা পছন্দ করতেন বন্ধুদের সঙ্গে পার্টি করতে। আর্থিক দিক দিয়ে তাঁর পরিবারও ছিল স্বচ্ছল। ফলে ছোট থেকে কখনও টাকা-পয়সা নিয়ে মাথা ঘামাতে হয়নি তাঁকে। তাঁর সমস্ত প্রয়োজনই মা-বাবা মিটিয়েছেন।
কিন্তু ১৫ বছর বয়স হওয়া মাত্রই জিতেন্দ্র মেয়ে একতাকে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছিলেন, নির্দিষ্ট পরিমাণ হাতখরচ ছাড়া বিলাসিতার জন্য অতিরিক্ত কোনও টাকা তিনি মেয়েকে দিতে পারবেন না। সমস্ত প্রয়োজন নিজেকেই মেটাতে হবে।
সেই থেকেই যাত্রা শুরু একতার। নিজের প্রয়োজন মেটাতে মাত্র ১৫ বছর বয়স থেকেই উপার্জন শুরু করেন তিনি।
প্রথমে একটি বিজ্ঞাপন সংস্থার সঙ্গে কাজ করতে শুরু করেন তিনি। তারপর মাত্র ১৯ বছর বয়সে তাঁর প্রথম টেলি সিরিয়াল মুক্তি পায়।
১৯৯৫ সালে প্রথম টেলি সিরিয়াল ‘হম পাঁচ’ থেকেই তিনি প্রযোজক হিসেবে ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করতে শুরু করেন। এর পর থেকে তাঁকে আর পিছনে তাকাতে হয়নি।
‘পড়োসন’, ‘ক্যাপ্টেন হাউস’, ‘মানো ইয়া না মানো’, ‘কিঁউকি সাস ভি কভি বহু থি’, ‘কহানি ঘর ঘর কি’-সহ ১৩০-এরও বেশি ধারাবাহিকের প্রযোজনা করেছে তাঁর সংস্থা বালাজি টেলিফিল্মস লিমিটেড।
২০০১ সাল থেকে বড় পর্দার প্রযোজনাতেও হাত দেন তিনি। ‘কুছ তো হ্যায়’, ‘কৃষ্ণা কটেজ’, ‘ক্যায়া কুল হ্যায় হম’, ‘মিশন ইস্তানবুল’, ‘ওয়ানস আপন এ টাইম ইন মুম্বই’, ‘লভ সেক্স অউর ধোকা’- তাঁর প্রযোজিত কতগুলি ছবি।
ছবির সংলাপ লিখন সহ অন্য কিছু সৃজনশীল কাজও তিনি করেন। ২০২০ সালে তিনি পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হন।
কিন্তু জানেন কি, এই বিপুল খ্যাতির স্বপ্ন একতা কোনও দিন দেখেননি। বরং তিনি খুব সাদামাটা এক জীবনের স্বপ্ন দেখতেন।
২২ বছর বয়সেই বিয়ে করে মধ্যবিত্ত জীবনের স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি! এক সাক্ষাৎকারে নিজেই জানান এ কথা।
২২ বছরে বিয়ের স্বপ্ন দেখা একতা ৪৬ বছরেও বিয়ে করেননি। তবে ২০১৯ সালের ২৭ জানুয়ারি সারোগেসির মাধ্যমে জন্ম নেওয়া এক সন্তানের মা তিনি।