সেই ক্লিপ।
ঝাউতলার একটা ছোট বাড়িতে আমি আর সিনেমাটোগ্রাফার অভীক মুখোপাধ্যায় গানটা কী ভাবে শ্যুট করব তার প্ল্যানিং করছি। কথাবার্তা শেষ। এ বারে টেকের জন্য ক্যামেরা রেডি। যে মেয়েটা এতক্ষণ সেটে সবার সঙ্গে বাচ্চার মতো মিশছিল, ক্যামেরা অন করতেই সে যেন পরিপূর্ণ, সদ্য প্রেমে পড়া এক নারীতে পরিণত হল।
গানটা আজও বহু মানুষের কলার টিউন... ‘‘যাও পাখি বলো... হাওয়া ছলোছলো।’’
এবং সেই অভিনেত্রীর নাম রাধিকা আপ্তে।
গত পরশু থেকে শুনছি ওর একটি ন্যুড ভিডিয়ো নাকি ভাইরাল হয়ে গিয়েছে ইন্টারনেটে। অনুরাগ কাশ্যপের একটা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্মের ক্লিপ যেটা কোনও ভাবে লিক করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেটে। সেটা ইচ্ছে করে করা হয়েছে কি হয়নি সেই ডিবেটে আমি যাচ্ছি না। আমার শুধু এইটুকুই বলার, রাধিকার কিছু এসে যায় না এই সবে। আমার মতে রাধিকা এই প্রজন্মের একজন দুর্দান্ত অভিনেত্রী যে সব রকম রোল করতে প্রস্তত। ভাল রোলের খিদেটাই ওকে আজকে এই জায়গায় পৌঁছে দিয়েছে। না হলে দেড় কোটি টাকার একটি ছোট ছবির (‘অন্তহীন’য়ের বাজেট তাই ছিল) জন্য ওর যা ইনভলভমেন্ট আমি দেখেছি, তা অতুলনীয়। দিনের পর দিন পড়ে থেকেছে কলকাতায়। বাংলা ভাষা শিখতে চেয়েছে। বাঙালি খাবার খেয়েছে।
আজ ওর ভাইরাল ভিডিয়োর খবর পেয়ে এইটুকুই বলব, আমার বেশি খারাপ লাগছে ওই বিকৃত রুচির মানুষগুলোর জন্য যারা ইন্টারনেটে এই ক্লিপটা রিলিজ করেছে। প্রযুক্তির অপব্যবহার ছাড়াও এটি কুরুচিপূর্ণ মনের পরিচয়। একটি স্মল ফিল্মের এই ‘আউট অফ কনটেক্সট’ ক্লিপটা যারা হোয়াটস্যাপ কি ইউটিউবে রিলিজ করেছে, অবিলম্বে তাদের শাস্তি পাওয়া উচিত। আর আমি যদি রাধিকাকে একটু হলেও চিনি তা হলে জানি, রাধিকা একটাই কথা বলবে ‘‘ও টনি আই অ্যাম নট বদার্ড অ্যাট অল। ছাড়ো তো এ সব।’’
এটাই রাধিকা। স্বতঃস্ফূর্ত, সেনসেটিভ, আবেগপ্রবণ, এবং সাঙ্ঘাতিক বড় মাপের অভিনেত্রী যে অনেক গভীরে গিয়ে যে-কোনও চরিত্রকে জীবন্ত করে তুলতে পারে। আমার ‘অন্তহীন’য়ের নায়িকা। আমার ‘যাও পাখি বলো.... হাওয়া ছলো ছলো’র সেই পরিপূর্ণ নারী।