পুজো উদ্বোধনে মদন মিত্র। নিজস্ব চিত্র।
গতকালই সংক্রমণ রুখতে সমস্ত মণ্ডপকে ‘নো এন্ট্রি’ জোন ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট। গতকালই মাস্ক খুলে, সামাজিক দূরত্ব ভুলে পুজো উদ্বোধন করলেন জি বাংলার ‘কৃষ্ণকলি’ ধারাবাহিকের জনপ্রিয় চরিত্র ‘রাধারানি’ ওরফে শ্রীময়ী চট্টরাজ। তাঁর সঙ্গে ছিলেন শাসকদলের প্রতিনিধি, প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্র। অভিনেত্রী সেই ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় দিতেই ভাইরাল। সতর্কতা বিধি না মানায় নেটাগরিকদের বিরূপ মন্তব্যও পিছু ছাড়েনি।
কোথায় উদ্বোধনে গিয়েছিলেন শ্রীময়ী? অভিনেত্রীর কথায়, ‘‘বেলঘরিয়ার মানসবাগ সর্বজনীন দুর্গোৎসব পুজো কমিটি’ আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। কমিটির পক্ষ থেকে এও বলা হয়েছিল, বাইরের কোনও দর্শনার্থী থাকবেন না। কমিটির হাতেগোনা লোক এবং মদনের উপস্থিতিতে এই উদ্বোধনের আয়োজন।’’
ক্লিপিংস বলছে, মানুষের উপস্থিতি কম ছিল না।তার থেকেও বড় বিতর্ক, উদ্বোধনের ঠিক আগেই মাস্ক খুলে ফেলেন শ্রীময়ী। নির্দিষ্ট দূরত্ব না মেনে উদ্বোধনও সারেন। আশ্চর্যের বিষয়, সেই সময় মাথায় নীল ক্যাপ থাকলেও মদনের মাস্কও গলায় ঝুলছে!
আরও পড়ুন: ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে’-র ২৫ বছর পূর্তিতে ফের রাজ-সিমরন হয়ে উঠলেন শাহরুখ-কাজল, কী ভাবে?
সমীক্ষার দাবি, পুজো ঘিরে ফের সংক্রমণের পরিমাণ বাড়ছে। এই অবস্থায় সমাজের প্রতিনিধিদের এই আচরণ যুক্তিযুক্ত?
মাস্ক ছাড়া পুজো উদ্বোধনে শ্রীময়ী।
একই দিকে আঙুল তুলেছেন জনৈক নেটাগরিকও, ‘‘অসাধারণ! দেবী মায়ের আশীর্বাদ সব সময়েই আপনাদের সঙ্গে থাক। আমি চমৎকৃত, আপনার মতো তারকাকে মাস্ক খুলে, সামাজিক দূরত্ব না মেনে পুজো উদ্বোধনে মাততে দেখে। সমাজকে কি সঠিক বার্তা দিচ্ছেন?’’
ফোনে নিজের ভুল স্বীকার করে নিয়েছেন অভিনেত্রী। জানিয়েছেন, উদ্বোধনের আগে উপস্থিত বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমের অনুরোধেই এ কাজ করেন তিনি। যদিও এটা করা একেবারেই উচিত হয়নি।
শুধু গতকালই নয়, শ্রীময়ীকে ১১ অক্টোবরও একই ভাবে দেখা গিয়েছে মদনের সঙ্গে। কলকাতার সবচেয়ে বড় নিষিদ্ধ পল্লি সোনাগাছিতে, সমাজ সেবামূলক কাজে। সেখানে কিন্তু লোকের ভিড় যথেষ্ট ছিল। যদিও সবার মুখে মাস্ক ছিল। মাস্ক ছিল শ্রীময়ীর মুখেও। সেদিন মদনও মাস্ক সরাননি।
শাসক দলের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে কী করে শ্রীময়ী একই ভুল বারবার করছেন? উত্তরে বলেন, তাঁর এই কাজের সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। ‘মানবিক’ মদন মিত্রকে তিনি শ্রদ্ধা করেন। জেলার এক অনুষ্ঠান করতে গিয়ে অশালীন আচরণের স্বীকার হয়েছিলেন। সেই সময় মদন তাঁকে নিঃস্বার্থ ভাবেই সাহায্য করেন। এই উপকার মনে রেখেই প্রাক্তন মন্ত্রীর সমাজসেবামূলক কাজে উপস্থিত থাকার চেষ্টা করেন অভিনেত্রী। নিজের স্বপক্ষে শ্রীময়ী আরও জানান, সংক্রমণ ঠেকাতে, সাধারণ মানুষের কথা ভেবেই এ বছর কোনও ‘মাচা’ করছেন না তিনি।
‘কৃষ্ণকলি’ ছাড়াও শ্রীময়ীকে দেখা গিয়েছে ‘কাদম্বিনী’ ধারাবাহিকে, স্বর্ণপ্রভা বসুর চরিত্রে। যদিও তিন মাস চলার পরেই বন্ধ হয়ে যায় বাংলার প্রথম মহিলা চিকিৎসকের বায়োপিক।